চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় চাল, ডাল, তেলসহ পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী লীগ আজকে বাংলাদেশকে এমন এক অবস্থানে নিয়ে গেছে যে মানুষ আর বাঁচার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না।

তিনি বলেন, বেঁচে থাকার জন্য যে ন্যূনতম খাবার প্রয়োজন সেটাও কিনতে পারছে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির একমাত্র কারণ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও নেতাদের দুর্নীতি। আওয়ামী মাফিয়া সিন্ডিকেটের কারণে দেশ আজ দুর্ভিক্ষের কবলে।

বুধবার (৯ মার্চ) বিকেলে নগরীর নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি দলীয় কার্যালয়ের মাঠে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, মানুষের নিরাপত্তাও নেই। আওয়ামী লীগ সরকার যতবার ক্ষমতায় এসেছে তারা মানুষের স্বপ্নকে ভেঙে চুরমার করে দিয়েছে। গণতন্ত্রের মোড়কে সেই একদলীয় শাসনব্যবস্থাই চালু করেছে। 

ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, সরকার প্রধান বলেছিল ক্ষমতায় এলে ১০ টাকা কেজি চাল খাওয়াবেন। ২০০৬ সালে বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন চালের কেজি ছিল ১৬/১৮ টাকা। কোথায় সে ১০ টাকা কেজির চাল? আওয়ামী লীগ দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। মোটা চালের দাম বর্তমানে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। বিএনপির আমলে চিকন চালের দাম ছিল ২২ টাকা যা বর্তমানে ৮০ টাকা। সয়াবিন তেলের দাম ছিল লিটার প্রতি ৪৪ টাকা, বর্তমানে দাম ২০০ টাকা। গরুর গোশতের দাম ছিল কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা, যা বর্তমানে ৭০০ টাকা। মসুর ডালের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৪৫ টাকা, যা বর্তমানে ১৩০ টাকা। বয়লার মুরগির দাম ছিল কেজিপ্রতি ৫৫ টাকা, এখন ১৭৫ টাকা। গুঁড়ো দুধ ছিল কেজিপ্রতি ২৮৫ থেকে ৩৪৫ টাকা, যা বর্তমানে ৬৫০ টাকা। পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা, যা বর্তমানে ৫৫ টাকা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য সরকারের সিন্ডিকেট দায়ী। এই সিন্ডিকেটের সদস্যদের দুর্নীতির কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি হয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সবার মধ্যে নাভিশ্বাস উঠেছে।

কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি এবিএম পারভেজ রেজা বলেন, নিত্যপণ্যের বাজারে সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। সরকারের দুর্নীতির কারণে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে গেছে। বাজারের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট তৈরি করা হয়েছে। তারা কৃত্রিমভাবে জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কোথাও কোনো জবাবদিহিতা নেই। চরম দুর্নীতির প্রভাব বাজারে গিয়ে পড়ছে।

চট্টগ্রাম মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এইচ এম রাশেদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন বুলুর পরিচালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য সাথী উদয় কুসুম বড়ুয়া, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ সভাপতি শওকত আজম খাজা, সহ সাধারণ সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন জনি।

বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো. মোরসালিন, দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুল ইসলাম রাহি, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ সভাপতি মো. সিরাজ উদ্দিন প্রমুখ।

কেএম/ওএফ