ছবি : সংগৃহীত

এই আমার বাংলাদেশ। এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। দেশে গোছানোর তাগিয়ে ১৯৮১-তে বঙ্গবন্ধুকন্যা যখন ফিরে এলেন। ১৯৯৬-এ প্রথমবারের মতো দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেন। সেই থেকে শুরু হয় উন্নয়নের পদযাত্রা।

একসময় পদ্মা পাড়ি দিতে রাত পোহাতে হতো। এখন উত্তাল পদ্মাও হাতে মুঠোয়। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু আজ সারা পৃথিবীর জন্য মাইলফলক।

শুধু পদ্মা সেতুই নয়, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, উড়াল সড়ক, মেরিন ড্রাইভসহ উন্নত দেশগুলোর মতো সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থার নেটওয়ার্কে আজ বাংলাদেশ। ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল, যা বাণিজ্যিক যোগাযোগের নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

মানুষকে নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশীদারিত্বে ১৪ হাজারেরও বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছেন।

বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিকভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্বকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিয়েছে।

স্বাস্থ্য সেবার পাশাপাশি দলিত সম্প্রদায়, গৃহহীন, আশ্রয়হীন, অসহায়, দরিদ্র মানুষের জন্য থাকার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্রয়ণ প্রকল্প গড়ে তোলেন।

১৯৯৭ সালে শুরু করেন গৃহহীনদের জন্য বাসস্থান তৈরির উদ্যোগ। ‘আশ্রয়ণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভূমিহীন-গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষকে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের আওতায় আনছেন।

এছাড়া বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা মহিলা ভাতাও অসহায় নারীদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। শুরুতেই জনপ্রতি মাসিক ভাতার পরিমাণ ছিল ৩০০ টাকা। বর্তমানে তা ৫৫০ টাকা করা হয়েছে এবং তা আরও সহজ হয়েছে।

মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস প্রোভাইডার নগদ ও বিকাশ এবং এজেন্ট ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে সবার কাছে ভাতা চলে যাচ্ছে। এই অসাধারণ উদ্যোগ সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে।

বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের কথা সবারই জানা। ঠিক সেই সময়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১০ লাখ রোহিঙ্গা নতুন করে আশ্রয় দিয়েছেন বাংলাদেশের মাটিতে। পৃথিবীর ইতিহাসে এ যেন বিরল ঘটনা।

যখন পৃথিবী থেকে মানবিকতা উঠে যাচ্ছে সেই সময় মমতাময়ী জননী যেন মায়ের ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিলেন। তাদের সব সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করলেন এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে জোর দিলেন।

৬৮ বছরের বন্দিদশা জীবন থেকে মুক্তি লাভ করেছে হাজারও ছিটমহলবাসী। সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কল্যাণে। ছিটমহল বাসীরা কখনো ভাবতে পারেনি তারা নাগরিক সুবিধা পাবে, তারা ধরে নিয়েছিল এটাই তাদের দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের দুঃখে সমব্যথী হয়ে সমাধানে মনযোগী হলেন।

একদিকে যেমন একের পর এক মানবিক কাজে এগিয়ে এসেছেন পাশাপাশি সমুদ্র সীমা নির্ধারণেও উদ্যোগী হয়েছেন। ভারত ও মিয়ানমারের দিকে আমাদের সমুদ্র সংযোগস্থলের কোনো সীমানা নির্ধারিত ছিল না।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে ২০১২ সালে মিয়ানমার এবং ২০১৪ সালে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমানা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ ও নিষ্পত্তি করে। নতুন করে উন্মোচিত হলো সমুদ্র অর্থনীতি বা ব্লু-ইকোনমি।

প্রযুক্তিগতভাবেও দেশ আজ কতটা এগিয়েছে তা বলে বোঝানো অসম্ভব। অনলাইন ব্যাংকিং, ডিজিটাল সেবা, ডিজিটাল পেমেন্ট, ডিজিটাল কেনাকাটা এইসব সুবিধার মাধ্যমে আমরা আজ উন্নত বিশ্বের অবস্থানে। সবই সম্ভব হয়েছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কল্যাণে।

আমাদের সবার বিশ্বাস শেখ হাসিনার হাতে থাকলে পথ হারাবে না বাংলাদেশে।

নান্টু রায় ।। রাজনীতিক