ভারতের সেভেন সিস্টার্স : বাংলাদেশের কী লাভ, কী ক্ষতি
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাতটি রাজ্য অরুণাচল, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরা তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে মোট ৫,১৮২ কিলোমিটার আন্তর্জাতিক সীমান্ত ভাগ করে। রাজ্যগুলো ভুটান, তিব্বত, মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ দ্বারা পরিবেষ্টিত।
ভৌগোলিক এই অবস্থানের কারণে রাজ্যগুলো ভারতের জন্য নিরাপত্তা, সামরিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশ ভারতের মোট স্থল সীমানার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এই সেভেন সিস্টার্সের সঙ্গে, যার ফলশ্রুতিতে ভৌগোলিক, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক দিক থেকে সেভেন সিস্টার্স এর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ।
বিজ্ঞাপন
প্রথমত, ভূ-রাজনীতির নিরীক্ষণে সেভেন সিস্টার্স ভারতের কাছে খুবই জরুরি কিন্তু এই সাতটি রাজ্যেগুলোয় যাতায়াত করা ভারতের জন্য নিরবচ্ছিন্ন অসুবিধাজনক। সেই সাথে ভারতের কৌশলগত দুর্বলতা হিসেবে চিহ্নিত শিলিগুড়ি করিডোরের সাথে উত্তর পূর্বের রাজ্যগুলোর সংযোগ সেভেন সিস্টার্সকে আরও ভূকৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ করে তোলে।
নিরাপত্তার দিক থেকেও ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে একটি। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর এই ল্যান্ড অফ সেভেন সিস্টার্স-এ জেড ফিজো-এর নেতৃত্বে নাগা ন্যাশনাল কাউন্সিল (এনএনসি) প্রথম নাগাল্যান্ডের স্বাধীনতার জন্য লড়াই শুরু করে। আর ধীরে ধীরে মেঘালয়, আসাম, মিজোরাম, ত্রিপুরায় এসব অঞ্চলেও ভারত বিরোধী আদিবাসীদের সশস্ত্র দল গড়ে ওঠে।
ষাটের দশকে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট এর স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীরা বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতো এবং ১৯৮৭ সালে রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার আগে পর্যন্ত মিজো নেতা জোরামথাঙ্গা ও তার সহযোগী অনেকেই বাংলাদেশে থাকতেন। নিরাপত্তা সহযোগিতা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ, বিদ্রোহ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের মতো নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত করতে বাংলাদেশ বিপুল সহায়তা করেছে।
আরও পড়ুন
২০১৩ সালের প্রত্যাবর্তন চুক্তি এবং ২০১৫ সালের স্থল সীমান্ত চুক্তির মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের দমনে সহায়তা করে এবং তাদের বাংলাদেশের আশ্রয় কঠিন হয়ে পড়ে। ২০১৫ এর নভেম্বর ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অফ আসাম (উলফা) এর শীর্ষ নেতা অনুপ চেটিয়ার সঙ্গে তার দুই সহযোগী লক্ষ্মী প্রসাদ গোস্বামী ও বাবুল শর্মাকেও ভারতের কাছে হস্তান্তর করা হয়। তাই বলা যায় সেভেন সিস্টার্সে একের বেশি শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকা ছিল।
অন্যদিকে, উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোয় মাদকের ব্যবহারের ঊর্ধ্বগতি ও আন্তঃদেশীয় বেআইনি ব্যবসা বাংলাদেশের জন্য হুমকি স্বরূপ। আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশের মাদকের পাচারের অনেকগুলো পয়েন্ট শনাক্ত করেছে বাংলাদেশ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর। সংযুক্ত সীমানা থাকার দরুণ ইয়াবা, আফিম, হিরোইন মিয়ানমারে উৎপাদন হয়ে ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্য গুলো, বিশেষত মিজোরাম ও মনিপুর হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।
শুধু সীমানায় কড়া পাহারা না, বাংলাদেশ উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সীমান্তের কাছাকাছি কিছু কারখানা রয়েছে যারা শুধুমাত্র বাংলাদেশকে বাজার হিসেবে লক্ষ্য করে ফেনসিডিল উৎপাদন করে যা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। বাংলাদেশ তাদের তালিকা পাঠিয়েছে এবং যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে তা সমাধানের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
চলতি বছরে পার্বত্য এলাকার সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের পুনরায় উত্থান ও অপরাধমূলক কার্যকলাপ বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের বান্দরবান মিজোরাম এবং মিয়ানমারের কিচিং প্রদেশে এই বিচ্ছিন্নতাবাদী দলটির অস্তিত্ব এবং এই আন্তর্জাতিক নাকি ব্যবহার করে তারা অবৈধ মাদক এবং অস্ত্র ব্যবসা।
নিরাপত্তা সহযোগিতা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ, বিদ্রোহ এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের মতো নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালিত করতে বাংলাদেশ বিপুল সহায়তা করেছে।
দ্বিতীয়ত, ভৌগোলিক অবস্থানের বৈরিতার কারণে এই সাতটি রাজ্য ভারতের সার্বিক উন্নয়ন থেকে পিছিয়ে আছে কিন্তু এই যথেষ্ট অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধি রয়েছে। এই সাতটা রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের নিকটস্থ অবস্থান ভারতের কাছে বাংলাদেশ গুরুত্ব বৃদ্ধি। ভারত এখন বাংলাদেশের আকাশপথ, নদী ও সড়ক ব্যবহার করে বিমান, নৌপথ, রেলপথ এবং সড়কপথ ব্যবহার করে ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোর সাথে সংযুক্ত।
২০২৩ সালে জাপান সমৃদ্ধ বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তুলতে ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যের সাথে বাংলাদেশের ভৌগোলিক কানেকটিভিটিকে কাজে লাগিয়ে উন্নত অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করতে কিছু উচ্চাকাঙ্ক্ষী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। যার মধ্যে রয়েছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও বাংলাদেশের মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভ্যালু চেইন গড়ে তোলা এবং মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপন করা।
যোগাযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উপর ভারতে নির্ভরশীলতা বাংলাদেশের একটি কৌশলগত লিভারেজ তৈরি করে।
বাংলাদেশ তার পোশাক, ওষুধ ও কৃষিজাত দ্রব্য এবং মৃৎশিল্পের একটি সাতটি রাজ্যে স্থাপন করতে পারে। ত্রিপুরার শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়ন নিগমের চেয়ারম্যানের মতে, ২০১৮ থেকে ২০২১ এর মধ্যে ত্রিপুরাতে বাংলাদেশের রপ্তানি পাঁচ কোটি রুপি থেকে ৩০০ কোটি রুপিতে পৌঁছেছে। সেভেন সিস্টারের বাজারে ইলেকট্রনিক্স এবং হোম অ্যাপ্লায়েন্সেসের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে এবং বাংলাদেশি নির্মাতারা বাজারের চাহিদানুযায়ী চেষ্টা করছে।
ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে প্রায় ২৭ মিলিয়ন ডলারের রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার রপ্তানি করেছে। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের পণ্যের চাহিদা ভারতের উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোয় বৃদ্ধির পেছনে রাজ্যগুলোর সাথে বাংলাদেশের অবকাঠামোগত উন্নয়ন নিরাপত্তা এবং অনেক শুল্ক বন্দরগুলোর প্রতিষ্ঠার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে।
বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে ভারতের মূল ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে রেল করিডোরের মাধ্যমে সেভেন সিস্টার্সের কানেকটিভিটি দেওয়া এবং এর বিনিময়ে বাংলাদেশ ভারতের মধ্য দিয়ে ভুটান ও নেপালের সাথে কানেকটিভিটির সুযোগ নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও এ ধরনের কানেকটিভিটি স্থাপন করা হলে চারটি দেশের মধ্যে যোগাযোগ, ব্যবসা ও পর্যটন শিল্পকে তরান্বিত করবে। নিঃসন্দেহে এ ধরনের যোগাযোগ অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য ইতিবাচক। কিন্তু এ ধরনের যোগাযোগের ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত শুল্ক দেওয়ার বিধান, পরিবেশ নীতি ও পর্যাপ্ত সুরক্ষা ও সার্ভেলিয়েন্স নীতি না থাকলে বৃহৎ দেশের কাছে ক্ষুদ্র দেশের স্বার্থ আটকে যাবে।
তৃতীয়ত, ভারত চীনের সম্পর্কের একটি বিশাল উদ্বেগ হলো অরুণাচল প্রদেশের তিব্বত ও তেয়াং অঞ্চল। গত দশকে ভারতের উত্তর পূর্ব রাজ্যগুলোর বিদ্রোহীদের ক্ষমতায়নে চীনের তেমন প্রভাব না থাকলেও চীনা নির্মিত অস্ত্রের প্রাপ্যতা দিল্লিকে নতুন করে ভাবিয়ে তোলে।
আরও পড়ুন
২০২০ সালে জুলাই মণিপুরের চান্দেল জেলায় মণিপুর নাগা পিপলস ফ্রন্ট (এমএনপিএফ), রেভল্যুশনারি পিপলস ফ্রন্ট (আরপিএফ) এবং উলফা-আই-এর যৌথ হামলায় চার আসাম রাইফেলস কর্মী নিহত ও অনেকের আহতের ঘটনা এবং সম্প্রতি মণিপুরে চলমান সংঘর্ষের পেছনে কুকি-চিন, চীন ও মিয়ানমারের উসকানি ভারতের দুশ্চিন্তাকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
সেইসাথে, সংঘাতের কেন্দ্রস্থল বাংলাদেশের সন্নিহিত হওয়ায় এবং বিদ্রোহী জাতিগুলো তিন দেশেই উপস্থিতি থাকায় তা আঞ্চলিক নিরাপত্তা সমস্যায় রূপান্তরিত হওয়ার বিপদ উড়িয়ে দেওয়া যায় না। মণিপুরের সাথে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের সীমান্ত সংযোগ থাকায় বিদ্রোহীরা পালিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামের আশ্রয় নিতে পারে যা বাংলাদেশের জন্য হুমকি স্বরূপ।
২০১৭ সালের মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতন-নিপীড়ন ও নির্বিচার গণহত্যার সময়ে অনেক রোহিঙ্গা বাধ্য হয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। তখন ভারতে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারের মতো। ভারত সরকার মনে করে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ।
তাছাড়া রোহিঙ্গাদের পাকিস্তানের আইএসএস এবং ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলগুলোকে অস্থিতিশীল করতে পারে বলে মনে করে। মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা আসাম এবং ত্রিপুরাকে করিডোর হিসেবে ব্যবহার করে ভারতের অন্যান্য প্রদেশে যাওয়ার বেআইনি প্রচেষ্টা করছে।
আবার অনেকে ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকবার ভয়ে ভারত থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করেছে। সম্প্রতি ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসীদের মাটিয়া ট্রানজিট ক্যাম্পে আটকের প্রতিবাদে অন্যান্য রোহিঙ্গারা অনশন করছে যা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে নতুন দুশ্চিন্তা ফেলেছে।
একই ভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পাশাপাশি মায়ানমারের গৃহ যুদ্ধের দরুণ প্রতিদিন নতুন রোহিঙ্গার আগমন ঘটছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় দিনদিন চুরি, খুন, অস্ত্র এবং মাদক চোরাচালান বাড়ছে। নিঃসন্দেহে রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশ বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করছে।
টিপাইমুখ বাঁধ হলে সিলেট এবং মৌলভীবাজার জেলার জলাভূমি আগের তুলনায় গড়ে যথাক্রমে ২৬ শতাংশ ও ১১ শতাংশ কমে যাবে। তাই সেভেন সিস্টার থেকে বাংলাদেশে আসা নদীগুলোর এবং বাঁধ সংক্রান্ত অবকাঠামোগত প্রকল্প নিয়ে দেশের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করা উচিত।
চতুর্থত, নদীমাতৃক বাংলাদেশে ৫৪টি আন্ত সীমান্তবর্তী নদী ভারত থেকে এসেছে। ভারতের আন্তঃ নদীর সংযোগ প্রকল্পের অংশ হিসেবে ভারত যখন বাংলাদেশের উজানে বরাক নদীতে টিপাইমুখ সংলগ্ন স্থানে বাঁধ নির্মাণের সব প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে, বাংলাদেশে তখন এই বাঁধ নিয়ে শুরু হয়েছে তর্ক এবং কূটনৈতিক আলোচনা।
১৯৭৪-৭৫ সালে ফারাক্কা ব্যারেজ নির্মাণের পর ভারতের একচেটিয়া পানির ব্যবহারকে কেন্দ্র করে একটি চুক্তি করতে কূটনীতির আলোচনা গড়িয়েছে প্রায় ২০ বছর। বরাক নদীর ওপর প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাঁধ প্রকল্পটি ১৯৩০ দশকে আসামের কাছার উপত্যকায় ভয়াবহ বন্যা নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনায় রাখা হয় এবং ১৯৭৪ সালের বাঁধের স্থান করা হয়।
ভারতের পানি বণ্টন নিয়ে গড়িমসির পর টিপাইমুখ প্রকল্প বাংলাদেশের সুরমা এবং কুশিয়ারা নদীগুলো নাব্যতা হ্রাস, লবণাক্ততা বৃদ্ধি, মৎস্য শিল্প এবং কৃষি চাষসহ বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হবে। ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে কেনিয়ার নাইরোবিতে ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট (United Nations Environment) প্রোগ্রাম কর্তৃক আয়োজিত ড্যাম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট শীর্ষক কর্মশালায় ইন্টারন্যাশনাল ওয়াটার ম্যানেজমেন্টের কিছু অপ্রকাশিত তথ্য ব্যবহার করা হয়।
যাতে বলা হয়, টিপাইমুখ বাঁধ হলে সিলেট এবং মৌলভীবাজার জেলার জলাভূমি আগের তুলনায় গড়ে যথাক্রমে ২৬ শতাংশ ও ১১ শতাংশ কমে যাবে। তাই সেভেন সিস্টার থেকে বাংলাদেশে আসা নদীগুলোর এবং বাঁধ সংক্রান্ত অবকাঠামোগত প্রকল্প নিয়ে দেশের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং কূটনৈতিক ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রক্ষা করা উচিত।
বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বের সাতটি রাজ্যগুলোর ভৌগোলিক নৈকট্য দুই দেশের জন্যই আশীর্বাদ এবং চ্যালেঞ্জ বহুল। যেহেতু দুই দেশেরই ট্র্যাডিশনাল এবং নন ট্র্যাডিশনাল নিরাপত্তা জড়িত তাই দক্ষ কূটনৈতিক আলোচনা এবং নীতির মাধ্যমে সুষম সম্পর্কের ধারাবাহিকতা রাখা জাতীয় স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ।
অদিতি চক্রবর্তী ।। প্রভাষক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়