চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে সম্প্রতি মারধরের শিকার সাবেক পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিমুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর নির্দেশেই আমার ওপর হামলা হয়েছে। 

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সেলিমুল হক চৌধুরী জানান, দলের স্থানীয় এক নেত্রীর বাসায় কয়েকজন রাজনৈতিক সহকর্মীসহ অবস্থানের সময় এমপির অনুসারীরা তার ওপর অতর্কিত হামলা চালান। ঘটনার পর থেকে এমপির লোকজন তাকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। হত্যার উদ্দেশ্যে তার ওপর হামলা হলেও পুলিশের উপস্থিতির কারণে তিনি বেঁচে যান।

সেলিমুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, বর্তমান এমপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কোনো নেতাকর্মী নেই। সরকারি দলের দুরবস্থা বাঁশখালীতে। নিজস্ব বাহিনী ও জামায়াত-বিএনপির লোক দিয়ে সংগঠন চালানো হচ্ছে। বাঁশখালীতে এমপি একচ্ছত্র আধিপত্য কায়েম করতে চায়। আর এতে বাধা মনে করা হচ্ছে আমাকে ও মুক্তিযোদ্ধাদের। যে কারণে আমাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। পুলিশ গিয়ে আমাকে উদ্ধার না করলে তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলত।

তিনি বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান আগে থেকেই মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর ক্ষুব্ধ। বাঁশখালীতে মুক্তিযুদ্ধ হয়নি বলে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের অপমান করেছেন। যে কারণে মুক্তিযোদ্ধারা উনার ডাকে সাড়া দেন না। নানা কারণে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে ওনার দূরত্ব রয়েছে।

এ সময় তার ওপর হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন সেলিমুল হক।

উল্লেখ্য, গেল ১৮ জানুয়ারি সেলিমুল হক চৌধুরীর ওপর হামলা ও মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। 

এ বিষয়ে সেলিমুল হক বলেন, গত ১৮ জানুয়ারি উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হীরা মনির মিয়ার বাজারের বাসায় দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। সেখানে হিরা মনির পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও আরও দুজন ছিলেন। তাদের বাসায় বসে কথা বলছিলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে ৮টার দিকে একদল লোক গিয়ে ওই বাড়িতে বাইরে থেকে তালা লাগিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগের কর্মী পরিচয় দিয়ে সিরাজ নামে এক যুবকের নেতৃত্বে চারজন বাড়িতে ঢুকে আমাকে কিল-ঘুষি মারে ও গালাগালি করে।

তিনি আরও বলেন, একপর্যায়ে সিরাজ বলে, তুই এমপির সঙ্গে বেয়াদবি করছিস কেন? তারা আমার শরীরে থাকা শার্ট ছিঁড়ে ফেলে। পরে পুলিশকে ফোন করে বিষয়টি জানানো হলে তারা এসে আমাকে উদ্ধার করে।

এদিকে, বাঁশখালী পৌরসভার সদ্য সাবেক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সেলিমুল হক চৌধুরীকে মারধর করা হয়েছে— এমন অভিযোগে চার জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে। ১৯ জানুয়ারি সেলিমুল হক চৌধুরী নিজে বাদী হয়ে বাঁশখালী থানায় মামলা করেন।

মামলার আসামিরা হলেন— মো. সিরাজ (৩৭), মো. ইলিয়াস (৩৫), মো. মিনারুল ইসলাম (৩৪) ও মো. দুদু মিয়া (২৮)। এছাড়া অজ্ঞাত আরও ২-৩ জনকে মামলার আসামি করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) সকালে কক্সবাজারের রামু থেকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান দুই আসামিকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। গ্রেফতার দুজন হলেন- মো. সিরাজ ও মিনারুল ইসলাম। তারা বাঁশখালীর উত্তর জলদি এলাকার বাসিন্দা। 

কেএম/ওএফ