নতুন নির্বাচন কমিশন দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন উপহার দিতে নতুন ইসিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ পাঁচজনকে নিয়োগ দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। 

সাবেক সচিব কাজী হাবিবুল আউয়াল পরবর্তী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তার সঙ্গে নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন চারজন। তারা হলেন- অবসরপ্রাপ্ত জ্যেষ্ঠ সচিব মো. আলমগীর ও আনিছুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ রাশেদা সুলতানা এমিলি এবং অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহসান হাবীব খান।

দেশের ত্রয়োদশ সিইসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়া হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন এই কমিশনের অধীনে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

নতুন নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, ‘নতুন প্রধান নির্বাচন কমিশনার একজন ভালো মানুষ হিসেবে আমাদের কাছে পরিচিত। তার দায়িত্ব হচ্ছে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা। এই ব্যাপারে আমরা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব, তিনি যেভাবে চান।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আগামী নির্বাচন যেন সকলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়।’

দলের সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে, এটাই জনগণের প্রত্যাশা। তাদেরকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হবে যাতে দেশবাসী তাদের ওপর আস্থা রাখতে পারে।’

আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের অধীনে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে, দেশবাসী সেটাই প্রত্যাশা করে। মানুষ যাতে ভোট প্রদানের নিশ্চয়তা পায় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষ যাতে ভোটের মাধ্যমে তাদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে পারে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করবে এই কমিশন।’

আগামী জাতীয় নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে করাই নতুন ইসির মূল দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।

তিনি বলেন, ‘নতুন ইসিতে যারা দায়িত্ব পেয়েছেন কর্মজীবনে প্রত্যেকেই অত্যন্ত দক্ষতা, সততা এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, তারা অতীতে যে যোগ্যতা-দক্ষতা দেখিয়েছেন, ঠিক সেইভাবে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করবেন।’

হানিফ বলেন, ‘ইসি নিয়ে যাতে কোনো বিতর্ক না হয়, আমার মনে হয় সেটা (বিতর্ক) থেকে আমরা বেরিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছি। সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে, শুধু রাজনৈতিক ফায়দা লুটার জন্য এই কমিশনকে নিয়ে অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে বিতর্কিত করার চেষ্টা যেন না করা হয়। সেটাই জাতির প্রত্যাশা।’

নতুন নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ‘মহামান্য রাষ্ট্রপতি সংবিধান অনুযায়ী যাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নির্বাচিত করেছেন তাদের অভিনন্দন জানাই।’

‘নতুন কমিশন বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশবাসীর প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।’

সার্চ কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ওই পাঁচজনকে নিয়োগ দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন।

সিইসি হিসেবে দায়িত্ব পাওয়া কাজী হাবিবুল আউয়াল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে ২০১৭ সালে অবসর নিয়েছিলেন। তিনি আইন ও ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং সংসদ সচিবালয়ে সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। সরকারি চাকরি থেকে বিদায় নেওয়ার পর ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকতা করছিলেন হাবিবুল আউয়াল।

এইউএ/এইচকে/জেএস