শ্যাম বেনেগালের রাজনৈতিক চিন্তালোক
রাজনৈতিক চলচ্চিত্র তখনই নির্মিত হয়, যখন সমাজে তার প্রয়োজন অনুভূত হয়। রাজনৈতিক চলচ্চিত্র বলতে, সরাসরি রাজনৈতিক বক্তব্য যেখানে উদ্ভাসিত, শ্রেণি ও অর্থনৈতিক বৈষম্য এবং শাসন-শোষণের প্রশ্নে। এমনিতে সব চলচ্চিত্রই রাজনৈতিক, কোনো না কোনো ভাবাদর্শকে তা ধারণ করে।
ভারতে তথাকথিত নাচে গানে ভরপুর, তারকা সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র যেমন পুঁজিবাদী ব্যবস্থার এক উৎকৃষ্ট বিজ্ঞাপন, তেমনি উল্টোচিত্রও রয়েছে। পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তরের দশকে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বাইরে গিয়ে সমাজ ও রাজনীতি সচেতন চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্রতী হন কয়েকজন ভারতীয় নির্মাতা। তাদের ভেতর অগ্রগণ্য ধরা হয় সত্যজিৎ রায়কে। মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, মনি কাউল প্রমুখের পাশাপাশি আরও একজনকে বলা হয় ভারতীয় ‘সমান্তরাল সিনেমা’র অন্যতম শিল্পী, তিনি শ্যাম বেনেগাল।
বিজ্ঞাপন
১৯৩৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর হায়দ্রাবাদের ত্রিমুলঘেরি নামের এক সেনানিবাস অঞ্চলে, মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন শ্যামসুন্দর বেনেগাল। বাবা শ্রীধর বেনেগাল ছিলেন একজন আলোকচিত্রী। শ্রীধরের একটি ১৬ মিলিমিটারের ক্যামেরা ছিল। সেটি দিয়ে প্রচুর পারিবারিক চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন শ্রীধর। বাবার কাছ থেকেই চলচ্চিত্র তোলার হাতেখড়ি হয় শ্যামসুন্দরের।
আর বাড়ির পাশে থাকা প্রেক্ষাগৃহে প্রচুর চলচ্চিত্র দেখেছেন কৈশোর ও যৌবনে। কপিরাইটার হিসেবে কর্মজীবন শুরু, কিন্তু পরবর্তী সময়ে হয়ে উঠেছেন ভারতীয় চলচ্চিত্রের এক গুরুত্বপূর্ণ নির্মাতা। বেনেগাল মারা যান জন্মের মাসেই, ২০২৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর।
৯০ বছরের দীর্ঘ জীবনে বেনেগাল নির্মাণ করেছেন ২৪টি পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র, ৪১টি প্রামাণ্যচিত্র, ৪টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ও ৬টি টিভি প্রযোজনা। এই বিপুল সম্ভার থেকে দুটি বিষয় বেশ স্পষ্ট করে বোঝা যায়, সেটি হলো সমাজ ও রাজনীতির প্রতি বেনেগালের ছিল অপার আগ্রহ।
আমার কাছে শ্যাম বেনেগাল মানে, তার অপূর্ব পল্লী ত্রয়ী বা রুরাল ট্রিলজি—‘অঙ্কুর’ (১৯৭৪), ‘নিশান্ত’ (১৯৭৫) ও ‘মন্থন’ (১৯৭৬)। এই তিনটি চলচ্চিত্রই মূলত শ্যাম বেনেগালকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে জায়গা করে দিয়েছে। যদিও অনেকে ‘ভূমিকা’ (১৯৭৭) চলচ্চিত্রের কথা বলবেন, মারাঠি অভিনেত্রী হাঁসা ওয়াদকরের জীবন নিয়ে নির্মিত এই চলচ্চিত্রতে নারীর সংগ্রাম রয়েছে, কিন্তু রাজনৈতিক বক্তব্য অতটা উচ্চকিত নয়।
পল্লী ত্রয়ীতে বেনেগাল সামষ্টিক প্রতিবাদের কথা বলেছেন, মার্কসবাদী কণ্ঠস্বর হয়ে শোষিত, নিপীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের পক্ষ নিয়েছেন। মার্কসের মতো তিনিও সমাজকে পর্যবেক্ষণ করেছেন দুই শিবিরে বিভক্ত করে—শোষক ও শোষিত।
ভারতে তথাকথিত নাচে গানে ভরপুর, তারকা সমৃদ্ধ চলচ্চিত্র যেমন পুঁজিবাদী ব্যবস্থার এক উৎকৃষ্ট বিজ্ঞাপন, তেমনি উল্টোচিত্রও রয়েছে। পঞ্চাশ, ষাট ও সত্তরের দশকে বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রের বাইরে গিয়ে সমাজ ও রাজনীতি সচেতন চলচ্চিত্র নির্মাণে ব্রতী হন কয়েকজন ভারতীয় নির্মাতা। তাদের ভেতর অগ্রগণ্য ধরা হয় সত্যজিৎ রায়কে। মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, মনি কাউল প্রমুখের পাশাপাশি আরও একজনকে বলা হয় ভারতীয় ‘সমান্তরাল সিনেমা’র অন্যতম শিল্পী, তিনি শ্যাম বেনেগাল।
‘অঙ্কুর’ চলচ্চিত্রতে আমরা দেখেছি ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে জমিদারপুত্র সুরিয়াকে তার বাবা খেতখামার দেখে রাখার জন্য প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে পাঠায়। সেখানে তার রান্নাবান্না করে দেয় নিম্নবর্ণের এক নারী লক্ষ্মী। তার ব্যাপারে সুরিয়া প্রথমে বেশ উদার মনোভাব দেখায়। তার হাতের রান্না খেতে কোনো সমস্যা নেই ইত্যাদি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে বোঝা যায় কামনা চরিতার্থ করাই সেই ভালোমানুষির আসল কারণ।
সেও আসলে জমিদারের পরম্পরা বহন করে চলেছে। অত্যাচার ও অবিচারে সেও কম যায় না। লক্ষ্মী যখন তারই কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়ে, তখন সুরিয়া নিজের নববধুর কাছে অসহায় বোধ করতে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কেউ কথা না বললেও, কারওই বুঝতে বাকি থাকে না, কেন লক্ষ্মী গর্ভবতী।
এদিকে লক্ষ্মীর সহজসরল বোবা স্বামী কিশতাইয়া বেকার, তদুপরি মাদকাসক্ত। কাজ চাওয়ার জন্য জমিদারপুত্রের কাছে যেতে না যেতেই সুরিয়া ভেবেছে স্ত্রী লক্ষ্মীর গর্ভধারণ নিয়ে সে প্রতিশোধ নিতে এসেছে। ভুল বুঝে বেধড়ক পিটুনি দেয় সুরিয়া। লোক জড়ো হয় উঠানে। তাদেরও পুরো বিষয়টি বুঝতে সময় লাগে না।
তখন লক্ষ্মী প্রতিবাদ করে ওঠে, চোখে চোখ রেখে সে জমিদারপুত্রকে বলে, আমরা তোমার গোলাম নই, লাগবে না তোমার কাজ! এই হুংকার যেন সেই উঠানে উপস্থিত সব গ্রামবাসীর কণ্ঠেই প্রতিধ্বনিত হয়। শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, লক্ষ্মী, কিশতাইয়া ও গ্রামবাসী উঠান ছেড়ে চলে যাওয়ার পর একটি ছোট ছেলে জমিদারপুত্রের বাড়িতে ঢিল ছুঁড়ে জানালার কাচ ভেঙে দৌড়ে পালায়। এরপর পর্দা লাল হয়ে যায়। বেনেগাল বোধহয় এখানে বিপ্লবের লাল ঝাণ্ডাই উড়িয়ে দিলেন।
অন্ধ্র প্রদেশের সত্য কাহিনি অবলম্বনে লেখা বিজয় টেন্ডুলকারের গল্প অবলম্বনে নির্মিত ‘নিশান্ত’ চলচ্চিত্রটিও সামন্তবাদী শাসনব্যবস্থার শোষণ ও নির্যাতনের প্রতিবাদে নির্মিত। কাহিনিতে দেখা যায় প্রত্যন্ত গ্রামে এক স্কুলমাস্টার বদলি হয়ে এসেছে স্ত্রী ও পুত্র নিয়ে। সেই গ্রামে জমিদার ও তার তিন ভাই ত্রাসের রাজত্ব স্থায়ী করেছে। যা কেড়ে নিতে ইচ্ছে হচ্ছে, কেড়ে নিচ্ছে। যাকে তুলে নিতে ইচ্ছে করছে, তো তুলে নিচ্ছে।
আরও পড়ুন
সেই তিন ভাইয়েরই দৃষ্টি পড়ে মাস্টারের স্ত্রী সুশীলার দিকে। তারা তাকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণ করে এবং তাদের বাড়িতেই আটকে রাখে। মাস্টার হন্যে হয়ে তার স্ত্রীকে মুক্ত করতে চায় কিন্তু প্রশাসনও সেই জমিদারের হাতের মুঠোয়। গ্রামবাসী বিষয়টি ভালোভাবে নেয়নি। কারণ তারা মাস্টারকে শ্রদ্ধা করে। পাশাপাশি মন্দিরের স্বর্ণালঙ্কার চুরির পেছনেও যে এই ভাইদের হাত আছে, সেটাও গ্রামের মানুষ বুঝতে পারে।
মন্দিরের পুরোহিতও বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার সাহস পায় না। একদিন বন্দি অবস্থাতেই সুশীলার সাথে দেখা হয়ে যায় মাস্টারের, তখন সুশীলা তার স্বামীকে বলে, তার জায়গায় সে থাকলে জমিদারের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিত! টনক নড়ে মাস্টারের। সে পুরোহিতের সাথে আলাপ করে, পুরো গ্রামবাসীকে, যারা মূলত দরিদ্র কৃষক, তাদের জাগ্রত করতে থাকে জমিদারের বিরুদ্ধে। এরপর এক গণঅভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে নিহত ও উৎখাত হয় জমিদার ও তার জমিদারি। জমিদারদের সাথে সুশীলাকেও পিটিয়ে মারা হয়। একেবারে অন্তিমে দেখা যায়, অভ্যুত্থানের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড জমিদার বাড়ির বিভিন্ন কক্ষ ঘুরে ঘুরে দেখছে সুশীলার ছোট ছেলেটি।
বিধ্বস্ত ঘর ও নিথর দেহ প্রত্যক্ষ করে ছেলেটি দৌড়ে চলে যায় মন্দিরে, যেখানে আশ্রয় নিয়েছিল গ্রামের সব ছোট ছোট ছেলেমেয়ে। এখানেই নিশির অন্ত হয়। বেনেগালের ‘অঙ্কুর’-এ যে প্রতিবাদ ছিল কিছুটা অবলা ও অসহায়, সেই প্রতিবাদই ‘নিশান্ত’-এ হয়ে ওঠে সদলবলের রক্তিম বিপ্লব।
প্রথম চলচ্চিত্রে বিক্ষুব্ধ জনতা নিজের ঘৃণা জানিয়েছে ঢিল ছুঁড়ে ও পরের চলচ্চিত্রতে উৎপীড়ককে উৎখাত করা হয়েছে সশস্ত্র হামলা চালিয়ে। তৃতীয় চলচ্চিত্র ‘মন্থন’-এ এসে দর্শক দেখতে পায় এক বিপুল পরিবর্তনের ভেতর দিয়ে নিজেদের ভেতর বোঝাপড়া করে নিচ্ছে গ্রামের সাধারণ দলিত জনগোষ্ঠী। তারা আত্মনির্ভর হয়ে উঠছে।
অনেকটা যেন সর্বহারার একনায়কতন্ত্র কায়েম করার মতো। চলচ্চিত্রে দেখা যায় গুজরাটের এক গ্রামে মনোহর রাও নামের এক পশু চিকিৎসককে পাঠানো হয় সরকারের পক্ষ থেকে, গ্রামে সমবায় ভিত্তিক দুধের খামার গড়ে তোলার জন্য। শহুরে শিক্ষিত মনোহর অনেকটা সমাজতান্ত্রিক ভাবধারা নিয়ে গ্রামের মানুষদের ভেতর অর্থনৈতিক সংস্কারে ব্রতী হয়। কিন্তু গ্রামে ঋণের জালে জর্জরিত, আতঙ্কগ্রস্ত অসহায় দলিত শ্রেণি প্রভাবশালী মহাজনের কাছে কম দামে দুধ বিক্রি করে।
এই ব্যবস্থাকে পাল্টাতে যথেষ্ট বেগ পেতে হয় মনোহরকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই ব্যবস্থা পাল্টায়, মনোহর চলে যাওয়ার পর। কারণ ততদিনে গ্রামবাসীর ভেতর আত্মবিশ্বাসের বীজ রোপিত হয়ে গিয়েছে। তারা ততদিনে নিজেদের নেতা ভোলাকে পেয়ে গেছে। শেষ দৃশ্যে দেখা যায়, ভোলা সবাইকে উজ্জীবিত ও বোঝানোর চেষ্টা করছে, তারা নিজেরা সমবায় সমিতি চালাতে পারবে, এভাবে ঠকে আর দুধ বিক্রি করতে হবে না।
তখন গ্রামবাসী লাইন দিয়ে কম দামেই দুধ বিক্রি করছিল মহাজনের কাছে। ভোলার আহ্বানে যখন কেউ আস্থা রাখতে পারছিল না, তখন দেখা গেল লাইনের ভেতর থেকে একটি ছোট ছেলে প্রথম বেরিয়ে এলো এবং ভোলাকে অনুসরণ করতে শুরু করলো। এরপর একে একে সবাই ভোলার পিছু নেয়। ভোলা যেন নতুন যুগের হেমিলনের বাঁশিওয়ালা, যে তাদের এক বৈষম্যহীন সমাজের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার উপরেই আস্থা রাখছে। এখানেই শেষ হয় ট্রিলজির তৃতীয় চলচ্চিত্রটি।
বেনেগাল এরপর আরও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, কিন্তু এই ত্রয়ী তার ভাবনাজগত সম্পর্কে দর্শককে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে দেয় এবং নিজের জন্যও একটি অভিমুখ রচনা করে।
বেনেগাল এরপর আরও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন, কিন্তু এই ত্রয়ী তার ভাবনাজগত সম্পর্কে দর্শককে স্পষ্ট ধারণা তৈরি করে দেয় এবং নিজের জন্যও একটি অভিমুখ রচনা করে। পল্লী ত্রয়ীর মূল বক্তব্য হলো শাসক ও শোষিতের ভেতর দ্বন্দ্ব। আরও একটি বিষয় বেনেগাল তিনটি চলচ্চিত্রতেই এনেছেন, একেবারে শেষ দৃশ্যে, সেটি একটি ছোট ছেলে।
‘অঙ্কুর’-এ ছেলেটি ঢিল ছোঁড়ে, ‘নিশান্ত’-এর ছেলেটি জমিদারের বিধ্বস্ত বাড়ি ঘুরে অন্য বাচ্চাদের কাছে যায়, অথচ যেখানে তারও মন্দিরে থাকার কথা ছিল, যেহেতু গ্রামে অভ্যুত্থান হচ্ছে। আর ‘মন্থন’-এর ছোট ছেলেটি লাইন ভেঙে বেরিয়ে আসে, নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রেখে। প্রশ্ন হলো এই ছেলেটি কে, চলচ্চিত্র তিনটিতে সে কীসের প্রতীক হিসেবেই বা হাজিরা দিচ্ছে?
আমার মতে, বেনেগাল ছোট ছেলেটিকে দেখিয়ে বলতে চাইছেন ‘আগামী’র কথা। যে আগামী দুর্বল হলেও প্রতিবাদ জানাতে পারে (অঙ্কুর), ক্ষমতার পালা বদলের ইতিহাসের সাক্ষী হতে পারে (নিশান্ত) এবং শুধু তাই নয়, নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থার পথে যাত্রা শুরু করতে পারে (মন্থন)।
ভবিষ্যতের দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করাই গুণী চলচ্চিত্র নির্মাতার কাজ। তিনি বর্তমানের সংকট মোকাবিলায় আস্থা রাখতে চান আগামীর পথে। বেনেগাল সেই ‘আগামী’ সময়কেই চিহ্নরেখা হিসেবে রেখে যেতে চেয়েছেন ত্রয়ীতে। তিনি বিশ্বাস করতে চেয়েছেন আসছে দিনের সমাজ হবে বৈষম্যহীন ও শোষণমুক্ত। উল্লিখিত তিন চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বেনেগাল যে আদর্শ ও প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন, তার প্রলম্বিত ছায়া তার পরবর্তী চলচ্চিত্রগুলোতেও দেখা যায়। সেটি হোক জীবনী নির্ভর কাহিনিচিত্র বা প্রামাণ্যচিত্র।
শ্যাম বেনেগাল জীবনের অন্তিমে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যৌথ প্রযোজনার একটি চলচ্চিত্র ‘মুজিব: দ্য মেকিং অফ আ নেশন’ (২০২৩) নির্মাণ করেছিলেন। যদিও এই চলচ্চিত্রতে আদতে সেই পল্লী ত্রয়ীর বেনেগালকে খুঁজে পাওয়া যায় না। যাওয়ার কথাও নয়, কারণ অশীতিপর মানুষের পক্ষে ওরকম মাত্রার চলচ্চিত্র পরিচালনা করা ভীষণ দুরূহ কাজ। কারণ চলচ্চিত্র মাথার কাজ তো বটেই, প্রচণ্ড রকম শারীরিক পরিশ্রমেরও কাজ।
তবে এসব সমালোচনা দূরে সরিয়ে রেখে এটা বলা যায় নির্দ্বিধায়, বেনেগাল যদি ওই পল্লী ত্রয়ীর পর আর চলচ্চিত্র না-ও বানাতেন, তাতেও কোনো ক্ষতি হতো না। বেনেগাল নিজেকে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে ওই তিনটি চলচ্চিত্র দিয়েই নিজেকে প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন দৃঢ় ভিত্তির ওপর।
বিধান রিবেরু ।। চলচ্চিত্র সমালোচক