বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভর্তুকি দিয়ে চালু করা ঢাকা-টরন্টো ফ্লাইটের একটা ট্রায়াল ফ্লাইট হয়েছে, শিগগিরই সেটি নিয়মিত চালু হবে। বিমানের যারা কর্মকর্তা আছেন তারা বলছেন এই ফ্লাইট কেন চালু করা হলো, আমরা জানি না। এটা কোনোভাবেই ভায়াবল ফ্লাইট নয়। একটা কারণে এটা করা হয়েছে, তা হলো বেগমপাড়ায় যারা যাতায়াত করেন, তাদের সুবিধার জন্য। সরাসরি স্যুটকেসে ও ট্রাংকে ভরে টাকা পাচারের জন্য। 

সোমবার (২৮ মার্চ) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (অ্যাব) আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলামের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা মনে করবেন না যে আওয়ামী লীগই শেষ। অবশ্যই পরিবর্তন হবে। সেই পরিবর্তনে এই জবাবদিহিতাগুলো আপনাদের করতে হবে। যখন দায়িত্বশীল উচ্চ শিক্ষিত মানুষের মুখ থেকে এমন কোনো কথাবার্তা আসে, তখন এই জাতি ও সরকার সম্পর্কে এবং তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে আমাদের একটা ধারণা তৈরি হয়।

গত ২৬ মার্চ বিকেলে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ অডিটরিয়ামে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, ‘একটি পার্টির খুব সিনিয়র এক নেতা বলা শুরু করেছেন, তাদের নেত্রী নাকি এক নম্বর মুক্তিযোদ্ধা। এর চেয়ে হাস্যকর...।

এই বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগই শেষ নয়। এ ধরনের মন্তব্যের জন্য আপনাদের হিসেব দিতে হবে। কী করে একজন পুলিশ কমিশনার এধরনের কথা বলেছেন, সেটা শুনে আমরা বিস্মিত হয়েছি। সরকারি কর্মকর্তা হয়ে তারা সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক, অশালীন এবং শিষ্টাচারবহির্ভূত কথা বলতে পারেন, সেটা আমরা চিন্তাও করতে পারছি না।

সরকারকে এই জায়গায় নিয়ে এসেছে আওয়ামী লীগ! সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে যাদের রাজনৈতিক কথাবার্তা বলা কন্ডাক্টের বাইরে, সেখানে তারা তিন, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতার ঘোষকের স্ত্রী এবং যিনি চল্লিশ বছর ধরে রাজনীতি করছেন, গণতন্ত্রের জন্য গৃহবন্দি হয়ে আছেন তার সম্পর্কে অশালীন উক্তি করতে পারেন, এটা আমরা ভাবতেও পারি না; বলেন মির্জা ফখরুল।

সরকারি কর্মকর্তাদের এমন আচরণেই রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের ওপর লজ্জাজনক নিষেধাজ্ঞা আসে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারের বেআইনি হুকুম তালিম করতে গিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানকে আপনারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় নিয়ে এসেছেন। বাংলাদেশের জনগণ এটাতে লজ্জিত হয়েছে। এটা আমাদের জন্য লজ্জা। আমাদের একটা প্রতিষ্ঠানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। সেটাও মানবাধিকার লঙ্ঘনের কারণে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংসদে জনগণের দুর্ভোগ, সরকারের দুর্নীতি নিয়ে কোনো প্রশ্ন ওঠে না। কারণ এই সংসদে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। আমরা খুব ভয়াবহ একটা অবস্থার মধ্যে আছি। যেভাবে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং দুর্নীতি করা হচ্ছে সেটার সঠিক পরিসংখ্যান আঁতকে ওঠার মতো। একটা দেশ, যে দেশের মানুষ এত কষ্ট করে, দিনরাত পরিশ্রম করে তারা উপার্জন করছে এবং দেশ গড়ছে, সেই দেশের শত শত কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এসবের কোনো জবাবদিহিতা নেই। সংসদে এসব নিয়ে কোন প্রশ্ন ওঠে না। কারণ এই সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব নেই।

এমএইচএন/জেডএস