রাজনীতির গ্যাঁড়াকলে অর্থনীতি
বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৭ জানুয়ারি ২০২৪। সংসদের ৩০০টি আসনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি অর্থাৎ ১৫১টি বা তার বেশি আসনে যে দল জয়ী হবে তারাই সরকার গঠন করবে। তবে, জোটগতভাবেও ১৫০টির বেশি আসন নিয়ে সরকার গঠিত হতে পারে।
নির্বাচিত প্রতিনিধিরা পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হবেন। তবে আশঙ্কা হচ্ছে, যারাই সরকার গঠন করুক না কেন নির্বাচনী বছর বা তৎপরবর্তী কয়েকটি বছরে তাদের কঠিন আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।
বিজ্ঞাপন
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি এমন একটি সময়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে যখন আমাদের অর্থনীতিতে দৃশ্যমান সংকট বিদ্যমান। দীর্ঘস্থায়ী কোভিড-১৯ বৈশ্বিক অতিমারির মহা বিপর্যয় কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ব্যাপকতার কারণে আমাদের চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরটি শুরুই হয়েছিল কতগুলো নেতিবাচক কিন্তু স্পর্শকাতর অর্থনৈতিক সূচক নিয়ে। তার সাথে আরও যুক্ত হয়েছে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের বৈশ্বিক খারাপ প্রভাব।
আরও পড়ুন
অর্থনীতির জন্য নেতিবাচক এই সূচকগুলো এখনো বর্তমান এবং অচিরেই এগুলোর ভালো অবস্থায় ফিরে আসার তেমন কোনো উজ্জ্বল সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না। বরং তা আরও গভীর ও দীর্ঘায়িত হচ্ছে। মূল্যস্ফীতির আস্ফালন, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ হ্রাস, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংকট, মুদ্রা পাচার, কর আহরণে স্বল্পতা, রেমিট্যান্স ও বাণিজ্যে ঘাটতি ইত্যাদি আরও প্রকট হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফের মতো আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ ২০২৩ এবং তৎপরবর্তী সময়ে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে আর্থিক মন্দা ও খাদ্য সংকটের পূর্বাভাস দিয়েছে। আমাদের সরকারও দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করে সব ক্ষেত্রে কৃচ্ছ্রতার ওপর জোর দিয়েছে।
মুদ্রা পাচার, রেমিট্যান্স হ্রাস ও বাণিজ্যে ঘাটতি প্রকট হওয়ায় ভাণ্ডারে বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ এখন তলানিতে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে (বিপিএম ৬ অনুযায়ী) ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল ২০.৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে সরকার আইএমএফের কাছ থেকে শর্ত সাপেক্ষে ৪.৭০ বিলিয়ন ডলারের ঋণ নিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বছরের শুরুতেই ৪৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রথম কিস্তি ঋণ পেলেও দ্বিতীয় কিস্তি পাওয়ার তথ্য এখনো প্রকাশিত হয়নি যা নভেম্বরে পাওয়ার কথা ছিল। শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে ঋণের কিস্তি আটকেও যেতে পারে। অর্থনীতি এখন আইএমএফের শর্তের গ্যাঁড়াকলে। এরই মধ্যে নির্বাচন ঘিরে আন্দোলন ও সহিংসতার ডামাডোল শুরু হয়েছে। আর এই রাজনৈতিক হরতাল-অবরোধ অর্থনীতিকে আরও পঙ্গু করছে।
বিদেশি বিনিয়োগ! দেশীয় বিনিয়োগকারীরাই যখন আস্থার সংকটে রয়েছে তখন অস্থিতিশীল পরিবেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ দেখাবে না এটাই স্বাভাবিক।
চলমান মূল্যস্ফীতির নাকালের মাঝে জনজীবন বিপর্যস্ত। চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাজেটে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতির হার ৬ শতাংশে প্রাক্কলন করা হলেও সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় তা ধরে রাখা কখনোই সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯.৯৩ শতাংশ। যদিও, অবরোধের কারণে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে এসেছে। খাদ্য দ্রব্যের দাম কমায় মূল্যস্ফীতির হার কিছুটা কমে নভেম্বরে (পয়েন্ট টু পয়েন্ট) ৯.৪৯ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বছরের শেষ সময়েও রেমিট্যান্স প্রবাহে তেমন উন্নতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে সেপ্টেম্বরের তুলনায় অক্টোবরে ভালো হলেও নভেম্বরে আবার রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে দাঁড়িয়েছে ১৯৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে যা এর পূর্ববর্তী মাসের তুলনায় ৪১.৩৯ মিলিয়ন ডলার কম। ব্যাংক নির্ধারিত বিনিময় হারের চেয়ে হুন্ডি কিংবা অন্যান্য উপায়ে ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার বেশি হওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকিং খাতে বৈদেশিক অর্থ পাঠাতে কম উৎসাহ দেখাচ্ছে। তাছাড়া, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অনেকে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে সাহস পাচ্ছে না।
আর, বিদেশি বিনিয়োগ! দেশীয় বিনিয়োগকারীরাই যখন আস্থার সংকটে রয়েছে তখন অস্থিতিশীল পরিবেশে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা উৎসাহ দেখাবে না এটাই স্বাভাবিক। ডেইলি স্টারের তথ্যমতে, দীর্ঘস্থায়ী আস্থার সংকট, স্থানীয় মুদ্রার মূল্যের তীব্র পতন এবং ফ্লোর প্রাইজ প্রবর্তনের কারণে পাঁচ বছরে বাংলাদেশের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
আরও পড়ুন
বিদেশি কোম্পানি এবং ব্যক্তিদের বিনিয়োগ ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে ছিল ২.৩৩ বিলিয়ন ডলার যা পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় ২০.৮ শতাংশ কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে এটি ছিল ৪.৫ বিলিয়ন ডলারে। বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার তথ্যমতে, বর্তমান ক্যালেন্ডার বছরে অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ মোট ৯০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী চেয়ারম্যান সম্প্রতি এই কথা বলেন।
হরতাল-অবরোধে পণ্য পরিবহন বাধা প্রাপ্ত হওয়ায় উৎপাদনও বিঘ্নিত হচ্ছে। স্থানীয় বাজারমুখী শিল্পের পাশাপাশি রপ্তানিমুখী শিল্পের অস্তিত্বও হুমকির সম্মুখীন। আমাদের রপ্তানি রেমিট্যান্সের অন্যতম উৎস হচ্ছে তৈরি পোশাক খাত। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিদেশি ফরমায়েশ কমতে শুরু করেছে।
চলতি অর্থবছরে এই খাতের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৫ হাজার ২২৭ কোটি মার্কিন ডলার। আর, মোট রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ৬ হাজার ২০০ কোটি ডলার। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে—বৈশ্বিক সংকট, শ্রমিক আন্দোলন ও শেষমেশ রাজনৈতিক হরতাল-অবরোধের ত্রিমুখী চাপের মুখে পড়েছে খাতটি।
সংশ্লিষ্টদের মতে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর এই ৩ মাসে বিদেশি ক্রেতারা সাধারণত নতুন পণ্যের ফরমায়েশ দিয়ে থাকেন। বৈশ্বিক সংকটে চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের রপ্তানি কমেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে ১৪৪ কোটি মার্কিন ডলার। রাজনৈতিক হরতাল-অবরোধে এই শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে বেকারত্ব বাড়বে। শ্রমিকরা পড়বে সীমাহীন দুর্ভোগে। আর এই অজুহাতে ব্যাংকিং খাতের ঋণ আহরণে আসবে ধীরগতি ও খেলাপি ঋণে আসবে ঊর্ধ্বগতি।
অর্থনীতি সচল ও শক্তিশালী না হলে মানুষের সুন্দর স্বপ্নগুলো কখনোই পূরণ হবে না। এটা সত্য যে, এক দশকে অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তবে, একই সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দৌরাত্ম্যের।
বছরের শেষ ভাগে এসে অবরোধ-হরতাল ও সহিংস রাজনীতির দুর্বিপাকে কৃষি খাতও। শীত মৌসুমে কৃষকরা তাদের কষ্টার্জিত সবজির ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলে আগামী মৌসুমের কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে। আর, আগামীতে খাদ্য দ্রব্যের ঘাটতি দেখা দিলে তার ফল হবে খুবই মারাত্মক। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় শিল্প ও কৃষি উভয় খাতই যদি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে, বাজেটে প্রস্তাবিত জিডিপির প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্জন প্রায় অসম্ভব।
শুধু জিডিপি নয়, প্রস্তাবিত কর আহরণও ব্যর্থ হবে। সরকারি ব্যয়ের প্রধান অর্থের উৎস হচ্ছে রাজস্ব। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকার ৫ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, যা গত অর্থবছরের তুলনায় প্রায় ৬৭ হাজার কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এর মাধ্যমে কর সংগ্রহ হবে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা।
আরও পড়ুন
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সূত্রমতে, আর্থিক গতি মন্থরতার কারণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে আয়কর বাড়ানোর জন্য একাধিক উদ্যোগ নেওয়া সত্ত্বেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৯,১৮০ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছিল। আর এই বছর রাজনৈতিক হরতাল-অবরোধের কারণে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো কখনোই সম্ভব হবে না। রাজস্ব আহরণে ঘাটতি হলে বাজেটে টান বাড়বে। এই ঘাটতি মেটাতে সরকার হয় অতিরিক্ত ঋণ করবে, না হয় খরচ নিয়ন্ত্রণ করবে। দুটোই অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকারক।
রাজনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের মাধ্যমে দেশের আপামর জনগণের জীবনযাত্রা মানের উন্নয়ন। আর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য দরকার একটি উপযোগী কর্ম পরিবেশ। শিল্প, ব্যবসা, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ অন্যান্য পরিসেবার সব ক্ষেত্রেই উন্নয়নের পূর্ব শর্তই হচ্ছে একটি টেকসই নিরাপদ ও স্বস্তির পরিমণ্ডল। রাজনৈতিক হরতাল-অবরোধ প্রলম্বিত হলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে ও জনগণের আর্থিক নিরাপত্তা ব্যাপকভাবে বিঘ্নিত হবে। সাথে সাথে রাষ্ট্রীয় সক্ষমতাও পড়বে চ্যালেঞ্জের মুখে।
রাজনৈতিক দলগুলোর মনে রাখা উচিত, রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের গ্যাঁড়াকলে অর্থনীতি বিপর্যস্ত হলে তার ভবিষ্যৎ হয় অন্ধকারাচ্ছন্ন। অসাধু ও ধান্দাবাজ লোকজন রাজনৈতিক অস্থিরতার ফায়দা লুটে নেয় বিভিন্ন কৌশলে। আর, সাধারণ জনগণকে দিতে হয় তার চরম খেসারত। এমনকি, রাজনৈতিক সহিংসতায় পড়ে অনেককে প্রাণ দিতে হয় অকাতরে।
যখন খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখে, উন্নয়ন ও অগ্রগতি স্বপ্ন দেখে, সমৃদ্ধির স্বপ্ন দেখে, ভালোভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে, হাসি ও আনন্দে জীবনের গল্প রচনার স্বপ্ন দেখে, সর্বোপরি একটি সোনার বাংলা বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখে, তখনই রাজনৈতিক সহিংসতা, হরতাল বা অবরোধ এইসব ছোট ছোট স্বপ্নগুলো ভেঙে চুরমার করে দেয়। জীবন হারানো, সহায়-সম্বল হারানো, স্বপ্ন হারানোর শঙ্কা মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। অশান্তি ও অনিশ্চয়তায় জীবন ও অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে।
অর্থনীতি সচল ও শক্তিশালী না হলে মানুষের সুন্দর স্বপ্নগুলো কখনোই পূরণ হবে না। এটা সত্য যে, এক দশকে অর্থনীতিতে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। তবে, একই সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতাশীল রাজনৈতিক দৌরাত্ম্যের। দুর্নীতির কারণে উন্নয়ন কার্যক্রমে সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
একদিকে যেমন সরকারকে অতিরিক্ত অর্থ পরিশোধের চাপ সামলাতে হচ্ছে, আবার অন্যদিকে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় মূল্যস্ফীতিকে উসকে দিচ্ছে। তাছাড়া, দুর্নীতির অর্থ মুষ্টিমেয় গোষ্ঠী বা ব্যক্তির কাছে পুঞ্জীভূত হচ্ছে। আর পুঞ্জিভূত অর্থই বৈদেশিক মুদ্রায় অবৈধ উপায়ে পাচার হচ্ছে বিদেশে। ফলশ্রুতিতে, আমাদের ক্রয় ক্ষমতা সংকুচিত হচ্ছে এবং বৈদেশিক মুদ্রা মজুদে টান পড়ছে।
তাই, শাসকদলেরও উচিত রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, নিরপেক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। এগুলো সুনিশ্চিত হলে অর্থনীতিতে অপচয়, দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দৌরাত্ম্য অনেকটাই রোধ করা যাবে।
আমাদের মনে রাখতে হবে, যারাই রাষ্ট্র পরিচালনায় আসুক না কেন বর্তমান বৈশ্বিক আর্থিক সংকট চলমান থাকা অবস্থায় একটি ভঙ্গুর অর্থনীতিকে মেরামত করে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়া খুবই দুরূহ ব্যাপার হবে। তাই, রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত দলীয় স্বার্থে অর্থনীতিকে জিম্মি না করে রাজনীতির গ্যাঁড়াকল থেকে মুক্ত করে দেওয়া। এতেই আপামর জনগণ হাঁফ ছেড়ে বাঁচবে। জীবন ও অর্থনীতি চলবে তাদের নিজস্ব গতিতে। আর, আমরা লিখতে থাকবো উন্নয়নের নতুন গল্প।
নীলাঞ্জন কুমার সাহা ।। ডিন, ফ্যাকাল্টি অব বিজনেস স্টাডিজ ও অধ্যাপক, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়