সজীব ওয়াজেদ জয় : ডিজিটাল বাংলাদেশ যার চিন্তার ফসল
‘উন্নত, সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য আমরা চারটি প্রযুক্তির ওপর নজর দিতে চাই। মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইন, আর্টিফিশিয়ালি ইন্টেলিজেন্স, রোবটিক্স এবং সাইবার সিকিউরিটি; এই চারটি প্রযুক্তির বিকাশ ও সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য আমাদের এখন থেকেই কাজ করতে হবে।’
৬ জুলাই বাংলাদেশ হাইটেকপার্ক কর্তৃপক্ষের বোর্ড গভর্ন্যান্সের দ্বিতীয় সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এমন নতুন স্বপ্ন, মিশন ও ভিশনের কথা জানালেন তিনি। যার ভাবনা ঘিরে রয়েছে আগামীর সমৃদ্ধময় বাংলাদেশ।
বিজ্ঞাপন
যার কারণে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা। মাত্র ১৪ বছরে বাংলাদেশ আজ স্বপ্ন জয়ের দ্বারপ্রান্তে। যার অ্যাকশন প্লান, টাইম ফ্রেম, মিশন, রোডম্যাপ এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছে সেই ভিশনারি নেতা আর কেউ নন প্রযুক্তির বরপুত্র, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়। যার সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফসল আজকের প্রযুক্তির উন্নয়নের বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন : সহমতের রাজনীতি
সজীব ওয়াজেদ জয় একজন ভিশনারি ও মেধাবী নেতা। তিনি স্বপ্ন দেখেন, কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেন এবং তা বাস্তবায়নের পথ বাতলে দেন। যার জীবন দর্শনের মূলে রয়েছে সততা আর হৃদয়ে রয়েছে দেশপ্রেম।
মূলত বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র বলেই জীবন ও কর্মের মাঝে তিনি সততার অনুশীলন করতে পেরেছেন। আর এই কারণেই তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের শেষ সীমানায়।
এই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না প্রযুক্তি খাতে দীর্ঘদিন পিছিয়ে ছিল বাংলাদেশ। সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রথম ভাবনা আসে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মাথা থেকে। এর কারণও আছে।
জয় সবসময়ই দেখতেন দেশকে নিয়ে তার মায়ের ভাবনার শেষ নেই। দেশ ও দেশের মানুষকে নিয়ে তার মা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানামুখী ইতিবাচক ভাবনার প্রভাব পড়ে পুত্র জয়ের মধ্যেও।
আরও পড়ুন : তোমাদের যা বলার ছিল, বলছে কি তা বাংলাদেশ?
২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপ্ট অন্তর্ভুক্তি জয়ের চিন্তার ফসল। সার্বিকভাবে বাংলাদেশকে প্রযুক্তিনির্ভর করতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের অবদান অনস্বীকার্য। এ জন্য তাকে শুনতে হয়েছে অনেক কটাক্ষ, সহ্য করতে হয়েছে সমালোচনা। কিন্তু জয়ের ভাবনার আজ সবদিকেই জয়জয়কার।
দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হাইটেকপার্ক নির্মাণ, ফোর-জি চালু, ইন্টারনেটের দাম কমানো, কম্পিউটার শুল্কমুক্ত আমদানি, ফ্রিল্যান্সিং-এর উৎকর্ষতা, বিভিন্ন দাপ্তরিক কাজ অনলাইনে করাসহ নাগরিক সুবিধাকে মানুষের হাতের মুঠোয় নিয়ে আসাতে সজীব ওয়াজেদ জয়ের স্বপ্নগুলো আজ ডানা মেলেছে সবখানে।
এক দশকে তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের মহাসড়কের পথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। গত দুই বছরে বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংক্রমণে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক বিরূপ প্রভাব ফেললেও তথ্য প্রযুক্তিতে উন্নয়ন কতটা এগিয়েছে এই দেশ তা আজ প্রমাণিত। শ্রম নির্ভর অর্থনীতি আজ প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতিতে পরিণত।
দেশের অর্থনীতি, শিল্প, চিকিৎসা, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুতেই আজ প্রযুক্তির ছোঁয়া। করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতার সময় আমরা দেখেছি ঘরে বসেই চলছে অফিসের কাজ।
আরও পড়ুন : ভোটের গণতন্ত্রের জন্য প্রয়োজন নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার
প্রধানমন্ত্রীর মিটিং, রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড, ব্যাংক, বীমা, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট কোম্পানিসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ সব কাজ, এমনকি টেলিভিশন রিপোর্টিং ও টকশো পর্যন্ত ছিল অনলাইন নির্ভর।
শিক্ষার্থীদের ক্লাস, পরীক্ষা, ভর্তি, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয়, অসুস্থ রোগীর চিকিৎসায় টেলিমেডিসিন সেবা, আদালতের বিচারকার্য পরিচালনা থেকে শুরু করে কোথায় নেই প্রযুক্তির স্পর্শ? কেউ কি কখনো ভেবেছে কোরবানির গরু কেনা যাবে ডিজিটাল প্লাটফর্মে? উন্নয়নের পথে, প্রযুক্তির পথে বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়ার নেপথ্য মহানায়ক সজীব ওয়াজেদ জয়।
বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র হওয়া সত্ত্বেও দেশের সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই সজীব ওয়াজেদ জয়ের নাম।
২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ দেওয়া হয় তাকে। যার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিক রাজনীতিতে যাত্রা শুরু তার। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ কিংবা ক্ষমতার স্বাদ গ্রহণের কোনো ভাবনা নেই তার।
মেধা-মনন আর চিন্তা জুড়ে রয়েছে মায়ের মতো জনগণের পাশে থাকা আর প্রযুক্তি উন্নয়নে বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রথম সারিতে নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন।
২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর অবৈতনিকভাবে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান সজীব ওয়াজেদ জয়। তখন থেকেই সরকারের পাশাপাশি দলীয় ঘরানার ছাড়াও তথ্য প্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন তিনি।
আরও পড়ুন : অসাম্প্রদায়িক জাতির দেশ
দেশ গঠনে তরুণদের মতামত ও পরামর্শ শুনতে, ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দারুণ সাড়া ফেলেছে তরুণ প্রজন্মের মাঝে। প্রশিক্ষিত তরুণদের নিয়ে বৃহত্তম প্লাটফর্ম ‘ইয়াং বাংলা’র সূচনা করেন জয়, যা দেশের উদ্যোক্তা ও নেতৃত্ব বিকাশে রাখবে ইতিবাচক ভূমিকা।
ডিজিটাল বিশ্বের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে ২০১৬ সালে সজীব ওয়াজেদ জয় অর্জন করেন আইসিটি ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড।
২০০৭ সালে তিনি লাভ করেন ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম থেকে ‘ইয়াং গ্লোবাল লিডার অব দ্যা ওয়ার্ল্ড’ এর স্বীকৃতি। কিন্তু জয় মনে করেন তার সকল স্বীকৃতি সার্থক হবে তখন, যেদিন প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশ্বের প্রথম সারির কাতারে থাকবে বাংলাদেশের নাম।
জাতির পিতার যোগ্য উত্তরসূরি তার কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্র পরিচালনা, নেতৃত্বে দক্ষতা ও মানবিকতায় আজ তিনি সারাবিশ্বে প্রশংসিত। সজীব ওয়াজেদ জয় সেই মায়ের সন্তান, ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ হিসেবে আজ যার খ্যাতি বিশ্বজুড়ে।
মানুষের ভালোবাসায় মৃত্যুর দুয়ার থেকে বারবার ফিরে আসা মৃত্যুঞ্জয়ীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। পারিবারিক ঐতিহ্যের কারণেই রাজনীতির সব গুণ রয়েছে তার।
আরও পড়ুন : বাংলাদেশে কার্যকর সংসদ এবং সুশাসনের স্বপ্ন
তাইতো দেশে কিংবা বিদেশে যেখানেই অবস্থান করেন না কেন উন্নয়ন ভাবনার পাশাপাশি সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও সরকারের বিরুদ্ধে যেকোনো অপপ্রচার এবং ষড়যন্ত্রের গন্ধ পেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এর সমুচিত জবাব দিতে কুণ্ঠাবোধ করেন না তিনি।
মায়ের অবসরে তিনিই হবেন দলীয় প্রধান আর দেশের কাণ্ডারি এমন ভাবনা অবান্তর নয়। এদেশের যুব সমাজ তাই প্রত্যাশায় আছে এমন তারুণ্য নির্ভর নেতৃত্বের। যার মাঝে তারা খুঁজে পাবেন বঙ্গবন্ধু আর জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতিচ্ছবি।
আগামী দিনের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী রাজনীতির কাণ্ডারি সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ও প্রখ্যাত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া দম্পতির ঘর আলোয় ভরে দিয়ে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধের সময়ে জন্ম নেওয়ায় নানা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার নাম রাখেন জয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার সময় মা-বাবার সাথে জার্মান ছিলেন জয়। পরে মায়ের সাথে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে আসেন ভারতে। সেখানেই কেটেছে তার শৈশব ও কৈশোর।
আরও পড়ুন : ফিরে এলেন দুঃসাহসী নাবিক
লেখাপড়া করেছেন নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজে। পরে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট আলিংটন থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্জন করেন লোক প্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি।
২০০২ সালে ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন সজীব ওয়াজেদ জয়। সোফিয়া ওয়াজেদ নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে তাদের।
রাজনীতিতে আপাতত সক্রিয় হওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও তার ভাবনা সবসময় বাংলাদেশের উন্নয়ন আর অগ্রগতি নিয়ে। তিনি স্বপ্ন দেখেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে জাতিসংঘের আইসিটি ইন্ডিকেটের ডিজিটাল গভর্ন্যান্সে ইনডেক্সের সেরা ৫০-এর মধ্যে থাকবে বাংলাদেশ।
স্বপ্ন পূরণের পথে এগিয়ে যাওয়া এই দেশের নাগরিক সেবার সবগুলো প্রযুক্তি থাকবে জনগণের আঙুলের ছোঁয়ায়। ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার সজীব ওয়াজেদ জয়ের দেশ নিয়ে এমন ভাবনার জয় হোক। তার সকল কর্ম পরিকল্পনা দেখুক আলোর মুখ। জয়ের জয় হোক সর্বত্র। শুভ জন্মদিনে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্য।
মানিক লাল ঘোষ ।। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য