বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শর্তসাপেক্ষ মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন আবেদন করবে তার পরিবার। সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলে মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর সঙ্গে বিদেশে নেওয়ার বিশেষ আবেদনও করা হবে। খালেদা জিয়ার পরিবার ও বিএনপি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

বিএনপির সূত্রগুলো বলছে, খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদনের একটি নমুনা তৈরি আছে। নতুন করে তৈরির কিছু নেই। আগের আবেদনের যে কপি আছে তাতে তারিখসহ কিছু বিষয় পরিবর্তন করা হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়ার বোন সেলিনা ইসলামের স্বাক্ষর নিয়ে চলতি সপ্তাহের যেকোনো দিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন জমা দেওয়া হবে।

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘আবেদন তো করতেই হবে। তবে, কবে আবেদন করা হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। শামীম (শামীম ইস্কান্দার) বিষয়টি দেখছেন।’

খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর আবেদন করা হবে কি না জানতে চাইলে সেলিনা ইসলাম বলেন, ‘তাকে বিদেশে পাঠানোর জন্য সরকারের কাছে তো আবেদন করাই আছে। কিন্তু তারা তো অনুমতি দিচ্ছে না। এখন কী করা যায় দেখি।’   

বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব আবদুস সাত্তার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘ম্যাডামের বিষয়টি তার পরিবার দেখছে। আমরা দাপ্তরিক কিছু সাহায্য করি। এখন কবে ম্যাডামের মুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা হবে, সেটি পরিবারের ওপর নির্ভর করছে।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র বলছে, সাধারণত লন্ডনে অবস্থানরত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে খালেদা জিয়ার পরিবার আবেদন করে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। তবে, এবার চিকিৎসকদের সঙ্গে আলোচনা করে খালেদার চিকিৎসার মেডিকেল রিপোর্টগুলো আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করা হবে।

সূত্রটি আরও জানায়, যেহেতু খালেদা জিয়া অসুস্থ, তাই তাকে বিদেশ প্রেরণে সরকারের অনুমতির জন্য নতুন উদ্যোগ নেওয়ার বিষয়ে নড়াচড়া আছে পরিবার ও দলের মধ্যে। এখন সেই নতুন উদ্যোগটি কার্যকর হবে কি না সেটি নির্ভর করছে সরকারের সবুজ সংকেত পাওয়ার ওপর।

পা ফুলে গেছে খালেদা জিয়ার

গুলশানের বাসভবন ফিরোজাতে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা আগের তুলনায় বেড়েছে। তার পা ফুলে গেছে। ফলে, সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর হাঁটা-চলা করতে সমস্যা হচ্ছে।  

খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলাম বলেন, তার অবস্থা ভালো নয়, পা ফুলে গেছে। হাঁটতে পারছেন না। চিকিৎসকরা চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এ. জেড এম জাহিদ হোসেন কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, দেশে করোনা মহামারি দেখা দিলে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ দুই শর্তে সরকারের নির্বাহী আদেশে ৬ মাসের জন্য মুক্তি পান খালেদা জিয়া। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার উপধারা ১-এ সাজা স্থগিত দেখিয়ে এই পর্যন্ত চার দফায় এই মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেই অনুযায়ী আগামী ২৪ মার্চ খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে।

এএইচআর/ওএফ/জেএস