চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার দাবিতে সমাবেশ
সব ধরনের চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর বাস্তবায়ন ও শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করার দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র পরিষদ এবং স্বদেশী গণতান্ত্রিক আন্দোলন যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালন করে।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব ইসমাইল সম্রাট বলেন, করোনার কারণে যে সময়টি অতিবাহিত হয়েছে, সে দায়টি তো আমাদের না। সরকারি সিদ্ধান্তেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল, চাকরিতে প্রবেশেরও সুযোগ হয়নি। আমি বর্তমানে মাস্টার্সের রানিং স্টুডেন্ট, আমার বয়স এখন ২৭ বছর। তাহলে ৩০ বছরের মধ্যে আমরা কীভাবে চাকরিতে প্রবেশ করব। সরকারের দায়টি কেন আমাদের ওপর চাপানো হচ্ছে। প্রবেশের বয়সসীমা অবশ্যই ন্যূনতম ৩৫ বছর করতে হবে। এটা আমাদের যৌক্তিক দাবি।
স্বদেশী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক সাখাওয়াত হোসেন ভুঁইয়া বলেন, এটি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি এবং জাতীয় সমস্যা। যুবকদের একটি বয়সের মধ্যে বন্দি করে তাদের হতাশাগ্রস্ত করা কোনোভাবেই উচিত নয়। গত এক বছরে ১০১ জন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে। তাদের বাঁচাতে হলে চাকরির এ বয়সসীমা উঠিয়ে দিতে হবে অথবা ন্যূনতম ৩৫ কিংবা ৪০ করতে হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের এ দাবিকে সমর্থন জানাচ্ছি এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব কাসেম মাসুদ বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে সময়সীমা নেই। জো বাইডেন যদি ৮০ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশে কেন সময়সীমা থাকবে। কেন তাদের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে কাজ থেকে দূরে রাখবেন। তরুণদের যদি চাকরি দিতে না পারেন তাহলে তাদের বেকার ভাতার আওতায় নিয়ে আসুন। অবিলম্বে তরুণদের দাবি মেনে নিন।
সমাবেশ থেকে বক্তারা সাতটি দাবি জানান। দাবিগুলো হলো—
১. উচ্চ শিক্ষিত বেকার ও কর্মহীন সব বয়সী বেকারদের কমপক্ষে মাসিক ২০ হাজার টাকা ভাতা রাষ্ট্র কর্তৃক নিশ্চিত করতে হবে।
২. বেকারদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টিতে উৎসাহিত করতে বিনা জামানত ও বিনা সুদে রাষ্ট্রায়ত্ত সব ব্যাংক কর্তৃক ১০ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ সুবিধা দিতে হবে।
৩. বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ আন্তর্জাতিক মানি লন্ডারিং আইনের আওতায় ফিরিয়ে এনে দেশে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং অর্থ পাচার রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগ করতে হবে।
৪. চাকরির নামে কর্পোরেট দাসপ্রথা বিলুপ্ত করতে অনতিবিলম্বে সাংবিধানিকভাবে ও বেসরকারিভাবে চাকরির বেতন কাঠামো, কর্মঘণ্টা, পেনশনসহ গ্রহণযোগ্য নীতিমালা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
৫. প্রশ্নফাঁস বন্ধ, একই দিন ও সময়ে একাধিক নিয়োগ পরীক্ষা বর্জন করতে হবে।
৬. সব নিয়োগ পরীক্ষার ফি সর্বোচ্চ ৫০/১০০ টাকার মধ্যে নির্ধারণ করতে হবে।
৭. সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে সরকারি চাকরির নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে।
এইচআর/এসএসএইচ