তুরস্কে ভূমিকম্প : যে ক্ষতি অসহনীয়
স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে তুরস্ক ও সিরিয়া। দুই দেশে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ৯ জানুয়ারি ২০২৩, একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালন করেছে বাংলাদেশ।
তুরস্কে ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল
তুরস্কে প্রথম ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ভূ-প্রাকৃতিক দিক থেকে অস্থিতিশীল এক অঞ্চলে। এখানে রয়েছে পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্ট (চ্যুতি)। তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তের দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে উত্তর-পশ্চিম বরাবর এই ফল্টের অবস্থান। পূর্ব আনাতোলিয়ান ফল্টকে বহু আগে থেকেই খুবই বিপজ্জনক উল্লেখ করে সতর্ক করে আসছিলেন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা।
বিজ্ঞাপন
‘তুরস্ক-সিরিয়ার মতো বাংলাদেশও ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। তেমনি বাংলাদেশের মূল ভূ-ভাগসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় এই রকম মোটামুটি ৫টি চ্যুতি (ফল্ট) আছে বলে’—জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক (The Great Indian Earthquake of 1897)
বাংলাদেশ ও ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ফল্টে ১৮৯৭ সালে ৮ দশমিক ১ মাত্রার ‘দ্য গ্রেট ইন্ডিয়ান আর্থকোয়েক’ নামে সর্বাধিক পরিচিত আসাম ভূমিকম্প হয়েছিল। এই ভূমিকম্পের ফলে এক হাজার ৫৪২ জনের মৃত্যু, রেললাইন বেঁকে যাওয়া এবং ব্রহ্মপুত্র নদের গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছিল।
ভূমিকম্পে বাংলাদেশের প্রস্তুতি
ভূমিকম্পের বিষয়ে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব বাংলাদেশে, যেকোনো সময় বড় ধরনের ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও ভূমিকম্প মোকাবিলায় তেমন কোনো প্রস্তুতি নেই বললেই চলে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্কের মতো বড় ভূমিকম্প এদেশে হলে উদ্ধার কাজ পরিচালনা করাই হবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। তারা বলছেন, রাজধানী ঢাকার মতো বড় শহরগুলোয় যে পরিমাণ বহুতল ভবন গড়ে উঠেছে তাতে ভূমিকম্পে এসব ভবন ধসে পড়লে শহরগুলো যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। যার কারণে ব্যাহত হবে উদ্ধার কাজ।
আরও পড়ুন >>> তুরস্কে ভূমিকম্প : যে শিক্ষা নিতে পারে বাংলাদেশ
সরকার বলছে, ভূমিকম্প মোকাবিলার জন্য চীনের সহায়তায় ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও তার কাজ চলছে ধীর গতিতে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তুরস্কসহ অন্যান্য দেশের ভূমিকম্পের পর তাদের থেকে শিক্ষা নিয়ে অবিলম্বে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নেওয়া উচিত বাংলাদেশের। কারণ ভূমিকম্পের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ।
ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ভূতাত্ত্বিক কাঠামো অনুযায়ী ভূমিকম্পের জন্য দায়ী বেশ কয়েকটি প্লেট ও সাব-প্লেটের ওপর বাংলাদেশের অবস্থান হওয়ার কারণে যেকোনো মুহূর্তে বাংলাদেশে ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে। উত্তরে তিব্বত প্লেট, পূর্বে বার্মা সাব-প্লেট এবং পশ্চিমে ইন্ডিয়া প্লেট। এগুলোর বিস্তৃতি সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার। এই জোনে বড় বড় ভূমিকম্প হয়েছে।
‘তুরস্ক-সিরিয়ার মতো বাংলাদেশও ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। তেমনি বাংলাদেশের মূল ভূ-ভাগসহ সীমান্তবর্তী এলাকায় এই রকম মোটামুটি ৫টি চ্যুতি (ফল্ট) আছে বলে’—জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
এসব ভূমিকম্প সাত বা আট মাত্রা বা তারও বেশি হবে। দু-তিন বছরে দেশে ভূমিকম্প অনেক বেড়েছে। আবার ১০০ বছরের মধ্যে আমাদের এখানে তেমন বড় ভূমিকম্প হয়নি। ভূতত্ত্ববিদদের মতে, সাধারণত প্রতি একশ বছর পর পর বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়ে থাকে। সেই হিসাবে আরেকটি বড় ভূমিকম্পের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে বাংলাদেশ।
এটা আতঙ্কের বিষয়। তার মানে, ছোট এসব কম্পন, শক্তি সঞ্চয় করছে। ফলে সামনে বড় ভূমিকম্পের শঙ্কা আছে। তুরস্কে যে ভূমিকম্প হয়েছে, এর চেয়ে ছোট। অর্থাৎ, রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হলেও শুধু ভবন ধস নয়, ঢাকার অপরিকল্পিত বিদ্যুৎ সঞ্চালন ও গ্যাসলাইন এই নগরকে একটি অগ্নিকূপে পরিণত করতে পারে। মৃত্যু হতে পারে আড়াই থেকে তিন লাখ মানুষের। কারণ, আমাদের ভবনগুলো এখনও নিরাপদভাবে তৈরি হচ্ছে না।
ঢাকা শহরের প্রায় সব বাড়িতে তিতাস গ্যাসের লাইন আছে। প্রয়োজন ছাড়া গ্যাসের চুলা জ্বালিয়ে রাখা ভূমিকম্পের দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত ভয়ংকর। এমএমআইয়ের ৮ স্কেলের ঝাঁকুনিতে রান্নাঘরের গ্যাস বার্নার থেকে মুহূর্তে আগুন ধরে যেতে পারে।
আরও পড়ুন >>> জলবায়ু পরিবর্তন : তলিয়ে যেতে পারে বাংলাদেশের ১৩ শতাংশ ভূমি
বুয়েটের বিভিন্ন সময়ে করা জরিপে দেখা যায়, ঢাকায় ১৩ লাখ, চট্টগ্রামে ৩ লাখ ও সিলেটে ১ লাখ বহুতল ভবন রয়েছে। এসব ভবনের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ছয়তলা বা তার চেয়েও উঁচু।
দ্রুত দেশের ২০ লাখ বহুতল ভবনের সবকটি ভূমিকম্প-সহনশীল করতে হবে। সেটা করার মতো কারিগরি দক্ষতা এবং সামর্থ্য বাংলাদেশের আছে। তবে তার জন্য সরকারের জরুরি উদ্যোগ দরকার।
সারা দেশে বড় বড় শহরে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে সেখানকার বাসাবাড়ি ভূমিকম্পন-সহনীয় কি না, সেটা যাচাই করতে হবে। ভূমিকম্পে ৯০ শতাংশ মানুষ মারা যায় ভবন ধসে। তুরস্কেও আমরা দেখলাম ভবন ধ্বসেই বেশি মৃত্যু হয়েছে।
ভূমিকম্পের পূর্বানুমান করা সম্ভব না। তবে ব্যবস্থা একটাই, প্রস্তুতি নিতে হবে। এক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড এনফোর্সমেন্ট ও পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট আইন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিতে হবে। এতে ৯৯ শতাংশ নতুন ভবন টিকে যায়। তবে পুরোনো ভবনের জন্য মজবুতিকরণ পন্থায় যেতে হবে।
গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—তুরস্ক আমাদের চেয়ে অনেক বেশি প্রস্তুত। তারা ভূমিকম্প আঘাত হানার সঙ্গে সঙ্গেই দুর্গত এলাকায় তল্লাশি ও উদ্ধারকারী বাহিনী পাঠিয়ে দিয়েছে, হেলিকপ্টারে করে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে।
তুরস্কের সব ভবন তো আর ভালো নয়, যেগুলো ভেঙেছে সেগুলোর বেশিরভাগই ২-৩ তলার, তবে আশপাশে বহুতল ভবনগুলো দাঁড়িয়ে আছে। ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য বিবেচনা না করে নগরায়ন হলে দুর্যোগের শঙ্কা বাড়বে।
তবে আমাদের রেসপন্ডিং ক্যাপাসিটি কতটুকু তা নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। আমাদের সরকার বিভিন্ন সময় ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীকে প্রচুর সরঞ্জাম কিনে দিয়েছে। তবে সমস্যা হলো—সেসব সরঞ্জাম ব্যবহার না করার ফলে নষ্ট হওয়ার অবস্থা।
আরও পড়ুন >>> নিমতলী, চুড়িহাট্টা, সীতাকুণ্ড ট্র্যাজেডি : এর শেষ কোথায়?
শহরগুলোয় শুধু গলি আর গলি, তুরস্ক ও সিরিয়ার রাস্তাঘাট কিন্তু এমন না। আমাদের পুরান ঢাকায় যদি ভূমিকম্প হয়, দেখা যাবে কোনো গাড়িই সেখানে ঢুকতে পারবে না। তাই স্থানীয় কমিউনিটি ক্ষমতায়ন করে কিছু সরঞ্জাম তাদের কাছে রেখে দিলে এবং নিয়মিত চর্চা করলে ভালো হতো। না হয় এই ইস্যুগুলো আমাদের জন্য একসময় কাল হয়ে দাঁড়াবে।
আমাদের এখানে বিল্ডিং কোড সঠিকভাবে মানা হচ্ছে না, এটাও একটা বড় ইস্যু। ১৯৯৬ সাল থেকে যেহেতু আমাদের বিল্ডিং কোড আছে, সেহেতু এই সময়ের পর থেকে নির্মিত বহুতল ভবনগুলো ভালো অবস্থায় থাকবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। তবে আমাদের পুরোনো ২-৩ বা ৫ তলার যেসব ভবন আছে, যেগুলো ভূমিকম্প সহনীয় নয়, সেগুলো যদি বিধ্বস্ত হয়, সেক্ষেত্রে প্রথমত এখনই সেগুলো চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
ভূমিকম্প বিষয়ক দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য সরকারের একটি সুস্পষ্ট কর্মপরিকল্পনা জরুরি প্রয়োজন। ভূমিকম্পজনিত দুর্যোগ থেকে জীবন ও সম্পদ রক্ষার প্রয়োজনে সম্ভাব্য ভূমিকম্প মোকাবিলায় করণীয়—
ভূমিকম্পের আগে জনসচেতনতা বৃদ্ধি
(ক) বিদ্যুৎ ও গ্যাসলাইন বন্ধ করার নিয়মকানুন পরিবারের সবার জেনে রাখা।
(খ) ঘরের ওপরের তাকে ভারী জিনিসপত্র না রাখা, পরিবারের সব সদস্যের জন্য হেলমেট রাখা।
আরও পড়ুন >>> রানা প্লাজা ট্র্যাজেডি : এখনো শ্রমিক কেঁদে মরে
(গ) পরিকল্পিত বাড়িঘর নির্মাণের জন্য বিল্ডিং কোড ও পরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট আইন মেনে চলা। ভবনের উচ্চতা ও লোডের হিসাব অনুযায়ী শক্ত ভিত দেওয়া, রেইনফোর্সড কংক্রিট ব্যবহার, পাশের বাড়ি থেকে নিরাপদ দূরত্বে বাড়ি নির্মাণ, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন নিরাপদভাবে স্থাপন করা। গর্ত ও নরম মাটিতে ভবন নির্মাণ না করা।
ভূমিকম্প চলাকালে প্রস্তুতি
(ক) হতবিহ্বল না হয়ে ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা। নিজেকে ধীর স্থির ও শান্ত রাখা, বাড়ির বাইরে থাকলে ঘরে প্রবেশ না করা।
(খ) ভূমিকম্প হচ্ছে টের পেলে বা খবর পেলে সঙ্গে সঙ্গে ফাঁকা ও উন্মুক্ত স্থানে আশ্রয় নেওয়া। একতলা দালান হলে দৌড়ে বাইরে চলে যাওয়া। তাছাড়া বহুতল উঁচু ভবনে দালানের ভেতরে থাকলে এবং বের হতে না পারলে জানালা বা দেয়ালের পাশে অবস্থান না নিয়ে শক্ত কোনো কলাম, টেবিল বা খাটের নিচে অবস্থান নেওয়া ও কাচের জিনিসের কাছ থেকে দূরে থাকা।
ভূমিকম্পের সময় সম্ভব হলে মাথার ওপর শক্ত করে বালিশ অথবা অন্য কোনো শক্ত বস্তু [কাঠবোর্ড, নরম কাপড় চোপড়ের কুণ্ডলি] ধরে নেওয়া।
(গ) উঁচু দালানের জানালা বা ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নামার চেষ্টা না করা। ভূমি ধসে পড়ার সম্ভাবনা আছে এমন উঁচু ভূমি থেকে দূরে থাকা। উঁচু ভবন থেকে দ্রুত নামার জন্য লিফট ব্যবহার ব্যবহার না করা।
আরও পড়ুন >>> এই মৃত্যু উপত্যকাই আমার দেশ!
(ঘ) বহুতল ভবনে একই জায়গায় অনেক মানুষ একসঙ্গে না থেকে ভাগ হয়ে আশ্রয় নেওয়া।
(ঙ) একবার ভূমিকম্পের পরপরই আরেকটা ছোট ভূমিকম্প হয় যাকে ‘আফটার শক’ বলে। নিজেকে বিপদমুক্ত ভাবতে অন্তত একঘণ্টা সময় নেওয়া।
(চ) ভূমিকম্পের সময় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা। গ্যাস এবং বৈদ্যুতিক সংযোগ থেকে দূরে অবস্থান করা।
(ছ) ভূমিকম্পের সময় গাড়িতে থাকলে গাড়ি খোলা জায়গায় থামিয়ে গাড়িতেই থাকা।
(জ) আপনার মুঠোফোনে ফায়ার সার্ভিস এবং দরকারি মোবাইল নম্বরগুলো আগাম সতর্কতা হিসেবে আগেই রেখে দেওয়া। বিপদের সময় কাজে লাগবে।
ভূমিকম্পের পরের প্রস্তুতি
(ক) ক্ষতিগ্রস্ত ভবন থেকে ধীর স্থির ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে বের হওয়া।
(খ) রেডিও টেলিভিশন থেকে জরুরি নির্দেশাবলি শোনা এবং তা মেনে চলা।
(গ) বিদ্যুৎ, গ্যাস, টেলিফোন লাইনে কোনো সমস্যা হয়েছে কি না, পরীক্ষা করে নেওয়া ও প্রয়োজনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
(ঘ) সরকারি সংস্থাগুলোর উচিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহযোগিতা করা।
আরও পড়ুন >>> মরণ ফাঁদের নির্মাণকাজ
(ঙ) উদ্ধারকাজে নিজেকে নিয়োজিত করা। অস্থায়ী আশ্রয়স্থলে ক্ষতিগ্রস্ত লোকদের নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা। যোগাযোগব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় সার্বিক সহযোগিতা করা।
ভূমিকম্প মোকাবিলায় পূর্বপ্রস্তুতি
ভূমিকম্প বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানের পূর্বপ্রস্তুতি থাকা আবশ্যক। তার জন্য সম্ভাব্য ভূমিকম্প-পরবর্তী সময়ে সঠিকভাবে নিজেকে সেবায় মনোনিবেশ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণসহ সব প্রতিষ্ঠানের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। বর্তমান কাঠামোতে ভূমিকম্প বিষয়ক সার্বিক প্রস্তুতি অত্যন্ত নগণ্য বিধায় পূর্বপ্রস্তুতির উন্নয়ন একান্ত আবশ্যক।
ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠন কর্মসূচি
ভূমিকম্প-পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ কর্মসূচি নিশ্চিতকরণ। উদ্ধার কর্মসূচির অভাবে অসংখ্য প্রাণহানি ঘটে থাকে। পূর্বপ্রস্তুতি, দক্ষ প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি, শক্তিশালী নেটওয়ার্ক উদ্ধার কর্মকাণ্ডের মূল চাবি। তাছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রয়োজনীয় ত্রাণ / ওষুধ, চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা।
উল্লেখ্য, ভূমিকম্পের দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান যেমন ফায়ার ব্রিগেড, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিমানবাহিনী, রেড ক্রিসেন্ট, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি চমৎকার সম্পর্ক থাকা জরুরি।
আরও পড়ুন >>> দুর্ঘটনা নাকি খুন?
বাংলাদেশ প্লেট বাউন্ডারির অন্তর্ভুক্ত না হয়েও দুর্বল অবকাঠামো, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, প্রয়োজনীয় বিল্ডিং কোড মেনে না চলার কারণে এবং যত্রতত্র ভবন ও স্থাপনা নির্মাণের ফলে বাংলাদেশ বিশ্বের একটি অন্যতম ভূমিকম্প ঝুঁকিপূর্ণ দেশ।
যেহেতু ভূমিকম্প একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ, একে থামিয়ে রাখা সম্ভব নয়। সেহেতু ভূমিকম্প পূর্বপ্রস্তুতি ও ক্ষয়ক্ষতি রোধে ভূমিকম্প-পরবর্তী শক্তিশালী এবং কার্যকর প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমেই এই দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব।
ড. মো. আনোয়ার খসরু পারভেজ ।। অধ্যাপক ও গবেষক, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
khasru73@juniv.edu