বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ একটা মুনাফেক দল। তারা যে কথা বলে সে কথা কোনোদিনও রাখে না। এটাই তাদের চরিত্র, তারা প্রতারক।

রোববার (৮ মে) গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই প্রতারণা করে আসছে। যখন থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, তখন থেকেই। বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়েছে, তখন তারা বলেছিল- চাল, ডাল, তেলের দাম কমিয়ে মানুষকে স্বর্গরাজ্যে বাস করাবে। কিন্তু তাদের আমলেই সবচেয়ে বড় দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। লাখ-লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। 

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। তাদের কারণে মানুষ ভোট দিতে পারে না। সুতরাং আমাদের কথা পরিষ্কার, পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সরকার পদত্যাগ না করলে এবং সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করলে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এ নিয়ে আমরা আর কোনো কথা বলতে চাই না। প্রথম শর্ত হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পদত্যাগ, দ্বিতীয় হচ্ছে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর। সেই সরকারই নির্বাচন পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সেই কমিশন যে নির্বাচন করবে সেটাই জনগণের সরকার হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করবে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনে ইভিএম তো পরে, আগে তো নির্বাচন হতে হবে। এই সরকার ক্ষমতায় থাকলে আমরা তো নির্বাচনেই যাব না।

খন্দকার মোশাররফের ওপর হামলা মানে বিএনপির ওপর হামলা
 
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের বাসায় হামলার ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। 

তিনি বলেছেন, এই অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য আবার এখন থেকেই সন্ত্রাসের আশ্রয় নেওয়া শুরু করেছে। গতকাল আমাদের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দাউকান্দিতে তার বাসভবনে গিয়েছিলেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। পরে তিতাস উপজেলার একটি নিমন্ত্রণে যাওয়ার জন্য বের হলে, স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ইট-পাটকেল ছুড়ে তার ওপর হামলা চালায়।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ড. মোশাররফের ওপর আক্রমণ এত তীব্র ছিল যে, কর্মীরা তাকে বাসায় তুলে দেন এবং গেট বন্ধ করে দেন। তারপরও বৃষ্টির মতো  ইট মারতে থাকে, পাথর মারতে থাকে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

তিনি আরও বলেন, যেহেতু তিনি আমাদের স্থায়ী কমিটির সিনিয়র লিডার, তার ওপর হামলাকে আমরা মনে করি স্থায়ী কমিটির ওপর হামলা, আমাদের দলের ওপর হামলা। আমরা এটাকে ছোট করে দেখতে পারি না। আওয়ামী লীগের এই হামলায় প্রমাণ হয়েছে যে, তাদের চরিত্রের এতটুকু পরিবর্তন হয়নি। বরং তারা নতুন উদ্যমে বিএনপি তথা ভিন্নমতকে, বিরোধী দলকে নির্মূল করার জন্য চরম সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়েছে।

আওয়ামী লীগ গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে রেখেছে দাবি করে তিনি বলেন, সংবাদ মাধ্যমের যে সূচক করা হয় আন্তর্জাতিকভাবে ফ্রিডম অব প্রেস, সেখানে বাংলাদেশ ১০ ধাপ নেমে গেছে। এ থেকে প্রমাণিত হয় বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে একটা স্বৈরাচারী দেশে পরিণত হয়েছে।

এএইচআর/আইএসএইচ