কতিপয় ভিসি শিক্ষার্থীদের সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলছেন
দেশের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা শিক্ষার্থীদের সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলছেন বলে অভিযোগ করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু।
বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।
বিজ্ঞাপন
হাসানুল হক ইনু বলেন, কিছু সমস্যা যা কাঁটার মতো পায়ে বিঁধছে। সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের কারও কারও কাণ্ডজ্ঞানহীন কথাবার্তা, আচার-আচরণ দুঃখজনক। ভাব দেখে মনে হচ্ছে, কতিপয় ভিসি সাহেবরা ছাত্র-ছাত্রীদের সরকারের বিরুদ্ধে খেপিয়ে তোলার মিশনে নেমেছেন। এটা দুঃখজনক। এ ব্যাপারে সরকারের নজর দেওয়া দরকার।
তিনি বলেন, মৌসুমে মৌসুমে জঙ্গি তাণ্ডব, জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এতে প্রমাণ হয় যে, হেফাজত-জামায়াত-জঙ্গি এরা বদলায়নি। এরা বাংলাদেশের রেজিস্টার্ড বেঈমান। পাকিস্তান পন্থার ধারক ও বাহক। এদের আত্মা পাকিস্তানি। এই সাম্প্রদায়িক চক্র বাংলাদেশের ধর্মরিপেক্ষতাকে হারাম বলে। আর ভারত, আমেরিকা, ইংল্যান্ডে গেলে তারা ধর্মনিরপেক্ষতাকে হালাল বলে। আরাম মনে করে। এই দ্বিমুখী চালবাজির রাজনীতি বন্ধ করা দরকার। এটা প্রমাণ হয় যে, জেএমবি-জামায়াত-জঙ্গিরা হচ্ছে মাঠের অ্যাক্টর। জামায়াত হচ্ছে ডিরেক্টর। বিএনপি হচ্ছে প্রডিউসার। সুতরাং এরা পাক রুহানি শক্তি দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত। জেনেটিকালি সম্পর্কযুক্ত। তিন পক্ষকেই দমন ও বিদায় জানানো উচিত।
এ সময় হেফাজতের বিভিন্ন তাণ্ডব, ধ্বংস ও এর ক্ষয়ক্ষতির ওপর শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি জানিয়ে জাসদ সভাপতি বলেন, দেশের ভবিষ্যৎ পথ চলার জন্য স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে সংবিধান পর্যালোচনা করা দরকার। সংবিধান পর্যালোচনা ও সংস্কার করা দরকার। সেজন্যই সংবিধান পর্যালোচনার জন্য সংসদের বিশেষ কমিটি গঠনের প্রস্তাব করছি।
দুর্গাপূজার সময় সাম্প্রদায়িক হামলার ওপর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়ার দাবি জানান ইনু।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ইউপি নির্বাচনে যে রক্তারক্তি-খুনোখুনি হয়েছে, তার দায় প্রশাসন এবং পুলিশ এড়াতে পারে না। তাদের এই দায় নেওয়া উচিত এবং সংশোধন হওয়া উচিত। নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য ওঠানামা মূল্যস্ফীতির জন্য নয়, বাজার কারসাজির জন্য। এ ব্যাপারে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষে জাতির পিতার ভাস্কর্য, ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে। অনেকেই যারা মুজিব কোর্ট পরে, তারা ভয়ে মুজিব মিনার বানানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এটা দুঃখজনক।
১৯৭১ সালে গণহত্যার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়ার দাবি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তোলার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান হাসানুল হক ইনু।
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন ও কমিশন গঠন জরুরি বলে মনে করেন ইনু। দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক হামলার কথা তুলে ধরে জাসদ সভাপতি বলেন, দেখে মনে হয়েছে, ওইখানে সরকার নেই, আইন নেই। আওয়ামী লীগ নেই। প্রশাসন নেই। জাসদ নেই। ১৪ দলের এমপি-মন্ত্রী নেই। উন্নয়ন হচ্ছে যেমন সত্যি, তেমন বাংলাদেশপন্থা ও পাকিস্তানপন্থার যুদ্ধ চলছে তাও সত্য।
আন্তঃসীমান্ত নদীর পানি বণ্টন নিশ্চিতে সরকারকে উদ্যোগ নেওয়ার ও নদী কমিশনকে সক্রিয় করার আহ্বান জানান তিনি।
এইউএ/ওএফ