প্রেমের ফাঁদে ফেলে ছিনতাই
ফেসবুকের মাধ্যমে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ডেকে নিয়ে নগদ টাকা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের অভিযোগে এক নারী ও তার দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) কোরবানীগঞ্জ এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন। গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- সামিহা ইসলাম রাইশা (১৯), সাইফুল ইসলাম (২৭) ও মনসুর মোল্লা তৌহিদ (৩৩)।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ কর্মকর্তা নেজামত উদ্দিন বলেন, বাঁশখালীর সোহেল নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে সামিহা ইসলাম রাইশার ফেসবুকে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে তাদের মধ্যে প্রায় সময়ই ফেসবুক মেসেঞ্জারে কথাবার্তা হত। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এরই একপর্যায়ে রাইশা সোহেলকে জানায় সে এসএসসি পাশ করে একটি কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য কান্না করে সোহেলের কাছে ২ হাজার টাকা ধার চায়। তখন সোহেল ২ হাজার টাকা রাইশাকে বিকাশে পাঠাবে বলে জানায়৷ তখন রাইশা সোহেলকে দেখা করার জন্য বারবার অনুরোধ করতে থাকে।
তিনি বলেন, একপর্যায়ে সোহেল রাইশার কথামতে তার সঙ্গে দেখা করতে বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার দিকে কোতোয়লী থানার জামালখান চেরাগী পাহাড় এলাকায় আসে ৷ তারই একপর্যায়ে রাইশার সহযোগী সাইফুল ইসলাম ও মনসুর মোল্লাসহ আরেকজন মিলে সোহেলকে চারদিক থেকে ঘিরে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি মারে। এ সময় তারা সোহেলকে মারধর করতে করতে মোবাইল ও নগদ টাকা যা আছে সব দিয়া দিতে বলে। এরপর সাইফুল ইসলাম ও মনসুর মোল্লাসহ অজ্ঞাতনামা ১ জন আসামি সোহেলের দুই হাত পিছন দিকে ধরে রাখে। আর সামিহা ইসলাম রাইশা (১৯) তার সঙ্গে থাকা ব্যাগ থেকে ছুরি বের করে ভয়ভীতি দেখায়। এক পর্যায়ে তার প্যান্টের পকেটে থাকা ২৫ হাজার টাকা ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায় যায়। এই ঘটনায় মো. সোহেল তাদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
নেজামত উদ্দিন বলেন, মামলা দায়েরের পরে আজকে কোরবানীগঞ্জ এলাকা থেকে মনসুর মোল্লা তৌহিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে ঘটনার কথা স্বীকার করে বাকি আসামিদের নাম ঠিকানা বলে। এ সময় তার কাছ থেকে ছিনতাইকৃত নগদ ৩ হাজার টাকা, ১টি মোবাইল ও ছিনতাই কাজে ব্যবহৃত ১টি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়।
পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, আসামিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, সাইফুল ইসলাম ও মনসুর মোল্লা কৌশলে তাদের বন্ধু সামিহা ইসলাম রাইশাকে দিয়ে ফেসবুক মেসেঞ্জারে চ্যাটের মাধ্যমে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলায়। কাউকে আর্থিক সমস্যার কথা বলে, কাউকে বিভিন্নভাবে প্রেমের প্রলোভন দেখিয়ে ইমোশনাল করে ফেলে রাইশা। পরে রাইশা তার সঙ্গে দেখা করার জন্য চ্যাট করা ব্যক্তিকে বাধ্য করে। দেখা করতে আসলে মারধর করে চক্রটি সবকিছু হাতিয়ে নিতো।
তিনি আরও বলেন, সামিহা ইসলাম রাইশা পড়াশুনার নাম করে পরিবার থেকে আলাদাভাবে চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট এলাকায় ভাড়া বাসায় একা বসবাস করে। আর এই সুযোগে সাইফুল ও মনসুরের সঙ্গে মিলে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করে আসছিল।
এই চক্রটি এর আগে একই কৌশল অবলম্বন করে একাধিক ছিনতাই করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কেএম/আইএসএইচ