দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি জনগণের কল্যাণেও কাজ করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন। 

সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাজারবাগে বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ আহ্বান জানান তিনি।

জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর প্রথমবারের মতো ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। 

বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ সভায় সভাপতিত্ব করেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডআই) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী। 

এসময় সিনিয়র সচিব বলেন, দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে না পারলে এভাবে দেশের উন্নয়ন হবে না। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক থাকতে হবে। 

তিনি বলেন, বাংলাদেশ পুলিশে বর্তমানে অনেক উদ্ভাবনী চিন্তা ও ধারণার প্রয়োগ হচ্ছে। এর মধ্যে কমিউনিটি পুলিশিং, বিট পুলিশিং ইত্যাদি অন্যতম। জনগণের কাছে যাওয়ার জন্য 'বিট পুলিশিং' একটি চমৎকার মেকানিজম। এটি একটি ইনোভেটিভ আইডিয়া, একটি ভালো উদ্যোগ। বিট পুলিশিংকে আরও শক্তিশালী করার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। অপরাধ দমনের চেয়ে অপরাধ যাতে না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী জনগণের বন্ধু হিসেবে পুলিশকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। 

দেশের উন্নয়নে মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে সহযোগিতার ভিত্তিতে জনগণের কল্যাণে কাজ করার ওপর জোর দেন তিনি। 

সভায় উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা দেশ ও জনগণের কল্যাণে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি ও আধুনিকায়নের লক্ষ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন। সিনিয়র সচিব স্বল্পতম সময়ের মধ্যে এসব বিষয় সমাধানের আশ্বাস দেন। 

সভাপতির বক্তব্যে আইজিপি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০৪১ সালে বাংলাদেশ আধুনিক ও উন্নত দেশে পরিণত হবে। উন্নত দেশের উপযোগী করে পুলিশকেও আধুনিক পুলিশ হিসেবে তৈরি করতে হবে। এ কাজ একদিনে হবে না। এজন্য সময় নিয়ে, পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আগামী ২০ বছরের জন্য 'প্রেক্ষিত পরিকল্পনা' প্রণয়নের মাধ্যমে পুলিশকে উন্নত দেশের উপযোগী পুলিশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। 

সিনিয়র সচিবের 'ডেভেলপমেন্ট পুলিশিং' এর ধারণাকে স্বাগত জানিয়ে আইজিপি বলেন, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের সঙ্গে জনগণের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। 

প্রায় চার ঘণ্টা ধরে অনুষ্ঠিত এ সভায় অতিরিক্ত আইজি, ঢাকায় পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান, ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
 
সভার শুরুতে করোনাকালে জীবন উৎসর্গকারী পুলিশ সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

এআর/জেডএস