উত্তরাধিকার
জাতির পিতার অবর্তমানে—একটা সময় মানুষের মনে উৎকণ্ঠা ও শঙ্কা জেগেছিল, তবে এই শেখ পরিবারের লিগ্যাসি বা ধ্বজা বইবার আর কেউ রইল না? মাত্র ৬ বছরের মাথায় জাতির হতাশাকে কাটিয়ে—বৃষ্টি ভেজা দুপুরে, ঢাকা বিমানবন্দরে, উত্তরাধিকার, লিগ্যাসির মহাকন্যা, বিমানের সিঁড়িতে এসে দাঁড়ালেন।
রংধনুর মতো উজ্জ্বল হলো বৃষ্টি ভেজা একটি উচ্চারণ—‘স্বাগতম বঙ্গবন্ধু কন্যা’। পিতার জীবনের দীর্ঘ আন্দোলন ও নির্যাতন সামনে থেকে দেখা—হাসিনার জন্য ছিল ব্যবহারিক শিক্ষা।
বিজ্ঞাপন
মানসিক, শারীরিক সহ্য ক্ষমতা-নিপীড়ন বইবার অভিজ্ঞতা জন্ম থেকেই, সুতরাং ভয়ের কি আছে? হারানোর কী আছে? সব হারিয়ে সাহসী এক পিতার উত্তরাধিকার! জেনেশুনে বিষপান করা স্বঘোষিত এক নীলকণ্ঠী!
আরও পড়ুন : রাজনীতিই শেষ ভরসা
পৃথিবীতে অনেক পতিত রাষ্ট্রপ্রধানদের সন্তানেরা আর সাহস করেনি নিজ ভূমে ফিরে আসার। নিরাপদ জীবনের খোঁজে অন্য কোথাও থিতু হয়েছে। পিতৃ হত্যার বিচার বা জাতির অর্থনৈতিক ও সামাজিক মুক্তির ঘোরে মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে সারারাত বারান্দায় দাঁড়িয়ে কাটায়নি। যেটা হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যার বেলায়।
তার গর্ভে যে এই চেতনার ভ্রূণের জন্ম হবে-তা কি আর ব্যাখ্যার প্রয়োজন আছে? জিনগত প্রভাব গ্রোথিত থাকবে তার শরীরের নুতন ফুলে- সেটাই তো প্রাকৃতিক।
পৃথিবীতে অনেক পতিত রাষ্ট্রপ্রধানদের সন্তানেরা আর সাহস করেনি নিজ ভূমে ফিরে আসার। নিরাপদ জীবনের খোঁজে অন্য কোথাও থিতু হয়েছে...
মানুষের প্রতি ভালোবাসা ও ত্যাগ হবে তার সন্তানের নৈতিক আদর্শ– ‘আগে মানুষ হও’। যার উদাত্ত আহ্বান- তার রক্ত সজীব ওয়াজেদ জয় এই নির্দেশকে ব্রত করে নিজেকে তৈরি করেছে যোগ্য উত্তরাধিকার হিসেবে। তাইতো রক্ত কথা বলে- ধারণ করে আদর্শ।
আরও পড়ুন : ভোটের গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার
দেশকে ভালোবাসার এক না ঘুমানো স্বপ্ন লালন করে নিজেকে তিলে তিলে তৈরি করে। বর্তমান বিশ্বের সাথে পাল্লা দিয়ে প্রতিযোগিতায় নামার- সঙ্গত কারণে সামরিক যুদ্ধ তার অতি প্রয়োজন হারিয়েছে- শক্তির প্রতিযোগিতার ট্রান্সফর্মেশন হয়েছে।
আজকের যুদ্ধ, প্রতিযোগিতা, তা হলো ইন্টারমিডিয়েট টেকনোলজি, মেধা ও মননের। যার নতুন শ্লোগান ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। এই শ্লোগানের নুতন কবি- উত্তরাধিকার।
স্বাধীন বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ, সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিজ্ঞা। উন্নত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার স্বপ্ন।
নির্বোধ সমালোচকরা মুচকি হেসেছিল, এক অসম্ভব ঘোষণা তাসের ঘরের মতো ভেঙ্গে পড়ল বলে, সময় গুনছিল মসনদ দখলের ব্যর্থতার ধারাবাহিকতায় এক যৌক্তিক ব্যাখ্যা দাঁড় করানো যাবে।
মূর্খের ঘুম ভেঙ্গে গেল এক নতুন চমকে। এ কোন যোদ্ধা? এ কোন নায়ক? এ কোন মুজিবের ফিরে আসা ভিন্ন অবয়বে- পিতামহের প্রতিবিম্বকে ধারণ করে? যেমনটি স্বাধীনতার ডাকে হেসেছিল পাকজান্তারা?
স্বাধীন বাংলাদেশ, জাতির পিতার স্বপ্ন। ডিজিটাল বাংলাদেশ, সজীব ওয়াজেদ জয়ের প্রতিজ্ঞা। উন্নত ও স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার স্বপ্ন।
‘জয়’ যে উত্তরাধিকার। ‘জয়’ যে শেখ মুজিবের স্বাধীনতা যুদ্ধের তৃতীয় প্রজন্ম- জেনেটিক্যাল, বায়োলজিক্যাল ও ভিশনারির রক্তপ্রবাহ!
আরও পড়ুন : বাংলাদেশে কার্যকর সংসদ এবং সুশাসনের স্বপ্ন
অন্ধকারে আর অন্ধ সমর্থনে- দর্শন যেন যুক্তি ও ব্যাখ্যায় প্রমাণিত সত্যের কাছে পরাজিত হয়। আস্বাদন করার সময় হয়েছে নতুন প্রজন্মের জন্য- Try And Test- পার্থক্য বুঝে আদর্শের যে প্যারাডাইম শিফট তাকে ধরতে হবে।
মাস্তান-চাঁদাবাজ, না কম্পিউটার বিজ্ঞানী। কমিশন এজেন্ট, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী না, মহাকাশে নিয়ে যাওয়া এক তরুণের স্বপ্নসারথি। খুনি ডন, না- সৌম্য, শান্ত, শিক্ষিত জাতির পিতার উত্তরাধিকার!
বঙ্গবন্ধু তুমি আমাকে শুধু দেশই দাওনি, একজন- অর্থনৈতিক মুক্তির দেবী ‘মিনার্ভা’- শেখ হাসিনাকে দিয়েছ। ‘জয় বাংলার অমোঘ শক্তির প্রথম অংশ ‘জয়’- সজীব ওয়াজেদ জয়’।
শুভ জন্মদিন।
উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার ।। রাজনৈতিক বিশ্লেষক