ভোজ্যতেলসহ খাদ্যসামগ্রী ও পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম না বাড়ানোর দাবি জানিয়ে দেশের ২৩ জন বিশিষ্ট নাগরিক বিবৃতি দিয়েছেন। আজ মঙ্গলবার সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

বিবৃতিতে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা বলেন, প্রায় ২ বছর যাবৎ করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ সীমাহীন আর্থিক দুরাবস্থায় নিমজ্জিত। কারোনা কালে বিপুল সংখ্যক মানুষ কাজ হারিয়েছে, আয় কমেছে অনেকের। এরকম পরিস্থিতিতে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিশেষ করে খাদ্যসামগ্রীর মূল্য ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। নতুন করে ভোজ্য তেল বিশেষত সাধারণ মানুষ যে তেল ব্যবহার করে সয়াবিন ও পামঅয়েল তেলের মূল্য বৃদ্ধি সাধারণ মানুষের জীবনকে আরও কষ্টকর করে তুলবে। 

পরিসংখ্যান বলছে করোনা মহামারিকালে বিপুল জনগোষ্ঠীর ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পেলেও, কোটিপটির সংখ্যা বেড়েছে। ফলে রাষ্ট্র-সমাজ সর্বত্র বৈষম্য ও সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ্যণীয় বলেও উল্লেখ করা হয় বিবৃতিতে। 

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সাম্প্রতিক স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সহিংসতায় শতাধিক প্রাণহানির ঘটনা এই সংকটের বহিঃপ্রকাশ বলে প্রতীয়মান। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বাজার ব্যবস্থায় একটি দুষ্টচক্র তথা সিন্ডিকেটের প্রভাব দেখা যাচ্ছে। এই সিন্ডিকেট বিভিন্ন সময়ে মজুদ ও কৃত্রিম সংকট ও বিভিন্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে মূল্য বৃদ্ধি করে সাধারণ ভোক্তার কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নেয়। এ ধরণের সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠলেও এদের বিরুদ্ধে কখনোই কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সরকারি সংস্থাগুলো আবারও বিদ্যুৎ, পানি ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। এ রকম পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে আমাদের দাবি হলো 
১. ভোজ্যতেলসহ খাদ্য সামগ্রীর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে হবে 
২. পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা  যাবে না 

বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ঐক্য ন্যাপের সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও  নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারওয়ার আলী, মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, শিক্ষক নেতা ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, বিএমএ-এর সাবেক সভাপতি ডা. রশিদ-ই-মাহাবুব, মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক এম. এম. আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সমাজ গবেষক ড. সেলু বাসিত, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা.  লেনিন চৌধুরী, গণতান্ত্রিক আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভেকেট জাহিদুল বারী, শ্রমিক নেতা মেসবাহউদ্দিন আহমেদ, গীতিকার ও সুরকার  
সেলিম রেজা, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী পারভেজ হাসেম, সংবাদকর্মী লতিফুল বারী হামিম, সমাজকর্মী আব্দুর রাজ্জাক, সংস্কৃতিকর্মী এ কে আজাদ, উঠোন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সভাপতি অলক দাস গুপ্ত, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের তথ্য ও প্রচার সম্পাদক দীপায়ন খীসা। 

এনএফ