হুমায়ূন আহমেদ : গল্প, গদ্য ও জনপ্রিয়তা
রক্তমাংসের কবি সাহিত্যিকের জন্যে ঈর্ষণীয় এক দৃশ্য, বইমেলায় একজন লেখক একটি প্রকাশনার স্টলে বসে আছেন; সামনে পাঠকের সারি, অটোগ্রাফ পেয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ছেন পাঠক। অন্য কোনো স্টলের সামনে এরকম ঘটনা ঘটছে না। যার ক্ষেত্রে ঘটছে, তিনি হুমায়ূন আহমেদ।
‘সিরিয়াস’ সাহিত্য ও সংস্কৃতির কর্তাব্যক্তিরা খুব ভালো চোখে তাকে দেখেন না; গণকের মতো তারা বলেন, হুমায়ূন বাজার কাটতি লেখক, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে একদিন হারিয়ে যাবেন। অ্যাকাডেমিক ব্যক্তিবর্গের নাক-মুখ আরও একটু কুঁচকে যায়। হুমায়ূন বিষয়ক আলাপ, পাঠ ও গবেষণা থেকে তারা রুচি ও শুচি বাঁচিয়ে দূরে থাকেন। কিন্তু সাহিত্য বাজারের বাস্তবতা হলো, সমস্ত ভবিষ্যৎ বাণী তুচ্ছ করে দিয়ে বহুকাল ধরে টিকে আছেন হুমায়ূন। কিন্তু কেন টিকে আছেন? কী তার সম্বল? কীভাবে তিনি তৈরি হলেন? এই প্রশ্নগুলোর মীমাংসা আজও খানিকটা অদ্ভুতুড়ে মনে হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রায় সবাই প্রথমত ও প্রধানত এক সুরে হুমায়ূন আহমেদের হাস্য রসিকতার প্রসঙ্গ তুলে থাকেন; বলেন, খাঁটি আনন্দ আস্বাদনের লোভে পাঠক হুমড়ি খেয়ে পড়েন তার বইয়ের পাতায়। অবশ্য একথা খুব কম পাঠকই বলেন যে, হুমায়ূন মূলত আনন্দের ভাষা দিয়ে বেদনাকে স্বাগত জানিয়েছেন।
বলার প্রসঙ্গ হিসেবে দ্বিতীয় কাতারে থাকে তার গদ্যের সাবলীলতা, উইট, হিউমার আর স্যাটায়ারের বান, যিনি জোরালোভাবে চালাতে জানেন তার পক্ষে মোটাদাগে সরল ভঙ্গিমা বেছে নেওয়াই স্বাভাবিক। আর তাই অচেনা শব্দের আড়ম্বর ঘটাননি তিনি। সংস্কৃত ঘেঁষা ভাষা তৈরির প্রবণতা তার মধ্যে নেই। কিন্তু সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে হাতিয়ারের কথা আমরা ভুলে যাই, সেটি তার গল্প বলার বৈচিত্র্যময় রীতি। অদ্ভুতভাবে আরম্ভ হয় তার গল্প। সমাপ্তিও ঘটে যায় করুণ সংগীতের মতো।
সাহিত্য বাজারের বাস্তবতা হলো, সমস্ত ভবিষ্যৎ বাণী তুচ্ছ করে দিয়ে বহুকাল ধরে টিকে আছেন হুমায়ূন। কিন্তু কেন টিকে আছেন? কী তার সম্বল? কীভাবে তিনি তৈরি হলেন?
নিজের বই সম্পর্কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সালমান রুশদী বলেছিলেন, ‘মানুষ সাধারণত অপ্রথাগত রীতির গল্প পছন্দ করে।’ শিল্প-সাহিত্যে কথাটি সম্ভবত চিরায়ত সত্য। হুমায়ূন আহমেদের গল্প বলায় এ সত্যের বিচ্যুতি ঘটেনি। তার প্রতিটি লেখার সূচনায় থাকে চমক দেওয়ার আবহ, থাকে অস্বাভাবিক কিংবা অনভ্যস্ত আরম্ভ। সেই আরম্ভই পাঠককে ধীরে ধীরে টেনে নিয়ে যায় সম্পূর্ণ লেখায়।
হুমায়ূনের গল্প শুরু হয় আত্মকথনের রীতিতে, কখনো কখনো উপন্যাসের কয়েকটি চরিত্রের ওপর চাপিয়ে দেন কাহিনি বর্ণনার ভার। কখনোবা লেখক ও চরিত্র মিলেমিশে পেশ করেছেন গল্পের বয়ান। জাদু ও বাস্তবতার যুগল অবস্থানে অদ্ভুত হয়ে ওঠে তার বর্ণনা ভঙ্গি। যেমন ঘটেছে ‘ম্যাজিক মুনশি’ উপন্যাস, ‘পিঁপড়া’ ও ‘আয়না’ গল্পে।
হুমায়ূনের উপন্যাসে সব চলে; সহজেই মিশে যায় চিঠি, ধাঁধা, ডায়েরি, ছড়া, বিজ্ঞাপন, প্যারোডি, বইয়ের পাণ্ডুলিপি; কোনো লেখার বহুস্বরিক হয়ে ওঠার পক্ষে বিভিন্ন উপাদানের এই সমাবেশ নিঃসন্দেহে আকর্ষণীয়। হুমায়ূন মত্ত থেকেছেন রীতির (Genre) খেলায়; একই লেখক লিখেছেন সামাজিক বাস্তবতার আখ্যান, মনস্তাত্ত্বিক সংকট, থ্রিলারধর্মী গল্প-উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন—এক লেখকের লেখায় বিষয় ও রীতির এই বৈচিত্র্য বাংলাদেশের পাঠকের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা।
পঞ্চাশ-ষাট দশকের পূর্ব বাংলার লেখকরা কোনো না কোনো সামাজিক, সাংস্কৃতিক কিংবা রাজনৈতিক বাহাসকে কথাসাহিত্যের বিষয়বস্তু হিসেবে গ্রহণ করেছেন। বড় জোর নিরীক্ষা করেছেন ফিকশনের ভাষা ও চরিত্র নিয়ে। কিন্তু কথাসাহিত্যের গল্পত্বে বড় ধরনের ঘাটতি থেকে গিয়েছে। কিন্তু হুমায়ূন জোর দিয়েছেন বিভিন্ন টেকনিকে বিচিত্র বিষয়ের গল্প বলার প্রতি। এমনকি তিনি যখন সংবাদপত্রের জন্য গদ্য লিখেছেন তখনো তিনি জমিয়ে তুলেছেন গল্পের আসর। হয়তো অনেকের মনে পড়বে তার ‘সকল কাঁটা ধন্য করে’ বইটির কথা। ব্যক্তিগত স্মৃতি গদ্যের সংকলন ‘এই আমি’, ‘কাঠপেন্সিল’, ‘বলপয়েন্ট’ একই স্বভাবের বই।
বাংলাদেশের সংবাদপত্র হুমায়ূন আহমেদের গদ্যরীতিকে আন্তরিক প্রশ্রয় দিয়েছে। আমি নিশ্চিত এ কালের কোনো তরুণ কিংবা প্রৌঢ় লেখকের ভাগ্যে এরকম ঘটবে না।
হুমায়ূন যতক্ষণ গল্প বলেন পাঠক ততক্ষণ বুঁদ হয়ে থাকে। গল্পকে তর তর করে এগিয়ে নিয়ে যায় তার ভাষা। কথা এগোয়, দ্রুততার সঙ্গে ঘটনা ঘটে, গল্প এগোয়। বাংলাদেশের সংবাদপত্র হুমায়ূন আহমেদের গদ্যরীতিকে আন্তরিক প্রশ্রয় দিয়েছে। আমি নিশ্চিত এ কালের কোনো তরুণ কিংবা প্রৌঢ় লেখকের ভাগ্যে এরকম ঘটবে না।
প্রকাশনা মাধ্যমের এই সুবিধাকে হুমায়ূন যথাযথভাবে ব্যবহারও করতে পেরেছিলেন। কিন্তু বিষয়ের প্রয়োজনে তার ভাষার বদল ঘটেছে খুব কম। দেখতে পাই ‘বাদশাহ নামদার’র সঙ্গে ‘কহেন কবি কালিদাস’ কিংবা ‘জোছনা ও জননীর গল্প’র ভাষাগত ব্যবধান নগণ্য। লেখক হিসেবে এখানেই হুমায়ূনের ঘাটতি। কিন্তু ওইটুকু পূরণ হয়ে যায় হাসি-ঠাট্টা, গল্প, ঘটনা, সংলাপ ও চরিত্রের জাদুময় শক্তিতে।
হুমায়ূনের গল্পসঙ্গী হয়ে আসে ভিন্ন ভিন্ন আইডিয়ার চরিত্র; হিমু, শুভ্র, মিসির আলী প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র ভাবজাত। তাদের যুক্তি, প্রতি-যুক্তি, রহস্য, বোহেমিয়ানিজম খুব দ্রুত টেনে নেয় পাঠককে। তারা তিনজন মধ্যবিত্তের বাসনা পূরণের তিনটি রূপ।
শ্রেণি চরিত্র এড়িয়ে সমাজ ও সংস্কৃতির বিভিন্ন স্তরে প্রবেশের মাধ্যম হিমু। ফ্যান্টাসির জগতে কড়া নাড়তে সক্ষম মিসির আলী। শুভ্রকে হুমায়ূন গড়ে তুলেছেন শুদ্ধ মানুষের ধারণা দিয়ে। একটি চরিত্রকে আশ্রয় করে ধারাবাহিকভাবে গল্প বলে একেকটি আইডিয়াকে পাঠকের মনস্তত্ত্বে স্থায়ীভাবে গেঁথে দিয়েছেন তিনি। কথক হিসেবে এই উদ্যোগ ও উদ্যম তার সক্ষমতা নির্দেশ করে।
গল্পের এই হুমায়ূন বাংলাদেশের প্রবল শক্তিশালী সাংস্কৃতিক নির্মিতি। একা একা তিনি তৈরি হননি। জনপ্রিয় হওয়ার দায় তার একার নয়। বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক পাঠক তাকে তৈরি করেছেন। হুমায়ূনকে পড়তে গেলে আমাদের ফিরে তাকাতে হবে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ইতিহাসে।
মুক্তিযুদ্ধ সবে মাত্র শেষ হয়েছে। নতুন একটি মধ্যবিত্ত শ্রেণির হাতে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ক্ষমতা। বই, প্রকাশনা, রেডিও, টেলিভিশনে প্রতিফলিত হচ্ছে নতুন বাংলাদেশ। তৈরি হয়েছে দেশ জেতার জোয়ার। সংস্কৃতির এই নতুন স্রোতধারায় তৈরি হলেন হুমায়ূন আহমেদ।
সম্ভবত বাংলাদেশের সংস্কৃতি কারখানার তিনিই প্রথম সৃষ্টি যিনি বই, পত্রিকা, টেলিভিশন, সিনেমা—মুদ্রণ ও দৃশ্য শব্দ গণমাধ্যমের নানা রূপকে বহুমাত্রিকভাবে ব্যবহার করতে পেরেছেন। শিল্পসৃষ্টি ও মনোরঞ্জন—এ দুয়ের সঙ্গে চমৎকার মেলবন্ধন ঘটাতে পেরেছিলেন।
আমাদের তাই মনে রাখা দরকার ‘অয়োময়’ একই সঙ্গে উপন্যাস ও টিভি নাটক, ‘আগুনের পরশমণি’ একই সঙ্গে উপন্যাস ও চলচ্চিত্র, ‘অচিন বৃক্ষ’ ও ‘খাদক’ গল্প এবং টিভি নাটক। একই রচয়িতার এই বিচিত্র প্রকাশ নিঃসন্দেহে সংস্কৃতি কারখানায় তার অবস্থান ও গ্রহণযোগ্যতাকে অবশ্যম্ভাবী করে তোলে। আর তাই এই জিজ্ঞাসাও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উঠে আসে, চিন্তা, সংস্কৃতি ও রাজনীতির পাটাতন প্রস্তুত হুমায়ূন কী করেছেন?
হুমায়ূনের গল্পসঙ্গী হয়ে আসে ভিন্ন ভিন্ন আইডিয়ার চরিত্র; হিমু, শুভ্র, মিসির আলী প্রত্যেকেই স্বতন্ত্র ভাবজাত। তাদের যুক্তি, প্রতি-যুক্তি, রহস্য, বোহেমিয়ানিজম খুব দ্রুত টেনে নেয় পাঠককে। তারা তিনজন মধ্যবিত্তের বাসনা পূরণের তিনটি রূপ।
রাজনীতি ও সাহিত্যকে যারা আন্তঃসম্পর্কিত করে বুঝতে চান, তাদের কাছ থেকে এ প্রশ্ন আরও যৌক্তিক মনে হয়। কিন্তু সরলভাবে এর উত্তর দেওয়ার সুযোগ কম। বলা যায়, উদার মানবিকতাবাদ ও জাতীয়তাবাদের প্রচলিত ধারাতে হুমায়ূনের রাজনৈতিক আস্থা। কিন্তু আদর্শ কিংবা মতাদর্শ তাড়িত প্রতিষ্ঠানের সমালোচক তিনি।
রাজনীতির ভাষ্যকাররা যেসব রাজনৈতিক বিষয়কে অত্যন্ত সিরিয়াস ভঙ্গিতে বিচার করেছেন, হুমায়ূন সেগুলোকে আলতোভাবে সরিয়ে রেখেছেন। গল্প উপন্যাসে হঠাৎ দু-একটি মন্তব্যের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতাকে তুলে এনেছেন। আবার তিনিই তৎপর হয়েছেন সমকালীন রাষ্ট্র ও রাজনীতির কড়া সমালোচনায়।
‘হলুদ হিমু কালো র্যাব’ কিংবা ‘হিমু রিমান্ডে’ উপন্যাসে হুমায়ূন আহমেদ হাজির করেছেন ক্ষমতা যন্ত্রের ব্যঙ্গাত্মক রূপ। র্যাব ও পুলিশের বিরুদ্ধে ছড়িয়ে দিয়েছেন বিদ্রূপ। হুমায়ূন এই কাজগুলো তখনই করেছেন যখন অভিযান, ক্রসফায়ার ও রিমান্ড বাংলাদেশের রাষ্ট্রনৈতিক বাস্তবতায় প্রথম প্রবেশ করেছে এবং জনমনে ভীতি সঞ্চার করেছে। কিন্তু প্রকাশ্যে সে বিষয়ে কথা বলাও কঠিন হয়ে পড়েছিল। হিমুকে দিয়ে হুমায়ূন বলিয়ে নিলেন র্যাবকে নিয়ে ‘রিডিকিউল’ করার কারণ, ‘আপনারা মানুষের জীবন নিয়ে রিডিকিউল করেন, সেই জন্যেই হয়তো।’
হুমায়ূন আহমেদের ঠাট্টা ও রসিকতা প্রকৃতপক্ষে পাঠকের জন্য ব্যথার উপশম। মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে কোনো সুখকর বাস্তবতা তৈরি হয়নি। এককেন্দ্রিক শাসন, রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, সামরিকায়ন দেশের অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিস্থিতিকে বিহ্বল করে তুলেছিল। হুমায়ূনের লেখাপত্র ছিল সেই বিহ্বলতা থেকে মুক্তির একটি খাত। হয়তো এ কারণেই বলা হয়ে থাকে, হুমায়ূন পাঠক তৈরি করতে পেরেছিলেন। বোধ হয়, স্বতন্ত্র একটি পৃথিবীর খোঁজে পাঠকই বেছে নিয়েছিল হুমায়ূন আহমেদকে।
শেষ বেলায় একটি ব্যক্তিগত স্মৃতি। আমার বড় মামা খানিকটা হুমায়ূনীয় মামাদের মতো। একদিন এসে বললেন, শেরপুরে টাউনহলে কালচারাল প্রোগ্রাম আছে। জোর করে পরিচিত কেউ একজন টিকিট গছিয়ে দিয়েছে। টিকিটের মূল্য একশ টাকা। বাংলা সিনেমার ঝুমুর ঝুমুর নাচ আর ডানকাটা পরিদের অনুষ্ঠান দেখার বয়স তার নেই। এক পা কবরে। চাইলে আমি দেখতে পারি। এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে বসে আছি। কাজ নেই। বইটই পড়ি। টুকটাক লিখি।
সন্ধ্যায় শহরে গেলাম। আমার মোটেও ইচ্ছে হচ্ছিল না অনুষ্ঠানটা দেখি। একটা বুদ্ধি এলো মাথায়। টিকিট নেই বলে যারা উঁকিঝুঁকি দিচ্ছিল, তাদের সামনে গিয়ে ডাকতে শুরু করলাম, টিকিট, টিকিট, টিকিট লাগবে... সঙ্গে সঙ্গে দুজন ক্রেতা পেয়ে গেলাম। একজন দিতে চাইল পঞ্চাশ টাকা। অন্যজনকে নিশ্চিত করলাম, কোনো দুই নম্বরি নেই। আশি টাকায় সম্মত হলেন তিনি।
টাকাটা নিয়ে হুড়মুড় করে ঢুকে গেলাম বইয়ের দোকানে। তাক ভরা গাইড বইয়ের ফাঁক থেকে একটা বই কিনলাম; বইটা আগেই দেখে গিয়েছিলাম। বইয়ের নাম ‘আমার ছেলেবেলা’, লেখক হুমায়ূন আহমেদ। চোখ বন্ধ করলে আমি সেই সন্ধ্যে বেলাকে দেখতে পাই, হুমায়ূন আহমেদের একটা বই কিনবে বলে সদ্য কৈশোর পেরুনো এক তরুণ টিকিট বিক্রি করছে... টিকিট... টিকিট...
কিন্তু কীসের লোভে? গল্পের।
সুমন সাজ্জাদ ।। অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়