জিয়াউর রহমান যুদ্ধের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন : আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘স্বাধীনতার ঘোষণা এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রথম বিদ্রোহ চট্টগ্রাম থেকেই হয়েছে। জিয়াউর রহমান দেশের প্রথম মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পাকিস্তানের সৈন্যদের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। পাকিস্তানিদের হত্যা করে স্বাধীনতার ঘোষণা করেন। নেতারা কিন্তু যুদ্ধের অগ্রভাগে থাকে না, উনি কিন্তু যুদ্ধের অগ্রভাগে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। বাংলাদেশের বিশাল অংশ মুক্ত করেছেন জিয়াউর রহমান। তিনি দেশের ক্ষমতা নেওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য প্রথম একটি দর্শন প্রণয়ন করেন। একটি ভাবনা দিয়েছেন, একটি চিন্তা দিয়েছেন। সেটি হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ।’
রোববার (২৯ মে) বিকেলে নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের মাঠে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
আমীর খসরু বলেন, ‘বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের দর্শন দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। অর্থাৎ এই সীমানার মধ্যে যারা আছে সবাই বাংলাদেশি। কেউ চাকমা, কেউ মারমা, কেউ হিন্দু, কেউ খ্রিস্টান— সবাইকে একতাবদ্ধ করার জন্য জিয়াউর রহমান বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তন করেন। দেশের উন্নয়নের ভাবনা দিয়েছেন, একদলীয় থেকে বহুদলীয় শাসনের দর্শন চালু করেন তিনি।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান গণমাধ্যমের স্বাধীনতা দিয়েছিলেন। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার পাশাপাশি অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সমান সুযোগ রেখেছিলেন। কারণ এর আগে ছিল রাষ্ট্র পরিচালিত অর্থনীতি। অর্থাৎ আওয়ামী পরিচালিত অর্থনীতি। বাকশাল পরিচালিত অর্থনীতি থেকে বের হয়ে সবাই যাতে অর্থনীতিতে অবদান রাখতে পারে, সেই দর্শন তিনি প্রণয়ন করেন। আজকে খুনি, স্বৈর সরকার থাকার পরও অর্থনীতি একটি অবস্থানে আছে। তার কারণ জিয়াউর রহমান। বিএনপি থাকলে অর্থনীতির গতি আরও বেড়ে যেত। বর্তমানে কিছু লোকের হাতে অর্থনীতি চলে গেছে। এই অর্থনীতিকে ফিরিয়ে আনতে হলে জিয়াউর রহমানের অর্থনীতি দর্শন নিয়ে আসতে হবে।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন বলেন, ‘তারেক রহমান দেশে এলে বিপ্লব হয়ে যাবে। খালেদা জিয়াকে একবার জনসম্মুখে আসতে দেন, দেখেন দেশে কি হয়। পুলিশের সাবেক আইজি শহিদুল হক বলেছেন— আওয়ামী লীগের জন্য ঠিকমতো কাজ করতে পারেন না। তাদের অত্যাচারে কাজ করা যায় না। পুলিশ ভাইদের বলব— এখনই সময় জনগণের সঙ্গে থাকার। বিপদে পড়লে এরা আপনাদের সাহায্য করবে না।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান এই চট্টগ্রাম থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বে দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে কোনো দুর্নীতির অভিযোগ আসেনি। বিশ্বের নেতারা বলেছেন, জিয়াউর রহমানের মতো দেশপ্রেমিক মানুষ হয় না। তারেক রহমান তার যোগ্য উত্তরসূরি। তিনি এলে দেশের সব মানুষ তার হয়ে কাজ করবেন।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম বলেন, ‘চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের একটি বড় স্তম্ভ। এই স্থানের গুরুত্ব দেশের মানুষের কাছে অনেক বেশি। কারণ শহীদ জিয়াউর রহমান এখান থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা করেছিলেন। জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কেউ চাইলেই এই ইতিহাস পরিবর্তন করতে পারবে না।’
চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন, সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্করসহ নেতারা সভায় বক্তব্য রাখেন।
কেএম/এসএসএইচ