ধাক্কা দিয়ে মারামারি, তারপর সব ছিনিয়ে নেয় চক্রটি
চট্টগ্রামের হালিশহরের নয়াবাজার ও কোতোয়ালি থানার পলো গ্রাউন্ড মাঠ এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্রের ৭ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোরে ১টি দেশীয় এলজি, ২ রাউন্ড কার্তুজ ও ছুরিসহ তাদের গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ বলছে, এই চক্রটি টার্গেট করা ব্যক্তিকে ধাক্কা দিয়ে মারামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনতাই করে। এই চক্রে ১০ থেকে ১২ জন সদস্য কাজ করে। এর মধ্যে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন।
তিনি বলেন, গত সোমবার (২৪ জানুয়ারি) বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মী তনজিরুল ইসলাম কোতোয়ালি থানার তিন পুলের মাথা এলাকার আল আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকা উত্তোলন করেন। এরপর তিনি হেঁটে অফিস যাওয়ার পথে জুবিলী রোডের রয়েল টাওয়ারের বিপরীতে পৌঁছালে অজ্ঞাতনামা ৫ থেকে ৬ জন তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি রাস্তার উপর পড়ে যান। উঠে দাঁড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে আরও ৫-৬ তার সামনে চলে আসে। এ সময় তিনি তাদের কাছে ধাক্কা দেওয়ার কারণ জানতে চান। কিন্তু আসামিরা গালিগালাজ করে ভিকটিমকে কিল ও ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায়ে ১০ থেকে ১২ জনের চক্রটি অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে তার কাছে থাকা ১ লাখ টাকা ছিনতাই করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভিকটিম কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তিনি বলেন, মামলা দায়েরের পর ঘটনার তদন্ত নেমে ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার ভোরে হালিশহর নয়াবাজার বিশ্ব রোড থেকে মো. রকি (২৪), রফিকুল ইসলাম বাপ্পি (২৭), মো. সাইফুল ইসলাম (৩০), মো. তৌহিদুল ইসলাম তপু (২৪) ও মো. জসিম উদ্দিনকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পলো গ্রাউন্ড মাঠের পাশ থেকে মো. সাহাবুদ্দিন (৩২) ও মো. তাজুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন বলেন, পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। তারা দীর্ঘদিন ধরে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই ও ডাকাতি করছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। তাদের কাছ থেকে ছিনতাই করা ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গ্রেফতার মো. সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে, অস্ত্র মাদক, দ্রুত বিচারসহ পৃথক আইনে মোট ২৮টি মামলা আছে। এছাড়া আসামি তাজুলের বিরুদ্ধে মাদক ও দণ্ডবিধি আইনে মোট ৩টি মামলা আছে। এছাড়া অন্য আসামিদের বিরুদ্ধেও কয়েকটি মামলা আছে।
নেজাম উদ্দিন বলেন, ছিনতাইকারী চক্রটি কখনো কখনো প্রেমিক প্রেমিকাকে টার্গেট করে। নির্জন স্থানে প্রেমিক প্রেমিকা দেখলে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে মোবাইলসহ সবকিছু ছিনিয়ে নেয় তারা। এছাড়াও বাসে যাত্রী বেশে উঠে টার্গেট করা যাত্রীকে ধাক্কা দিয়ে তার সঙ্গে মারামারির পরিস্থিতি সৃষ্টি করে সবকিছু হাতিয়ে নেয় চক্রটি।
কেএম/এসকেডি