আট ধাপে দশম ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করেছে কেএম নূরুল হুদা কমিশন। আটটি ধাপে মোট ৪ হাজার ১৩৬টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন ধাপে একবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক এবং আরেকবার স্বতন্ত্র প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয়ে এগিয়ে ছিল। তবে দিনশেষে নৌকারই জয় হয়েছে। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রার্থীদের জয় বেশি হয়েছে। 

মোট হিসাবে দেখা গেছে, ৪ হাজার ১৩৬ ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে ২০৫০টিতে, স্বতন্ত্র পেয়েছে ১ হাজার ৭৪৪টিতে এবং বাকি ৩৪২টি ইউপিতে জয় পেয়েছে জাতীয় পার্টিসহ অন্যান্য দল।

ইসি জানায়, মোট আট ধাপে ৩৯৪টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ হয়েছে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন মোট ৩৭১ জন এবং মোট ভোট পড়েছে ৭২ দশমিক ২০ শতাংশ। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সহিংসতায় বিভিন্ন স্থানে একশ জনের মতো প্রাণহানি হয়েছে।

অষ্টম ধাপ : অষ্টম ধাপে ১০ ফেব্রুয়ারি নয়টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এতে দুটি ইউপিতে স্বতন্ত্র এবং ৭টিতে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছে। 

সপ্তম ধাপ : গত ৭ ফেব্রুয়ারি দেশের ১৩৪টি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) সপ্তম ধাপের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন শেষে ১৩০টি ইউপির ফলাফলের তথ্য জানায় ইসি। এ ধাপে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৮৬টি ইউপিতে, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা জয় পেয়েছে ৪০ ইউপিতে। এছাড়া জাতীয় পার্টি-জেপি ১ ও জাতীয় পার্টি ৩টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয়ী হয়েছে।

ষষ্ঠ ধাপ : গত ৩১ জানুয়ারি দেশের ২১৮ ইউপিতে ষষ্ঠ ধাপে ভোট হওয়ার কথা থাকলেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ভোট হয় ২১৬ ইউপিতে। এই ধাপে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১১৭টি, স্বতন্ত্র প্রার্থী ৯৫টি, জাতীয় পার্টি ৩টি ও জাতীয় পার্টি (জেপি) ১টি ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পায়।

পঞ্চম ধাপ : গত ৫ জানুয়ারি দেশের ৭০৭টি ইউপিতে পঞ্চম ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। তবে ৬৯২টি ইউপির ফলাফল ঘোষণা করে ইসি। এর মধ্যে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩৪৬টি ইউপিতে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৩৪১টি ইউপিতে এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের ২ জন, জাতীয় পার্টির ২ জন ও বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির একজন প্রার্থী জয় পেয়েছিল।

চতুর্থ ধাপ : গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর চতুর্থ ধাপে দেশের ৮৩৬টি ইউপিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এরমধ্যে ৭৯৬টি ইউপির ফলাফলের তথ্য জানায় ইসি। এতে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত ৩৯৬ জন প্রার্থী জয় পেয়েছিল। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী জয় পেয়েছিল ৩৯০ ইউপিতে। এছাড়া ইসলামী আন্দোলনের ২ জন, জাকের পার্টির একজন, জাতীয় পার্টির (জাপা) ৬ জন এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির একজন জয় পেয়েছিল।

তৃতীয় ধাপ : গত বছরের ২৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত তৃতীয় ধাপের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছিল ৫২৫টিতে, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছিল ৪৪৬টিতে। এছাড়া জাতীয় পার্টি ১৭টি, ১টি করে ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছিল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, ওয়ার্কার্স পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। এই ধাপে ১ হাজার ৮টি ইউপিতে ভোট হয়।

দ্বিতীয় ধাপ : গত বছরের ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনে ৮৩৪টি ইউপির মধ্যে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীরা চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছিল ৪৮৬টিতে। আর ৩৩০টিতে জয় পেয়েছিল স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। জাতীয় পার্টি ১০টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ৪টি ও জাতীয় পার্টি (জেপি), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, খেলাফত মজলিশ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) ১টি করে ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে জয় পেয়েছিল।

প্রথম ধাপ : গত ২১ জুন অনুষ্ঠিত প্রথম ধাপের প্রথম অংশে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ২০৪টি ইউপির মধ্যে আওয়ামী লীগ জয় পেয়েছিল ১৪৮টি ইউপিতে আর স্বতন্ত্র পেয়েছে ৪৯ ইউপিতে। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ১টি, জাতীয় পার্টি (জেপি) ও জাতীয় পার্টি (জাপা) ৩টি করে ইউপিতে জয় পেয়েছিল।

এসআর/আইএসএইচ