ইউনূস মাছের ডাক্তার না মানুষের সর্বনাশের ডাক্তার : শেখ সেলিম
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, ‘একজন ডাক্তার আছেন নাম হলো ডাক্তার ইউনূস। উনি পশুর ডাক্তার? না মাছের ডাক্তার? না গরুর ডাক্তার? না বাংলাদেশের মানুষের সর্বনাশের ডাক্তার? উনি বলে শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। অশান্তি, উনি বাংলাদেশের জন্য এ পর্যন্ত যা করেছেন, বাংলাদেশের পাই পয়সারও ভালো করেন নাই, ক্ষতি করে গেছেন।’
রোববার (১৯ জুন) একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
শেখ সেলিম বলেন, ‘সুদ খাইছেন। সুদখোর, একজন ঘুষখোর আজ আমি অর্থমন্ত্রীকে বলব, উনি যে ছয় মিলিয়ন ডলার ক্লিনটন ফাউন্ডেশনে দিয়েছেন ওই টাকা উনি কোথা থেকে দিলেন এটা আপনি তদন্ত করেন। এই টাকা মানি লন্ডারিংয়ের টাকা। বিশ্বব্যাংকের কাছে হিলারিকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে আর আমাদের দেশের কিছু বিএনপি নেতা তাদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করেছে। এই পদ্মা সেতু না করার তারা ব্যবস্থা করেছে। টরন্টোর আদালতে তারা মামলা করেছে। টরন্টোর আদালত বলছে, এখানে কোনো দুর্নীতি হয় নাই। ওদের মুখে আজ কালি পরা উচিত। এরা বাংলাদেশের বন্ধু না, এরা বাংলাদেশের শত্রু।’
এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল পদ্মা সেতু, যমুনা সেতু। বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু নির্মাণের জন্য জাপানের সহযোগিতা চেয়েছিলেন এবং জাপান সরকার বঙ্গবন্ধুকে সহযোগিতা করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে একাত্তরের পরাজিত শক্তি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। কিন্তু সেই যমুনা সেতুর সেই স্বপ্ন তার কন্যা শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করেছেন আগেরবার যখন ক্ষমতায় এসেছিলেন তখন।’
তিনি বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ফিজিবিলিটি স্টাডি করে ২০০১ সালের ৪ জুলাই প্রধানমন্ত্রী ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০০১ সালে খালেদা জিয়া যখন ক্ষমতায় আসেন তখন নেত্রীর যে ভিত্তিপ্রস্তর ওটাকে সরাইয়া ফালাইয়া সে পাটুরিয়া যাইয়া একটা নেমপ্লেট লাগাইয়া আসে। কি বিচিত্র এই দেশ।’
শেখ সেলিম বলেন, ‘২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী এসে পদ্মা সেতু করার জন্য বিভিন্ন দাতা দেশের সঙ্গে কথা বলেন। জাপান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার সঙ্গে কথা বলেন। তারা সবাই রাজি হয়। কিন্তু মাঝে একজন ডক্টর এসে ঢুকল আর ওয়ার্ল্ড ব্যাংক বলল যে না, এটাতে দুর্নীতি হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘কীসের দুর্নীতি হয়েছে? এক পয়সা দেয় নাই, একটা টাকা দেয় নাই, কয় দুর্নীতি হয়েছে। কি বিচিত্র। সেই দুর্নীতির কথা ধরে এরা মানুষের শত্রু। এই যে দুর্নীতির কথা বলল, এটা বলালো কারা? ডক্টর ইউনুস সাহেব। ইউনূস সাহেব আর বাংলাদেশে সোকল্ড বুদ্ধিজীবী আছে তারা সব সময় নেগেটিভ অ্যাটিচুয়েড হয়। বাংলাদেশ সামনের দিকে আগাক এটা তারা চিন্তা করে না।’
এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘পত্রপত্রিকায় লেখা হলো এখানে দুর্নীতি হয়েছে। দুর্নীতির কোনো প্রমাণ তারা দিতে পারল না। পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান। আর এই পদ্মা সেতুর কাজ যখন আরম্ভ করে তখন খালেদা জিয়া বলে কি— এই সেতু জোড়াতালি দিয়ে করা হচ্ছে, ওখান দিয়ে ভাইঙ্গা পড়ে যাবে। এমন সেতু করা হয়েছে ভূমিকম্পেও এই সেতুর কোনো ক্ষতি হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে টানা আরম্ভ করছে ২০০৯ সালে। তোরা যত টানবি আমাদের ক্ষমতা তত বাড়বে। আজ ২২ সালে আইছি, আরেকবার টান দিলে এবার আমরা ৫০ সালে চলে যাব। আমরা ৫০ সালে ক্ষমতায় চলে যাব, তোরা থাকবি না।’
আওয়ামী লীগের এই সংসদ সদস্য বলেন, ‘বিদেশিরা বাংলাদেশে কোনো কিছু করতে পারবে না। বাংলাদেশের ভাগ্য বাংলাদেশের জনগণ নিয়ন্ত্রণ করবে। কোনো বিদেশি নিয়ন্ত্রণ করবে না। বিএনপি বলছে, জাতীয় সরকার গঠন করার কথা। আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্বের গণতান্ত্রিক দেশে যেমন— ব্রিটেন, আমেরিকা, কানাডা, ভারত এবং অন্যান্য দেশে যেমন নির্বাচন হয় বাংলাদেশে সেইভাবেই নির্বাচন হবে। বাংলাদেশে আর কোনো দিন আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন হবে না। ইয়াজউদ্দিন মার্কা তত্ত্বাবধায়ক সরকার হবে না।’
এইউএ/এসএসএইচ