বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী

বর্তমান সরকারের মাফিয়াতন্ত্র দেশে-বিদেশে উন্মোচিত হওয়ার পর তারা ঘরে-বাইরে মুখ দেখাতে না পেরে চক্রান্তে মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আল জাজিরার পর ডয়েচে ভেলে এরপর আবার দ্য ইকোনমিষ্ট। রাষ্ট্রের সব গোপন অপকর্ম ফাঁস হয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। রিজভী বলেন, বিদেশি গণমাধ্যমের কাছে বাংলাদেশ আজ আর কোনো রাষ্ট্র নয়, প্রজাতন্ত্র নয়, বৈদেশিক শক্তিনির্ভর এক মাফিয়াতন্ত্র মাত্র।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, এখন সরকারের অবস্থা ‘দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ।’ সরকারকে নিয়ে চারিদিকে নানা কথাবার্তা, ফিসফাস শুনতে পাচ্ছে জনগণ। সরকারের অবস্থা ভালো না। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে তারা নানা নাটক, রঙ্গ করছে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করছে।

বুধবার নড়াইলের আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে করা ২০১৬ সালের মানহানির মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বিনা ভোটের প্রধানমন্ত্রী তার জিঘাংসা পূরণের মুখোশ আরও একবার উন্মোচিত করলো। এতে পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় যে আইন আদালত শেখ হাসিনার হাতের মুঠোয় এবং আওয়ামী লীগেরই একটি বর্ধিত প্রতিষ্ঠান। আওয়ামী কক্ষপথেই ঘুরপাক খাচ্ছে আইন আদালত।

আওয়ামী লীগ একটি মামলাবাজ সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে দাবি করে সাবেক এ ছাত্র নেতা বলেন, সারাদেশে কিছু মামলাবাজ পুষে রেখেছে সরকার। যাদের কাজই হলো সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলকে ঘায়েল করতে মিথ্যা মামলা ঠুকে দেওয়া। এদের মধ্যে অন্যতম নড়াইলের শহীদ শেখ জামাল জাতীয় স্মৃতি পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ আশিক বিল্লাহ, কালিয়া উপজেলার মো. রায়হান ফারুকী ইমাম। আরেকজন আছে কথিত জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এ বি সিদ্দিকী। যাদের পেশা মামলা করা। এ সরকারের আমলেই সমাজে এদের মতো অসংখ্য মামলাবাজ দালালদের জন্ম হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সরকারি পেইড মামলাবাজদের অন্যতম একজন পত্রিকায় সাক্ষাতকারে বলেছেন, মামলা করাই আমার নেশা ও পেশা। প্রধানমন্ত্রীর আনুকূল্য পেতেই এ চেষ্টা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আমি গণভবনে গিয়ে দেখা করেছি। প্রধানমন্ত্রী আমাকে মাথায় হাত দিয়ে সাহস দিয়েছেন।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে রিজভী বলেন, অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে দায়ের করা সব ‘মিথ্যা মামলা’ ও জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার এবং নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি করছি। পাশাপাশি বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ঘটনায় নিন্দা জানাচ্ছি। তাদের গ্রেফতারি পরোয়ানা প্রত্যাহার না হলে পরিণতি শুভ হবে না। পৃথিবীর ইতিহাসে প্রতিহিংসার পরিণতি হয় অস্বাভাবিক।

এএইচআর/এমএইচএস