ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ঋণের নামে ৭০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে আলোচিত পিকে হালদার এবং এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে পৃথক দুই মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মঙ্গলবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক রাকিবুল হায়াত বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন। প্রথম মামলায় ২২ জন ও দ্বিতীয় মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। সংস্থাটির জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রথম মামলার আসামিরা হলেন- রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লি. ও এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদার (পিকে হালদার), হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সুস্মিতা সাহা ও এমডি মৈত্রেয়ী রানী বেপারী, এফএএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক মো. আবুল শাহজাহান, কাজী মাহজাবিন মমতাজ, মিসেস মাহফুজা রহমান বেবী, মিসেস সোমা ঘোষ, ডা. উদ্দা মল্লিক, অরুণ কুমার কুণ্ডু, প্রদীপ কুমার নন্দী, এফএএস ফাইন্যান্সের স্বতন্ত্র পরিচালক বীরেন্দ্র কুমার সোম, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নুরুল হক গাঙ্গী, সিনিয়র অফিসার মিসেস মৌসুমী পাল, ম্যানেজার আহসান রাকিব, প্রাক্তন সিনিয়র অফিসার মিসেস তাসনিয়া তাহসিন রোজালিন, ভাইস প্রেসিডেন্ট মীর ইমাদুল হক, প্রাক্তন ডিপি মো. মনিরুজ্জামান আকন্দ, সাবেক এসভিপি মো. জাহাঙ্গীর আলম ভূঁইয়া এবং সাবেক এসইভিপি ও সিএডির প্রধান প্রাণ গৌরাঙ্গ দে।

এ মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান হাল ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের নামে এফএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড হতে ঋণ হিসেবে ৩০ কোটি টাকা ঋণ মঞ্জুর করে উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আত্মসাতকৃত অর্থ পরবর্তীতে বিভিন্ন লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে অবস্থান গোপন করার চেষ্টা করেছেও বলে অভিযোগ করা হয়েছে এজাহারে।

অন্যদিকে দ্বিতীয় মামলার আসামিরা হলেন- আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বাসুদের ব্যানার্জি, ইন্টারন্যাশনাল পিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের পরিচালক মো. নওশেরুল ইসলাম, এফএএস ফাইনান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলম, পরিচালক কাজী মাহজাবিন মমতাজ, পরিচালক মো. আবুল শাহজাহান, ডা. উদ্দাব মল্লিক, প্রদীপ কুমার নন্দী, অঞ্জন কুমার রায়, অরুণ কুমার কুণ্ডু, মো. মোস্তাইন বিল্লাহ, উজ্জল কুমার নন্দী, সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহরিয়ার।

এ মামলায় প্রতারণা ও জাল জালিয়াতির আশ্রয়ে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠান ‘মেরিন ট্রাস্ট লিমিটেড’ এর নামে এফএস ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড হতে ঋণ হিসেবে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিং অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।

মামলা দুটিতে আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪ (২) ও (৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

ক্যাসিনো অভিযানের ধারাবাহিকতায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি আলোচিত প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার অভিযোগে ওঠার পর এখন পর্যন্ত তিন দফায় ২৩ মামলা দায়ের করে দুদক।

 আরএম/আইএসএইচ