বঙ্গবন্ধুর কলকাতা কথা : মহাজীবনের নির্মাণ ইতিহাস
পৃথিবীর রাজনৈতিক ইতিহাসে বঙ্গবন্ধুর আবির্ভাব এক বৈপ্লবিক আত্মপ্রকাশ। একটা দেশের জন্ম দেওয়া একজন নেতার একক কৃতিত্ব পৃথিবীর ইতিহাসে প্রায় দুর্লভ। এই অসম্ভবকে সম্ভব করার পেছনে কারণ বর্ণনা করে প্রচুর শব্দ লেখা হয়েছে ইতিমধ্যে। কিন্তু তার রাজনৈতিক নেতা হয়ে ওঠার নির্মাণ কাহিনিতে কলকাতার অবদান যে মুখ্য তা অনেক সময় আড়ালেই থেকে যায়।
যেকোনো নেতার রাজনৈতিক জীবন গড়ে ওঠার সময় তার ছাত্রাবস্থার শেষ কয়েক বৎসর। এই সময়েই ভিত তৈরি হয়। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক ভিত গড়ে দিয়েছিল কলকাতা। এই কথা তার আত্মজীবনীতে পরিস্ফুট। এই বিষয়ে আলোচনা করতে হলে বঙ্গবন্ধুর কলকাতা বাসের কিছু অংশ আমাদের একবার মনে করে নিতে হবে।
বিজ্ঞাপন
সেই সময়ের কলকাতা তখন সমগ্র পূর্ব ভারতের নিয়ন্ত্রক ছিল। গোপালগঞ্জে বড় হয়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুর প্রথম কলকাতায় আগমন ১৯৩৪ সালে। তার বয়স তখন ১৪ বছর। তিনি তখন গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। এই সময়ে তিনি বেরিবেরি রোগে আক্রান্ত হন। কলকাতায় তার চিকিৎসা হলো। ১৯৩৬ সালে বঙ্গবন্ধু আক্রান্ত হলেন গ্লুকোমায়। কলকাতা মেডিকেল কলেজে তার চোখের অপারেশন হলো।
আরও পড়ুন >>> বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভুবন বিজয়ী ভাষণ
১৯৩৮ সালে গোপালগঞ্জে অখণ্ড বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক ও শ্রমমন্ত্রী হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী এলেন। আলাপ হলো বঙ্গবন্ধুর সাথে। কিছুদিনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু চিঠি পেলেন শহীদ সাহেবের কাছ থেকে। তাতে লেখা—কলকাতা গেলে যেন বঙ্গবন্ধু তার সাথে দেখা করেন। সেই ছিল রাজ্যাভিষেকের প্রথম আহ্বান।
১৯৩৯ সালে বঙ্গবন্ধু কলকাতা আসেন বেড়াতে। শহীদ সাহেবের সাথে দেখা করেন। শহীদ সাহেবের পরামর্শে ফিরে গিয়ে বঙ্গবন্ধু গোপালগঞ্জে গঠন করেন মুসলিম ছাত্রলীগ। তিনি সম্পাদক হলেন। এছাড়া বঙ্গবন্ধুর উৎসাহে গঠিত হলো মুসলিম লীগ।
১৯৪১ সালের মাঝামাঝি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার পরে রেজাল্ট বেরোতেই চলে এলেন কলকাতায়। এবার এলেন ছাত্র হিসেবে বসবাস করার জন্যে। বঙ্গবন্ধু কলকাতায় এসে ভর্তি হন তৎকালীন ইসলামিয়া বর্তমানের মৌলানা আজাদ কলেজে। থাকতে শুরু করেন বেকার হোস্টেলে। সেই সময় হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী অখণ্ড বাংলার শ্রমমন্ত্রী।
গোপালগঞ্জে বড় হয়ে ওঠা বঙ্গবন্ধুর প্রথম কলকাতায় আগমন ১৯৩৪ সালে। তার বয়স তখন ১৪ বছর। তিনি তখন গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।
বঙ্গবন্ধু কলকাতায় আসার পরে তার রাজনৈতিক শিক্ষাগুরু হয়ে ওঠেন তিনি। বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ে লিখছেন, ‘আমি ছিলাম শহীদ সাহেবের ভক্ত। ...তিনি যে সত্যি আমাকে ভালবাসতেন ও স্নেহ করতেন, তার প্রমাণ আমি পেয়েছি তাঁর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করার দিন পর্যন্ত।’
শহীদ সাহেবের নির্দেশে তরুণ বঙ্গবন্ধু ছুটে বেড়াচ্ছেন সারা বাংলায়। প্রাদেশিক নির্বাচন, দলীয় সম্মেলন বা জিন্নাহ সাহেবের আগমন, সব ক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধু কাণ্ডারি। ইসলামিয়া কলেজেও খুবই জনপ্রিয় ছাত্র নেতা। ১৯৪২ ও ১৯৪৩ সালে ছাত্র নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ও তার পরের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হলো তার দল।
আরও পড়ুন >>> স্বাধীনতা: বাঙালির ঐতিহ্যের নবায়ন
১৯৪৩ সালে শুরু হলো বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। এই সময় বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য হলেন। সেই সময় অখণ্ড বাঙলার প্রধানমন্ত্রী হলেন খাজা নাজিমুদ্দিন। সিভিল সাপ্লাই মন্ত্রী হলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। দুর্ভিক্ষের কারণে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়াবহ পরিস্থিতি।
বঙ্গবন্ধু শহীদ সাহেবকে অনুরোধ করে ‘কন্ট্রোল’ দোকান খোলালেন। গ্রামে গ্রামে লঙ্গরখানা। বঙ্গবন্ধু ঝাঁপিয়ে পড়লেন পীড়িতদের সেবায়। ইতিমধ্যে তিনি ডাক পেলেন দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ সম্মেলন’-এ। গেলেন দিল্লিতে। নেতাদের বেশিরভাগ উর্দুতে বক্তৃতা দিলেন। খুব ভালো লাগল না বঙ্গবন্ধুর। তবু থাকলেন, দেখলেন। সম্মেলন শেষ হতেই ফিরে এলেন কলকাতায়।
১৯৪৪ সালে বাংলায় লীগ সরকারের পতন হলো। এরমধ্যে ইসলামিয়া কলেজে দলাদলির কারণে বঙ্গবন্ধুকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তার নির্বাচন হয়েছে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ১৯৪৫ সালে ঘোষণা হলো যে ১৯৪৬ এর মার্চে নির্বাচন হবে। ভারতের মুসলমানরা পাকিস্তান চায় কি চায় না তা নির্ধারণ করতে।
১৯৪৬ এর নির্বাচনে স্পষ্ট রায় এলো পাকিস্তান সৃষ্টির পক্ষে। শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রী হলেন। সেই বছর এপ্রিলের শুরুতে জিন্নাহ সাহেব মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সদস্যদের সম্মেলন ডাকলেন। বঙ্গবন্ধু স্পেশাল ট্রেনে শহীদ সাহেবের সাথে দিল্লি পৌঁছলেন। সেই সম্মেলনের পরে আজমীর শরীফ ও আগ্রা দেখে কলকাতা ফিরলেন বঙ্গবন্ধু।
জিন্নাহ সাহেব ১৯৪৬ সালের ১৬ আগস্ট ঘোষণা করলেন ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে। সেইদিন তুমুল দাঙ্গা হলো কলকাতায়। তারপরে নোয়াখালীতে, তারপরে বিহারে। বঙ্গবন্ধু প্রথমে গেলেন বিহারে, তারপরে আসানসোলে এসে দুর্গতদের সেবা করলেন। কলকাতা ফিরলেন দেড় মাস পরে। কিছুটা অসুস্থ শরীরে। কিন্তু পড়াশোনার কারণে আত্মগোপন করলেন বাল্যবন্ধু শেখ শাহাদাত হোসেনের হাওড়ার বাসায়।
আরও পড়ুন >>> সূর্যোদয়ের বঙ্গবন্ধু
১৯৪৭ সালে বঙ্গবন্ধু পরীক্ষা দিলেন। ১৯৪৭ সালে জুনে ঘোষণা হলো ভারত ভাগ হবে। বঙ্গবন্ধু গেলেন সিলেটে গণভোট করতে। ফিরে এসে দেখলেন ক্ষমতার লোভে নেতারা দলাদলি শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে রেজাল্ট বেরোল। বঙ্গবন্ধু স্নাতক হলেন। বঙ্গবন্ধু পূর্বপাকিস্তানে ফিরলেন ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বরে। ভর্তি হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে। এই মোটামুটি বঙ্গবন্ধুর কলকাতা বসবাসের ইতিহাস।
বঙ্গবন্ধু স্পেশাল ট্রেনে শহীদ সাহেবের সাথে দিল্লি পৌঁছলেন। আলাপ হলো জিন্নাহ সাহেবের সাথে। এই প্রাপ্তি তার অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা সঞ্চার করল।
বঙ্গবন্ধুর কলকাতাবাস প্রসঙ্গ অবতারণার পূর্বে স্বীকার করে নেওয়া ভালো যে বঙ্গবন্ধুর স্বাভাবিক নেতৃত্বগুণ বাল্যকাল থেকেই ছিল। এই গুণ দ্রুত পরিস্ফুট হয়েছিল দুটি কারণে।
প্রথমত অসুস্থতার জন্যে তার শিক্ষার তিনটি বছর নষ্ট হওয়ায় বঙ্গবন্ধু সহপাঠীদের চেয়ে বয়েসে বড় ছিলেন। স্বভাবতই ক্লাসের নেতৃত্ব তার হাতে বর্তেছিল।
দ্বিতীয়ত তার শিক্ষিত পিতা শেখ লুৎফর রহমান কখনই তাকে গণ্ডিবদ্ধ করতে চাননি। সবসময় তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসাহিত করেছেন, আলোচনা করেছেন এবং অর্থ জুগিয়েছেন।
কাজেই এমন পরিমণ্ডল থেকে উঠে আসা তরুণের দরকার ছিল বড় একটি মঞ্চ ও জাতীয় রাজনীতি সম্পর্কে হাতেকলমে বাস্তব জ্ঞানলাভ। এই দুটি ক্ষেত্রে কলকাতা শহর ও শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সাহচর্য তাকে সমৃদ্ধ করল। ইসলামিয়া কলেজে জনপ্রিয়তা লাভ এবং নির্বাচনে জয়ী হওয়া খুব বড় কীর্তি নয়। কিন্তু ছাত্র সংগঠনের নেতা যখন মূল সংগঠনের নেতৃত্ব লাভ করে সেটা অবশ্যই বিরাট কৃতিত্বের বিষয়। বঙ্গবন্ধু প্রাদেশিক মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য হন ১৯৪৩ সালে।
আরও পড়ুন >>> বঙ্গবন্ধুর ভাষ্যে বাঙালি সংস্কৃতি
এই সদস্য প্রাপ্তির কারণে বঙ্গবন্ধু ডাক পেলেন দিল্লিতে অনুষ্ঠিতব্য ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ সম্মেলন’-এ। এখানে তার অভিষেক ঘটল সর্বভারতীয় রাজনীতিতে। এরপরে ১৯৪৬ সালে এপ্রিলের শুরুতে জিন্নাহ সাহেব মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সদস্যদের সম্মেলন ডাকলেন। বঙ্গবন্ধু স্পেশাল ট্রেনে শহীদ সাহেবের সাথে দিল্লি পৌঁছলেন। আলাপ হলো জিন্নাহ সাহেবের সাথে। এই প্রাপ্তি তার অভিজ্ঞতায় নতুন মাত্রা সঞ্চার করল।
১৬ আগস্ট ১৯৪৬, ডাইরেক্ট অ্যাকশন ডে-তে যে তুমুল দাঙ্গা হয়েছিল কলকাতায়। তৎকালীন হিন্দু ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক নেতারা দায়ী করেছিলেন মুসলিম লীগকে এবং মুসলিম শ্রুতি লেখকরা দায়ী করেছিলেন হিন্দু মহাসভাকে। কিন্তু এই ঘটনা নিয়ে আশ্চর্যজনকভাবে প্রায় অনেকটাই সঠিক আন্দাজ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
তিনি এই কুখ্যাত দাঙ্গা সম্পর্কে যে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তা হলো দাঙ্গার প্ররোচনা ও সূত্রপাত ঘটায় কংগ্রেস এবং প্রসার ঘটে মুসলিম লীগের প্ররোচনায়। বঙ্গবন্ধু হিন্দু মহাসভার শক্তির সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে সঠিক আন্দাজ করে বলেন যে এর পেছনে জনৈক বিখ্যাত বাঙালি কংগ্রেস নেতার সূক্ষ্ম চাল ছিল। বর্তমানে পুলিশ আর্কাইভে রক্ষিত তথ্যভাণ্ডার থেকে স্পষ্ট যে বঙ্গবন্ধুর আন্দাজ নির্ভুল ছিল। এই ঘটনা প্রমাণ করে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক প্রজ্ঞা। (মহানির্মাণ, অমিত গোস্বামী, অন্বেষা প্রকাশ, ঢাকা)
বক্তৃতার এই কৌশল তিনি শিখেছেন শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের কাছ থেকে, শিখেছেন মহাত্মা গান্ধীর কাছ থেকে। অসাম্প্রদায়িকতার ও শৌর্যের শিক্ষা তিনি আরও পেয়েছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর কাছ থেকে।
বঙ্গবন্ধু তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’তে লিখেছেন, ‘আমি খুব রাগী ও একগুঁয়ে ছিলাম, কিছু বললে কড়া কথা বলে দিতাম। কারও বেশি ধার ধারতাম না। ...পূর্বে আমার দোষ ছিল, সোজাসুজি আক্রমণ করে বক্তৃতা করতাম। তার ফল বেশি ভাল হত না। উপকার করার চেয়ে অপকারই হত বেশি।’
আরও পড়ুন >>> বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি
নিজের বক্তৃতায় এই পরিবর্তন তিনি এনেছিলেন ছাত্রাবস্থায়। যার ফলশ্রুতি তার ৭ মার্চ ১৯৭১ এর ঐতিহাসিক ভাষণ যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার সনদ। বক্তৃতার এই কৌশল তিনি শিখেছেন শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হকের কাছ থেকে, শিখেছেন মহাত্মা গান্ধীর কাছ থেকে। অসাম্প্রদায়িকতার ও শৌর্যের শিক্ষা তিনি আরও পেয়েছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর কাছ থেকে। তিনি বারেবারে কথাটা স্বীকার করেছেন।
খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে মুজিবের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের রূপরেখা তৈরি হয়েছিল কলকাতায়। তিনি স্বাভাবিক নেতৃত্ব গুণ নিয়ে জন্মেছিলেন ঠিকই। কিন্তু রাষ্ট্রনায়ক হওয়ার তালিম পেয়েছিলেন তার কলকাতার জীবনেই। বঙ্গবন্ধুর মূল শিক্ষা হয়েছিল হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর কাছে।
কলকাতায় থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু আত্মপ্রকাশের যে বৃহৎ মঞ্চ পেয়েছিলেন তা অন্য কোনো শহরে থাকলে পেতেন না। সুযোগ পেতেন না পাদপ্রদীপের আলোয় আসার। তিনি সারা জীবন ছিলেন আপসহীন। বঙ্গবন্ধু ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইয়ে এক জায়গায় আক্ষেপ করেছেন তার বাড়ি যেহেতু পাকিস্তানে, কাজেই তাকে তো যেতে হবেই। তিনি কলকাতা ছেড়ে যাবেন এই অনুভূতি তার পক্ষে কষ্টকর ছিল।
বঙ্গবন্ধু কী চেয়েছিলেন? তিনি চেয়েছিলেন স্বাধীন অখণ্ড বাংলা যার রাজধানী হবে কলকাতা। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলে বোঝা যায় যে অখণ্ড বাংলা যদি সৃষ্টি হতো, বহু আগেই তিনি রাষ্ট্রনায়ক হয়ে যেতেন। এপার বাংলায় তার যে জনপ্রিয়তা ছিল তা বিস্ময়কর।
আরও পড়ুন >>> বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাংলাদেশ
১৯৪৪ সালে ছাত্রলীগের বাৎসরিক সম্মেলন নিয়ে গোলমাল বাধে। এই প্রসঙ্গে তিনি লিখছেন, ‘ভীষণ চিৎকার শুরু হল, আমরা দেখলাম মারপিট হবার সম্ভাবনা আছে। কয়েকজন বসে পরামর্শ করে আমাদের সমর্থকদের নিয়ে সভা ত্যাগ করলাম প্রতিবাদ করে। ...তবে কলকাতায় এদের কোন সভা করতে দেব না। কলকাতা মুসলিম ছাত্রলীগের নামে আমরাই কাজ করে যেতে লাগলাম। অল বেঙ্গল নেতাদের কোন স্থান ছিল না।’
এই থেকে বোঝা যায় কলকাতা বঙ্গবন্ধুর কতটা দখলে ছিল। কলকাতা বঙ্গবন্ধুকে তার শহরবাসের প্রতিদিন গড়েপিটে বড় করেছে। তাই রাষ্ট্রনায়ক শেখ মুজিবুর রহমানকে কলকাতা যদি তার আত্মজ বলে দাবি করে অত্যুক্তি হবে কি?
অমিত গোস্বামী ।। কবি ও কথাসাহিত্যিক