রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি সাজিয়ে জন্মনিবন্ধন, ভোটার ও পাসপোর্ট করতে সহযোগিতা করার অভিযোগের মামলায় চট্টগ্রাম সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও দুদক উপ-পরিচালক মো. রফিকুজ্জামান সই করা নোটিশে তাকে আগামী ১০ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে হাজির হয়ে বক্তব্য প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) জনসংযোগ দপ্তর সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।

এর আগে ২০২১ সালের ২৫ মার্চ দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এ পাঁচ পুলিশ সদস্য, সাত পৌর কাউন্সিলর, দুই ইউপি চেয়ারম্যান, দুই ইউপি সচিব ও এক আইনজীবীসহ ৫৬ জনের বিরুদ্ধে ১২ মামলা করে দুদক। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে রোহিঙ্গাদের জন্মনিবন্ধন, ভোটার ও পাসপোর্ট করতে সহযোগিতা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই মামলাগুলোতে অন্যতম আসামি হলেন মিজানুর রহমান।

মিজানুর রহমানসহ মামলায় পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা হলেন- মহেশখালী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কর্মরত প্রভাষ চন্দ্র ধর, পেকুয়া থানার সাবেক ওসি ও বর্তমানে চট্টগ্রাম সিআইডির পরিদর্শক মিজানুর রহমান, কক্সবাজার ডিএসবির সাবেক পরিদর্শক ও বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কোর্ট পরিদর্শক কাজি দিদারুল আলম, ডিএসবির সাবেক এসআই ও বর্তমানে রাঙামাটিতে কর্মরত সাজেদুর রহমান, ডিএসবির সাবেক এএসআই ও বর্তমানে ফেনীতে কর্মরত জাহেদুল ইসলাম।

মামলায় অভিযুক্ত পৌর কাউন্সিলরদের মধ্যে রয়েছেন-কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাবেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা জাবেদ মোহাম্মদ কায়সার নোবেল, ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজানুর রহমান, ১০নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন সেতু, ৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিএনপি নেতা আশরাফুল হুদা সিদ্দিকী জামশেদ, সংরক্ষিত সদস্য (১০, ১১, ১২নং ওয়ার্ড) মহিলা দল নেত্রী নাসিমা আকতার বকুল এবং সাবেক নারী সদস্য (১, ২, ৩নং ওয়ার্ড) মহিলা দল নেত্রী হুমায়রা বেগম।

দুই ইউপি চেয়ারম্যান হলেন-মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের মোশারফ হোসাইন খোকন এবং কক্সবাজার সদরের পোকখালী ইউনিয়নের রফিক আহমদ। ইউপি সচিবরা হলেন- কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের প্রিয়তোষ দে। অপরজন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকার। অভিযুক্ত আইনজীবী হলেন-কক্সবাজার শহরের নতুন বাহারছড়া এলাকার বাসিন্দা ও কক্সবাজার আদালতের এজিপি আবুল কালাম আজাদ।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা ডিএসবি অফিসে তদন্তের জন্য পাঠানো আবেদন তদন্ত না করেই পাসপোর্ট অফিসে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ কারণে বাংলাদেশি হিসেবে পাসপোর্ট পেয়ে যায় রোহিঙ্গারা। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশি পাসপোর্ট পেতে পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতারা সরাসরি সম্পৃক্ত।

আরএম/আইএসএইচ