নড়াইলের দিঘলীয়ার সাহাপাড়ায় বাড়ি-ঘর, দোকান, মন্দির ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগের গ্রুপিংকেই দায়ী করেছে বিএনপি।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, সরেজমিনে তদন্ত সাপেক্ষে আক্রান্ত পরিবার এবং স্থানীয় জনসাধারণের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত টিম এ সিদ্ধান্তে উপনীতি হয়েছে যে, ঘটনাটি স্থানীয় আওয়ামী লীগের গ্রুপিয়ের নগ্ন বহিঃপ্রকাশ। তাদের হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থেই সংখ্যালঘুদের একটি সহজ উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যেটা অন্যান্য জায়গার মতো নড়াইলেও ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে নড়াইলের ঘটনা সরেজমিন পরিদর্শন করে আসা দলীয় তদন্ত টিমের আহ্বায়ক নিতাই রায় এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, নড়াইল আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ‍সুভাষ বসু ২-৩ দিন পর ওই জায়গা পরিদর্শনে যান। উপজেলা চেয়ারম্যানও সম্ভবত সেখানে যাননি। প্রশাসন নির্লিপ্ত এবং এটা সম্পূর্ণ সুপরিকল্পিত একটি সাম্প্রদায়িক ঘটনা।

তদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরে নিতাই রায় চৌধুরী বলেন, সেদিন মাগরিবের নামাজের পর হঠাৎ প্রায় দুই-তিনশ লোকজন সাম্প্রদায়িক স্লোগান দিয়ে সাহাপাড়াতে প্রবেশ করে। সেখানে ১০-১২টি বাড়ি-ঘর ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। মন্দিরের প্রতিমা ভেঙে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। পুলিশের সামনেই এ ঘটনাগুলো ঘটে।

বর্তমানে নড়াইলের দিঘলীয়া গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে এ অঞ্চলটাই ছিল যশোর-নড়াইল-বগুড়া মুক্তাঞ্চল। ওই সময়েও এখানে এরকম ঘটনা ঘটে নাই। সেই গ্রামের ওপরে এরকম নির্মমতা সেখানকার লোকজন মর্মবেদনায় ভুগছেন। আমরা পার্টির তরফ থেকে সেখানে কিছু সাহায্য দেয়ার প্রস্তাব করলে ক্ষতিগ্রস্তরা বলেন, আমরা কোনো সাহায্য চাই না। আমাদেরকে অনেক সাহায্য দিতে এসেছে, সেই টাকা ফিরিয়ে দিয়েছি। কারণটা হচ্ছে যে, সাহায্য দিয়ে হয়ত আমাদের ঘরটা মেরামত হতে পারে কিন্তু হৃদয়ের মনে যে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে সেই ক্ষত মুছে যাবে কীভাবে।

তিনি আরও বলেন, সেখানে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। মানে একাত্তর সালে যুদ্ধের সময়ে যেরকম আতঙ্ক বিরাজ করেছে এখন সেরকম আতঙ্ক বিরাজ করছে।

বিএনপির প্রতিনিধি দলের তদন্ত প্রতিবেদনে ২২ জন ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা দেওয়া হয়েছে।

এএইচআর/আইএসএইচ