জমি অধিগ্রহণে আমার পরিবারের কোনো সম্পর্ক নেই
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চাবিপ্রবি) জমি অধিগ্রহণের সঙ্গে আমার বা আমার পরিবারের আর্থিক কোনো সম্পর্ক নেই। এ বিষয়ে যে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে তা অসত্য, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর হেয়ার রোডের নিজ বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগ উঠেছে, জেলা শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে লক্ষ্মীপুর গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য যে জমি অধিগ্রহণ হয়েছে সেখানে মৌজা দরের চেয়ে কয়েক গুণ বেশি দাম দেখিয়ে জমি দলিল করেছেন কয়েকজন। এ কারসাজিতে জড়িতদের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রীর নিকটাত্মীয়ও রয়েছেন।
মন্ত্রী বলেন, চাঁদপুরে আমার ক্রয় সূত্রে কোনো জমি নেই। পৈত্রিক সূত্রে থাকতে পারে। আমার কাছে যা তথ্য প্রমাণ আছে, তা থেকে বলতে পারি, আমার বড় ভাই অধিগ্রহণের আগেই জমি বিক্রি করে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, আমার বা আমার পরিবারের এই জায়গা থেকে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই অভিযোগ ভিত্তিহীন, উদ্দেশ্য প্রণোদিত। যারা এমন তথ্য ছড়িয়ে বেড়াচ্ছেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই জায়গায় আমার বা পরিবারের কারও জমি নেই। রাজনৈতিক কোনো সহকর্মীর জমি থাকতে পারে।’
তিনি বলেন, ‘আমার পরিবারের কেউ কোনো ধরনের দুনীতির সঙ্গে জড়িত নয়। তবে অন্য কেউ দুর্নীতি করেছে কি না তা তদন্ত করে দেখা উচিত এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চাঁদপুরে যখনই কোনো উন্নয়ন কাজে হাত দেওয়া হয় একটি মহল এর প্রবল বিরোধিতা করে। তবে কোনো ষড়যন্ত্র কিংবা চক্রান্ত এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বাধা হতে পারবে না। উন্নয়ন কাজ ও একাডেমিক কার্যক্রম এগিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, দুর্নীতি তদন্ত ও অনুসন্ধানে সরকারের বেশ কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। আমি আশা করব ওইসব সংস্থা তদন্ত করে প্রকৃত তথ্য বের করবে। দুর্নীতি হয়ে থাকলে যারা জড়িত বলে প্রমাণ পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, একটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদে এই বিষয়ে আমার ভাই ও আমাকে জড়ানো হয়েছে। তবে আমি খুব স্পষ্টভাবে কিছু তথ্য জানাতে চাই, সেটি হলো- চাঁদপুরে আমার ক্রয়সূত্রে কোনো জমি নেই। উত্তরাধিকার সূত্রে আমার পৈতিক ভিটায় কোনো জমি হয়তো থাকতে পারে। কিন্তু আমার কোনো জমি নেই।
তিনি বলেন, রিপোর্টে যে নাম এসেছে, ডা. টিপু, তিনি একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। তিনি আমার বড় ভাই। প্রকাশিত রিপোর্টে এখানে আরও কিছু মানুষকে আমার পরিবারের সদস্য বলা হয়েছে। তারা আমার রক্তের সম্পর্কের বা পরিবারের সদস্য নয়। কিন্তু তারা আমার রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। আমি জানি না আমার রক্তের পরিবারের সদস্যরা আমার জন্য কোনো ঝুঁকি নেবেন কি না! কিন্তু আমার রাজনৈতিক পরিবারের সদস্যরা আমার জন্য ঝুঁকি নেবেন।
চাঁদপুরের রাজনৈতিক নেতাদের এ বিষয়ে কোনো ইন্ধন আছে কি না এমন প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, এখনই আমি এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। দলীয় ফোরামে আমি এটি উত্থাপন করব।
ভাঙনপ্রবণ এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে- এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, চাঁদপুর শহর ভাঙনের কারণে অনেক ছোট ও অনেক ঘনবসতিপূর্ণ। আমরা জানি, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কোনো সমস্যা হলে হাইওয়ে বন্ধ হয়ে যায়। সেই বিবেচনায় আমরা জমিটি পছন্দ করি। এছাড়া আমরা কোথায় জমি পছন্দ করছি, তার সঙ্গে প্রশাসনের লোকজনও জড়িত ছিল। এই জমির সঙ্গে টেকসই বাঁধ রয়েছে। এছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ছাড়পত্রও দিয়েছিল।
এসময় আগামী শিক্ষাবর্ষেই চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রম শুরু হতে পারে বলে জানান তিনি।
এএজে/এসএম/জেএস