পাইকারি কেনা বেচা শেষে সকালে দ্বিতীয় দফায় জমজমাট হয়ে ওঠে রাজধানীর সবচেয়ে বড় কাঁচা বাজার কারওয়ান বাজার। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের উপস্থিতি অন্যান্য দিলের তুলনায় স্বাভাবিকভাবেই বেশি।

কারওয়ান বাজারে রাত থেকে ভোর পর্যন্ত চলে পাইকারি বেচাকেনা। সকাল থেকে কাঁচা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেন খুচরা বিক্রেতারা। এই বাজারে শহরের অন্যান্য এলাকার কাঁচাবাজারের তুলনায় সব ধরনের পণ্যের দাম তুলনামূলক কম থাকে। তাই যাদের সুযোগ আছে তারা এই বাজারের এসে ভিড় করেন কেনাকাটা করতে। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই ভিড় তুলনামূলক আরও বেড়ে যায়। ছুটির দিনে পুরো সপ্তাহের বাজার একটু কম দামে কিনে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্বাভাবিকভাবে ভিড় জমান ক্রেতারা।

সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীর অন্যান্য যেকোনো স্থানীয় বা এলাকাভিত্তিক বাজারের তুলনায় এখানে সব ধরনের সবজির তুলনামূলক কম দামে বিক্রি হচ্ছে। যে কারণে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে ক্রেতারা এসেছেন সপ্তাহের বাজার করতে।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়, আর ভালো মানের কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ফুলকপি বড় সাইজের প্রতি পিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, ভালো মানের সিম ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, আলু ২০ টাকা কেজি, টমেটো প্রতি কেজি ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকা কেজি, পেঁপে প্রতি কেজি ২০ টাকা, নতুন পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৩০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০ টাকা, ব্রুকলি ছোট সাইজের প্রতি পিস ২০ টাকা আর মাঝারি সাইজের ৩০ টাকা প্রতি, মিষ্টি কুমড়া(কাঁচা) মাঝারি সাইজে প্রতি পিস ৫০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, সিমের বিচি প্রতি কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা শহিদুল ইসলাম বলেন, অন্য সব স্থানীয় বাজারের চেয়ে কারওয়ান বাজারে খুচরা সবজির দাম তুলনামূলক কম থাকার কারণে আমাদের গাড়ি ভাড়া, শ্রমিকের জন্য আলাদা করে খরচ হয় না। এখানকার পাইকারি বাজার থেকে কিনে এখানেই আমরা খুচরা বিক্রি করি। তাই স্থানীয় সব বাজারের চেয়ে প্রতিটি পণ্যে কমপক্ষে ১০-২০ টাকা কেজিতে কম থাকে। এই মালই যদি আমরা মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, গুলশান বা যেকোনো জায়গায় গিয়ে বিক্রি করি তাহলে আবার দাম বেশি পড়ে যাবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে সাধারণ ক্রেতারা বাজার করতে কারওয়ান বাজারের আসে। তারা একবারে এসে বাজার করে নিয়ে যায়। কেউ কেউ প্রাইভেটকার নিয়েও এখানে বাজার করতে আসে। এছাড়া সাধারণ ক্রেতারা নিয়মিত এখানে এসে বাজার করেন, কারণ তারা জানেন এখানে তুলনামূলক কম দামে সব পাওয়া যায়। আর শুক্রবারে ক্রেতার সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় বেশি থাকে।

রাজধানীর মালিবাগ এলাকা থেকে কারওয়ান বাজারে সপ্তাহের বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী পারভেজ আহমেদ। তিনি বলেন, চাকরি করার কারণে শুক্রবারে শুধু সময় পাই। তাই সকালে কারওয়ান বাজার চলে আসি, পুরো সপ্তাহের বাজার এখান থেকে করে নিয়ে যাই। একটু দূর হলেও এখানে আসার একটি সুবিধা হলো তুলনামূলক কম দামে পণ্য কেনা যায়। এছাড়া বাজারের সব ধরনের পণ্য এখানে এক সঙ্গে পাওয়া যায়। শুক্রবার বেশিরভাগ চাকরিজীবীই এখানে এসে পুরো সপ্তাহের বাজার করে নিয়ে যান।

এএসএস/এসকেডি