অনুমোদনহীন বাস চলাচল বন্ধে আরও কঠোর হব : মেয়র তাপস
বাস রুট রেশনালাইজেশনের আওতায় ঢাকা নগর পরিবহনের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে চালু হওয়া রুটে অন্য বাস চলাচল বন্ধের বিষয়ে কমিটির সভাপতি ও দক্ষিণ সিটির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, অনুমোদনহীন বাস জব্দ করার জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। প্রয়োজনে আমরা আরও কঠোর হব।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২১তম সভা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
মেয়র বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন, ডিএমপি ও বিআরটিএ যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে। এ বিষয়ে আমরা আরও কঠোর হব। এরপর থেকে আমরা বাস শুধু জব্দ করব না, বিনষ্টও করব। জব্দ করা বাস প্রথমে শাহবাগে পুলিশের হেফাজতে থাকবে। এরপর সেখানে থেকে মাতুয়াইল ভাগাড়ে নিয়ে ধ্বংস করা হবে।
এসময় সবুজ গুচ্ছের (গ্রিন ক্লাস্টার) নতুন ৩ রুটে 'ঢাকা নগর পরিবহন' চালুর ঘোষণা দেন ডিএসসিসি মেয়র তাপস।
তিনি বলেন, গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর সফলতার সঙ্গে বাস রুট রেশনালাইজেশনের পরীক্ষামূলক যাত্রাপথ হিসেবে ঘাটারচর থেকে কাঁচপুর পর্যন্ত আমরা চালু করি। প্রথম যাত্রাপথ আমাদের ২১ নম্বর যাত্রাপথ। এটা সবুজ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত। সেই সবুজ গুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর যাত্রাপথ আমরা চিহ্নিত করেছি। এই তিন যাত্রাপথে আমরা কার্যক্রম পরিচালিত করব।
নতুন তিন যাত্রাপথ কবে নাগাদ চালু হবে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এসব রুটে আরও ভালো সেবা দিতে কী ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে, কী কী অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে, এজন্য পরামর্শকরা কাজ শুরু করেছেন। আগামী সভায় তারা নতুন যাত্রাপথের প্রতিবেদন ও সুপারিশমালা কমিটির কাছে জমা দেবে। পরে আমরা ভবিষ্যৎ করণীয় নির্ধারণ করে দ্রুততার সঙ্গে একটি নির্দষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই কাজটি করতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে।
পুরো সবুজ গুচ্ছে নগর পরিবহনের লক্ষ্যমাত্রা জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন, আমরা এখন আর একটি একটি করে যাত্রাপথ ধরছি না। আমরা এক সঙ্গে তিনটি যাত্রাপথ নিয়ে কাজ করছি। তার মানে আমাদের কার্যক্রম আরও বেগবান ও গতিশীল হচ্ছে। এই তিন যাত্রাপথ শেষ হলে পরবর্তী যাত্রাপথ আরও সহজ হয়ে যাবে। এই সবুজ গুচ্ছে আটটি যাত্রাপথ রয়েছে। একটা চালু আছে। বাকি তিনটি চালু হলে অর্ধেক সম্পন্ন হবে। পরে বাকি চারটি যাত্রাপথ শেষ করে সবুজ গুচ্ছ শেষ করা হবে। আমরা আশাবাদী। এই বছরেই এই কার্যক্রম আমরা শেষ করতে পারব।
যাত্রীসেবায় ঢাকা নগর পরিবহনের মূল লক্ষ্য জানিয়ে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, যেকোনো বিনিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু তার লাভ-লোকসান বোঝা যায় না। এখনই এটা নির্ধারণের সময়ও আসেনি। তবে আয় এবং খরচ মোটামুটি সমান। এই তিনটি যাত্রাপথ চালু হলে আরও লাভ হবে। আমাদের মূল বিষয় লাভ করা নয়। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে যাত্রী সেবা।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম অনলাইন প্লাটফর্মে সংযুক্ত হয়ে সভায় অংশ নেন।
চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে সময়বদ্ধ সূচির ওপর গুরুত্বারোপ করে উত্তর সিটির মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের সফলতা ও ঢাকার ওপর বাসের চাপ কমা পরস্পর সম্পৃক্ত। সেজন্য আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে আমাদেরকে সুনির্দিষ্ট সময়সূচি নিয়ে কাজ করতে হবে। এজন্য ডিটিসিএ আগামী সভায় চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণে সুনির্দিষ্ট সময়সূচি ও কর্মপরিকল্পনা দাখিল করবে।
সভা শেষে জানানো হয়, ২২ নম্বর যাত্রাপথ হিসেবে ঘাটারচর থেকে ভুলতা পর্যন্ত চলবে নগর পরিবহনের বাস। ২৩ নম্বর যাত্রাপথ ঘাটারচর থেকে মেঘনা ঘাট পর্যন্ত। ২৬ নম্বর যাত্রাপথ হচ্ছে ঘাটারচর থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে রাজউক চেয়ারম্যান এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরী, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের সাবেক নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রাকিবুর রহমান, ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নিবার্হী কর্মকর্তা ফরিদ আহম্মদ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এস এম সালেহ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এএসএস/জেডএস