দাম বাড়ালে ৩০ শতাংশই সিগারেট ছেড়ে দেবে
সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো গেলে ৩০ শতাংশ সিগারেট ব্যবহারকারীই সিগারেট ব্যবহার ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবেন। এছাড়াও আরও ৩০ শতাংশ মানুষ সিগারেট ব্যবহার কমিয়ে দেবেন।
গত বছরের নভেম্বরে দেশের পাঁচটি জেলার ৬৫০টি তামাক ব্যবহারকারী নিম্ন আয়ের পরিবারের ওপর পরিচালিত এক জরিপে এ তথ্য উঠে আসে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে উন্নয়ন সমন্বয় পরিচালিত ‘তামাক পণ্যে কর বৃদ্ধির সম্ভাব্য প্রভাব’ শীর্ষক জরিপের ফলাফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ পরিসংখ্যান উপস্থাপন করা হয়।
তামাকের ব্যবহার কমাতে সকল তামাক পণ্যের ওপর যথাযথ করারোপই সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। তবুও তামাক পণ্যের দাম বেশি বৃদ্ধি করলে ব্যবহারকারীরা আগের মাত্রায় তামাক ব্যবহার বজায় রাখতে খাদ্য বা অন্য পণ্য বাবদ ব্যয় কমিয়ে দিতে পারেন- এমন আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতে জরিপভিত্তিক গবেষণা পরিচালনা করে উন্নয়ন সমন্বয়।
গবেষণায় প্রতিষ্ঠানটি দেখিয়েছে, সিগারেটের দাম বাড়ানো হলে ৭১ শতাংশ মানুষ আগের মতো সিগারেট ব্যবহার অব্যাহত রাখতে খাদ্য বাবদ ব্যয় কমাবে না। সিগারেটের দাম উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বাড়ানো গেলে ৩০ শতাংশ সিগারেট ব্যবহারকারীই সিগারেট ব্যবহার ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবেন। আরও ৩০ শতাংশ মানুষ সিগারেট ব্যবহার কমিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের সভাপতি অধ্যাপক ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এ আলোচনায় প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবে মিল্লাত, এমপি (সিরাজগঞ্জ-২); এবং ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী, এমপি (গাইবান্ধা-১)। প্যানেল আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন- হোসেন আলী খোন্দকার (সমন্বয়কারী, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল); এবং মো. মোস্তাফিজুর রহমান (লিড পলিসি অ্যাডভাইজর, সিটিএফকে, বাংলাদেশ)। এছাড়াও বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংস্থার প্রতিনিধি ও গবেষকবৃন্দ আলোচনায় অংশ নেন।
তামাক পণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ফলে খাদ্য বা অন্য পণ্য বাবদ ব্যয় কমিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলে আলোচকরা অভিমত ব্যক্ত করেন। কাজেই সংসদ সদস্য, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, তামাকবিরোধী সামাজিক সংস্থাসহ সকল অংশীজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপ নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা।
ড. আতিউর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে তামাকমুক্ত দেশ গড়ার যে লক্ষ্য ঘোষণা করেছিলেন সেখানেও তামাক পণ্যের ‘বর্তমান শুল্ক কাঠামো সহজ’ করার মাধ্যমে তামাক ব্যবহার কমিয়ে আনার পাশাপাশি এগুলো বিক্রয় থেকে পাওয়া রাজস্বের পরিমাণ বৃদ্ধির নির্দেশনা ছিল। সে আলোকেই আসন্ন অর্থবছরের বাজেটে সিগারেটসহ সকল তামাক পণ্যে কার্যকর করারোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
টিআই/এসকেডি