ফাইল ছবি

‘অনুমোদিত করোনা টিকার ২য় ডোজ নিলে করোনা টেস্ট না করেই যে কেউ বিমানবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে পারবে, এজন্য তাদের কোনো ধরনের কোয়ারেন্টাইনেও থাকতে হবে না।’ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সম্প্রতি বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে এই নির্দেশনা দিয়েছে। তবে এই সিদ্ধান্ত এখনই বাস্তবায়নে রাজি নয় বেবিচক।

বেবিচক ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সূত্র ঢাকা পোস্টকে জানায়, সম্প্রতি এমন একটি চিঠি বিমানবন্দরে দেওয়া হয়েছে। এতে মহামারিতে করুণভাবে আক্রান্ত যুক্তরাজ্য থেকে আসা যাত্রীদের জন্যেও কোয়ারেন্টাইন ও সার্টিফিকেট আনার বাধ্যবাধকতা নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বেবিচকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো সার্কুলার জারি না হওয়ায় এখনও বাংলাদেশে আগত সবাইকে কোভিড-১৯ নেগেটিভ সার্টিফিকেট নিয়েই আসতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ ও লাইন ডিরেক্টর, সিডিসি) অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বিশ্বব্যাপী করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এমতবস্থায় কোভিড-১৯ মহামারির বিস্তার রোধকল্পে জনস্বাস্থ্য ও রোগতত্ত্ব বিষয়ক কমিটির সুপারিশ ক্রমে জানানো যাচ্ছে যে, বিদেশ থেকে বাংলাদেশে আগত যাত্রীদের ক্ষেত্রে যারা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ২য় ডোজ টিকা নিয়েছেন এবং ২য় ডোজের পরবর্তী ১৪ দিন অতিক্রান্ত হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন এবং কোভিড-১৯ পিসিআর নেগেটিভ রিপোর্ট প্রদর্শনের প্রয়োজন হবে না। যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর সব দেশে থেকে আসা যাত্রীর ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে। যাত্রীর গৃহীত টিকা অবশ্যই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক (ডব্লিউএইচও) অনুমোদিত হতে হবে।’

করোনাকালে বিমান পরিবহনে মানা হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি/ ফাইল ছবি

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এ নির্দেশনার ব্যাপারে বেবিচক এখনই কোনো সাড়া দেবে না বলে জানিয়েছে। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ ধরনের একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে বিশ্বের কোনো দেশেই এমনটি হয়নি। একজন ভ্যাক্সিন নেওয়া যাত্রী করোনায় আক্রান্ত না হতে পারেন। তবে তিনি অন্যের জন্য ভাইরাসের ক্যারিয়ার (বহনকারী) হতে পারেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘আপাতত বাংলাদেশে আসা প্রতিটি যাত্রীকে কোভিড-১৯ নেগেটিভ টেস্টের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলকভাবে আনতে হবে। পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের যাত্রীদের জন্য আগের মতোই ৭ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক। ভবিষ্যতে টিকা নেওয়া যাত্রীদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’

করোনাভাইরাস মহামারির এক বছর পেরিয়ে আসার পর যুক্তরাজ্যে ভাইরাসের নতুন একটি ধরন শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। বাংলাদেশে দাবি উঠলেও সরকার এখনও লন্ডনের ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়নি। তবে ২০২১ সালের ১ থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত যুক্তরাজ্য থেকে আসা সবাইকে নির্দিষ্ট হোটেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছিল। পরে ১৬ তারিখ থেকে এই মেয়াদ ৩ দিন করা হয়। সর্বশেষ সেই মেয়াদ ৭ দিনে উন্নীত করা হয়।

এআর/এইচকে