সাম্প্রতিক বিভিন্ন আন্দোলনে পুলিশের ভূমিকার কড়া সমালোচনা করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর। একই সঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার হারুন অর রশীদের প্রত্যাহার দাবি করেছেন তিনি।

শনিবার (৫ মার্চ) রাজধানীর পুরানা পল্টনে অবস্থিত পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি। শুক্রবার (৪ মার্চ) পণ্যমূল্য নিয়ে বিক্ষোভে পুলিশের লাঠিচার্জ ও নেতাকর্মীদের আটকের প্রতিবাদে এ সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।

নুর বলেন, দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে শুক্রবার শহীদ মিনারে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের মিছিলটি শাহবাগ মোড়ে পুলিশি বাধার সম্মুখীন হয়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তারা প্রেস ক্লাবে সমাবেশ করার পরামর্শ দিলে আমরা শাহবাগ মোড় ঘুরে মিছিলটি নিয়ে প্রেস ক্লাবের উদ্দেশে রওনা দেই। ঢাকা ক্লাবের সামনে আসতেই রমনা জোনের উপ-কমিশনার হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোক আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। হামলায় ১১২ জন আহত হয়।

তিনি আরও বলেন, কোনো ধরনের উস্কানি, সংঘর্ষ ছাড়াই পুলিশ ও সাদা পোশাকের লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। গত বছর ২৭ মার্চ প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের চার নেতা রবিউল, সোহাগ, সজল ও আলামিন আটিয়াকে আটক করে শাহবাগ থানায় মুখে গামছা ও চোখে কাঁচা মরিচ লাগিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর নির্যাতন করে। এছাড়া শাহবাগে সব গণতান্ত্রিক আন্দোলনে হারুন হামলা চালিয়েছে। গতকালের ঘটনায়ও স্পষ্ট হয়েছে যে হারুন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়েই সাদা পোশাকের লোকজনসহ আমাদের ওপর বর্বর আক্রমণ করেছে।

হারুনের প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে নুর বলেন, আমরা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেব। অনতিবিলম্বে হারুনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ কর্তৃপক্ষের কাছে জোরালো দাবি জানাই। হারুন ওসি প্রদীপের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। তাকে অবশ্যই প্রত্যাহার করতে হবে। সরকারের বেআইনি আদেশ পালন না করার পাশাপাশি সভা-সমাবেশ, মিছিল-মিটিংয়ের মতো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি ও সাংবিধানিক অধিকারের প্রশ্নে পুলিশসহ প্রশাসনকেও সহনশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানাই।

নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে ডাকসুর সাবেক এ ভিপি বলেন, গণঅধিকার পরিষদের কর্মসূচিতে সহযোগিতা না করে পূর্বঘোষিত কর্মসূচিস্থল ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগকে দিয়ে দখল করিয়ে সরকার তার জনবিচ্ছিন্ন অবস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদের সমাবেশে বাধা প্রদান করে সরকারি দলের নেতাকর্মীরা প্রমাণ করেছে তারা গণবিরোধী রাজনীতি করছে। দমন-পীড়ন, হামলা-মামলা করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকা যায় না। তাই অনতিবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে এনে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

এইচআর/এসএসএইচ