বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে মহাবিপর্যয়ের অভিযোগ তুলে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এ বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়ার নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর পুরান ঢাকার রায় সাহেব বাজার মোড় থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার অবৈধ। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশে স্বৈরতন্ত্র কায়েম করেছে। নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারে ব্যস্ত থাকার কারণে দেশের সাধারণ মানুষের কথা তারা বেমালুম ভুলে গেছে।

তাদের সীমাহীন দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে দেশের বিদ্যুৎ খাতে আজ মহাবিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের মোট চাহিদার আলোকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিবর্তে সরকার কুইক রেন্টালের মতো হঠকারী পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ ঘাটতি মেটাতে গিয়ে দেশে এই অচলাবস্থা তৈরি করেছে। তারা ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এ খাতে প্রচুর অর্থ অপব্যয় করে আরও লোকসানের সৃষ্টি করেছে। এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের ক্ষেত্রে ইনডেমনিটি আইন তৈরি করে নজিরবিহীন দুর্নীতি ও লুটপাট করেছে।

আরও পড়ুন: ব্যাংকে তেল গ্যাস বিদ্যুতের ব্যয় কমা‌নোর নির্দেশ

মঞ্জুরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, জামায়াতে ইসলামী কুইক রেন্টাল পদ্ধতির বিরোধিতা করে সরকারকে বার বার সচেতন করার চেষ্টা করেছে। অথচ ক্ষমতাসীন সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি। ফলে সারা দেশে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে মানুষের জীবনে ভয়াবহ দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে, দেশের শিল্পোৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংকটে দেশের বৃহৎ দুটি সার কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হবে বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, দেশের বিদ্যুৎ খাতে চলমান নৈরাজ্য ও বিপর্যয় ক্ষমতাসীনদের নিজ হাতে তৈরি। বিগত দিনগুলোতে তারা ১১বার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। জনগণের পকেট কেটে মূলত লুটেরাদের দেওয়া হয়েছে। সরকার নিজ দলের ব্যবসায়ীদের দুর্নীতি ও অনৈতিকভাবে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে অন্ধকার পথে নিয়ে গেছে। পরিস্থিতি দিনের পর দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। অথচ এ বিপর্যয় থেকে উত্তরণের জন্য সরকারের কাছে কার্যকর কোনো রূপরেখা নেই। 

দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে জামায়াতের এ নেতা বলেন, জনগণ তার ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে একটি জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠিত করবে। তিনি সরকারকে অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানান।

ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের প্রচার বিভাগের মুহাম্মাদ সাইফ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি কামাল হোসাইন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য হাফিজুর রহমান, আব্দুর রহমান, মোবারক হোসাইনসহ জামায়াত নেতারা।

জেইউ/এসএসএইচ