ছবি : সংগৃহীত

উৎসবমুখর পরিবেশ আমাদের দেশজুড়ে সবসময়ই বিরাজমান। ঈদ, পূজা, বৈশাখ, বসন্ত, শীতসহ নানা মাত্রিক আয়োজনে আমরা থাকি প্রাণবন্ত। দেশের কর্মক্ষম নারীদের বড় অংশ যারা এখন নিজেরা উদ্যোক্তা এবং তারা এই উৎসবগুলোয় সামাজিক, মানসিক ও অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ভূমিকা রাখেন।

একজন নারী উদ্যোক্তা হিসেবে এবং নারীর অগ্রযাত্রার সাক্ষী হিসেবে আমি লক্ষ্য করেছি আমাদের নারীরা এখন ‘ব্যবসায়ে সমৃদ্ধির মাধ্যমে পারিবারিক উন্নয়ন’-এর শব্দে বিশ্বাসী।

অর্থনৈতিক মুক্তির বিষয়ে উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে এবং উদ্যোক্তাদের সাপোর্ট করে যাচ্ছে। দেশের সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই অর্থনীতি গড়তে দেশে বেশিসংখ্যক উদ্যোক্তা তৈরির বিকল্প নেই।

উৎসবের মুহূর্তগুলোয়ও নারী উদ্যোক্তাদের সংগঠনগুলো জেলায় জেলায়, প্রান্তিক পর্যায়ে নারীদের স্বাবলম্বী করার জন্যও কাজ করে যাচ্ছে। উদ্যোক্তারা শুধু শহরে নয়, গ্রামেও গতিশীল, কর্মমুখর। যা অভূতপূর্ব।

উদ্যোক্তাদের প্ল্যাটফর্মে যেহেতু নারী উদ্যোক্তা বেশি, ডিজিটাল যুগে কষ্ট কমিয়ে দিচ্ছে অনলাইন শপিং সাইটগুলো। পিছিয়ে নেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকও। কম্পিউটারে ব্রাউজ করলেই ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে নিজের পছন্দমতো পোশাক, গহনা বা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।

পিছিয়ে নেই সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট ফেসবুকও। কম্পিউটারে ব্রাউজ করলেই ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে নিজের পছন্দমতো পোশাক, গহনা বা নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী।

অনলাইন শপিং শুনলেই অনেকে মনে করেন, টাকা দিতে হবে ক্রেডিট কার্ডে। তবে সেই সমস্যারও এখন সমাধান হয়েছে। বেশিরভাগ অনলাইন শপই ‘ক্যাশ অন ডেলিভারি’ সার্ভিস দিয়ে থাকে।

শুধু তাই নয়, অনলাইন সাইটগুলো দ্রুত পণ্য ঘরে পৌঁছে দিতে নিয়ে এসেছে ‘হোম অন ডেলিভারি’, ‘ফ্রি ডেলিভারি’। অনেকেই মনে করেন, এই অনলাইন শপগুলোয় ভালোমানের পণ্য পাওয়া মুশকিল।

তার সমাধান দিতে দেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তারা হাজির, এই কারণে তরুণদের চাহিদা বাড়ছে অনলাইন শপের প্রতি। স্বল্পসময়ে ঝামেলাহীন বাজারের চাহিদা মেটাতে বেশি ঝুঁকছে একক পরিবারগুলো।

নতুন পোশাক-আশাক ছাড়া যেন উৎসব অপূর্ণ থেকে যায়। শুধু পোশাকই নয়, উৎসবে ঘর সাজানো থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও কেনার প্রতি আগ্রহ দেখা যায়। উৎসব সামনে রেখে তাই বিক্রেতাদের মধ্যেও থাকে নানা আয়োজন।

অনলাইনে কেনাকাটা বাংলাদেশে যদিও এখনো মূলধারায় মিশতে পারেনি, তবে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলোয় প্রতি বছরই বাড়ছে উৎসবের কেনাকাটার হার।

নতুন পোশাক-আশাক ছাড়া যেন উৎসব অপূর্ণ থেকে যায়। শুধু পোশাকই নয়, উৎসবে ঘর সাজানো থেকে শুরু করে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতিও কেনার প্রতি আগ্রহ দেখা যায়।

আগের বছরের উৎসবগুলোর কেনাকাটার পরিমাণের সাথে পরের বছরের উৎসবগুলোর কেনাকাটার পরিমাণ তুলনা করলেই তফাত বোঝা যায়। লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে দেড় থেকে দুই গুণ। প্রতি লেনদেনে খরচ করা অর্থের পরিমাণও বাড়ছে।

ই-কমার্স ওয়েবসাইট ও বড় ব্র্যান্ডের ই-শপগুলো তাই এবারের উৎসবগুলো খুব গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। এইসব কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ ও ভূমিকাও বাড়ছে।

নারীর এই অগ্রযাত্রাকে আমি তিনভাবে দেখি—

১। নারী এখন পরিবারে স্বনির্ভরতায় বড় একটা পক্ষ;

২। নারী বিশ্বাস করছে তার আলাদা পরিচয়;

৩। ভাবনার জগতে মানুষের মননে নারীকে উৎসবে প্রাধান্য দেওয়া হতো যুগে যুগে, নারী উদ্যোক্তারা সেইটা এখন করেছেন বিশেষভাবে।

এই রকম তিনটা ভাবনার মতো, আমি উদ্যোগে সম্পৃক্ত নারী উদ্যোক্তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম। তাদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, উৎসবে নারীর সামাজিক ও অর্থনৈতিক ভূমিকা কেমন? তারা সবাই প্রায় একইসাথে বলেছেন, ‘আগে উৎসবের জন্য অপেক্ষা করতাম। নির্ভর করতাম। এখন নিজে গুছিয়ে সবকিছু করি।’

নাসিমা আক্তার নিশা ।। প্রেসিডেন্ট, ওমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই)
nishabd2012@gmail.com