ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি বিএনপির
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারের দুটি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে যে দুটি নতুন নীতিমালা বা রেগুলেশন জারির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা দেশের জনগণ ও মিডিয়ার বাকস্বাধীনতা কেড়ে নেওয়ার জন্য। বিটিআরসি ও তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের এই দুই নীতিমালাসহ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আইন ও নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করার দাবি জানান তিনি।
শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে গুলশান বিএনপি চেয়ারপারসনের দলীয় কার্যালয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৩ সালে অ্যাক্ট সংশোধনী করে ৫৭ ধারা যোগ করে এবং ২০১৮ সালের ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট প্রণয়নের মাধ্যমে দেশের জনগণ ও মিডিয়ার বাকস্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণের পর অবশিষ্ট সামান্য যে স্বাধীনতাটুকু রয়েছে সেটুকু পুরোপুরি কেড়ে নেওয়ার জন্য এ উদ্যোগ।
নিবর্তনমূলক এই দুটি নীতিমালা কার্যকর হলে দেশের সাধারণ মানুষের পাশাপাশি দেশি-বিদেশি অনলাইনভিত্তিক মিডিয়াগুলোর মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও গোপনীয়তার অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করবে। পাশাপাশি অনলাইন এনক্রিপশনকে অকার্যকর করে নিরাপত্তাকে দুর্বল করে ফেলবে। এর ফলে মানবাধিকারের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে এবং সাংবাদিক, বিরোধীদলীয় রাজনীতিবিদ, মানবাধিকারকর্মী ও ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী আরও বেশি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
কোনো নিবর্তনমূলক আইন দিয়েই তত্ত্বের প্রচার বন্ধ করা যায় না বলে উল্লেখ করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, মানুষ সত্য জানার আগ্রহ থেকেই তারা (সাংবাদিকরা) সত্য তত্ত্বটির উৎস খুঁজে বের করে। সেই কারণেই সংবাদপত্রের বিকল্প হিসেবে এসেছে ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং তারপর এসেছে এই অনলাইন ভিত্তিক বিকল্প সামাজিক মাধ্যম ও ওটিটি প্ল্যাটফর্ম। এ নীতিমালা প্রণয়নের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হচ্ছে সত্যকে আড়াল করে মিথ্যাকে প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে জনগণের কণ্ঠরোধ করে একদলীয় বাকশালী কায়দায় ক্ষমতা চিরস্থায়ী করা।
মির্জা ফখরুল বলেন, গত ২ ফেব্রুয়ারি বিটিআরসির ওয়েবসাইটে দেওয়া ইংরেজিতে লেখা খসড়া নীতিমালাকে দ্য বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন রেজুলেশন ফর ডিজিটাল, সোশ্যাল মিডিয়া অ্যান্ড ওটিটি প্ল্যাটফর্মস ২০২১ হিসেবে উল্লেখ করে ৫ মার্চ ২০২২ তারিখের মধ্যে পর্যবেক্ষণ মতামত ও সুপারিশ চাওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে ওভারে দ্য টপ (ওটিটি) কনটেন্ট ভিত্তিক পরিষেবা প্রদান এবং পরিচালনা নীতিমালা ২০২১ শিরোনামের একটি খসড়া নীতিমালা সংশোধন/মতামত চাওয়া হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখের মধ্যে।
বিটিআরসির প্রস্তাবিত নীতিমালার মাধ্যমে দেশের জনগণের প্রতিবাদের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বিটিআরসির নীতিমালার সবচেয়ে আশ্চর্যজনক অংশটি হচ্ছে- কোনো ব্যক্তির প্রতি আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, হুমকি বা ভীতি প্রদর্শক ও অপমানজনক, মানহানিকর বিষয় প্রচার করা যাবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, এ কথা নিশ্চিত যে আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের কোনো নেতার দুর্নীতির বিরুদ্ধেও যদি কিছু লেখা প্রকাশ করা হয় তাহলেও বিআরটিসি নীতিমালার মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এএইচআর/এমএইচএস