ফের পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব ঢাকা ওয়াসার
ফের পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে ঢাকা ওয়াসা। এর আগে গত দুই বছরে দুইবার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম বাড়িয়েছিল ঢাকা ওয়াসা। এবারও আরেক দফায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ওয়াসার বোর্ড সভায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয় বলে সভা সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু ওয়াসার বোর্ড সভায় ১৩ সদস্যদের বেশিরভাগই করোনাকালীন সময়ে পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৪ বার ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বর্তমানে আবাসিক ক্ষেত্রে প্রতি ১ হাজার লিটার দাম পড়ছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। এটাকে বাড়িয়ে ২১ টাকা ২৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে ওয়াসার বোর্ড সভায়। এছাড়া বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি ১ হাজার লিটার পানির বর্তমান দাম ৪২ টাকা চলছে, এটার দাম বাড়িয়ে ৫৮ দশমিক ৮ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে সভায়।
ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর জন্য এটি কেবল প্রস্তাব করা হয়েছে সবশেষ বোর্ড সভায়। যদিও সেখানে বোর্ড সদস্যদের বেশিরভাগই এই মুহূর্তে পানির দাম না বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন। পরবর্তিতে দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। যদি সেখান থেকে এ বিষয়ে অনুমোদন হয় তাহলে পানির দাম বাড়বে। আর পানির নতুন দাম কার্যকর হবে আগামী ১ জুলাই থেকে।
সবশেষ গত বছর ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর পর আবাসিক গ্রাহকদের প্রতি ১ হাজার লিটার পানির দাম দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। এর আগে ১ হাজার লিটার পানির দাম পড়ত ১৪ টাকা ৪৬ পয়সা। অন্যদিকে বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম পড়ছে ৪২ টাকা। এর আগে সেটা দিতে হত ৪০ টাকা।
বোর্ড সভায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব বিষয়ে জানতে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাকসিম এ খানের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তা রিসিভ করেননি।
তবে বোর্ডে সভায় অংশ নেওয়া এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পানির উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করতে সভায় পানির দাম বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব উঠেছে। তবে বেশিরভাগ সদস্য এই প্রস্তাবের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
ওয়াসার পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাধারণ নাগরিক পরিষদের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার আগেও ঢাকা ওয়াসা গ্রাহক পর্যায়ে পানির দাম বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে করোনাকালেও ফের পানির দাম বাড়ানোর পায়তারা করছে তারা। এটি অবশ্যই একটি অমানবিক বিষয়। কারণ এতে করোনাকালে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, পরিচালন ব্যয়, ঘাটতিসহ বিভিন্ন অজুহাতে আবাসিক ও বাণিজ্যিক খাতে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো এবং বারবার এমন মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক। পাশাপাশি এটি গ্রাহকের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই না। সব বিষয় বিবেচনা করে এই মুহূর্তে পানির দাম বাড়ানোর পায়তারা করা উচিত নয় ঢাকা ওয়াসার।
এএসএস/ওএফ