শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে বাদ দেওয়ার আহ্বান গুরুত্বপূর্ণ নয়
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, র্যাবকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশন থেকে র্যাবকে বাদ দেওয়ার জন্য যে ১২টি মানবাধিকার সংগঠন জাতিসংঘে চিঠি দিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে দুই-তিনটা ছাড়া বাকিগুলো নামসর্বস্ব। এগুলোর নাম আমরা আগে শুনিনি। এসব সংগঠন এরই মধ্যে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়ে ফেলেছে। সুতরাং তাদের এই আহ্বান খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
হাছান মাহমুদ বলেন, এসব সংগঠন চিঠি দিয়েছে ৮ নভেম্বর। এরপর আরও আড়াই মাস অতিক্রম হয়েছে। এতদিন পরে হঠাৎ কেন মিডিয়ায় বিষয়টি নিয়ে আসা হলো, এটির পেছনে একটি উদ্দেশ্য আছে। এটি যদি তখন প্রকাশ হতো তা নিয়ে প্রশ্ন থাকত না। কিন্তু আড়াই মাস পরে কেন এটি প্রকাশ করা হলো? এটির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।
তিনি বলেন, আমরা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে দেখেছি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে বিবৃতি দিতে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচও যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করার জন্য নানাভাবে চেষ্টা তদবির করেছে। কিন্তু ইসরায়েলি বাহিনী যখন নির্বিচারে গুলি ছুড়ে ফিলিস্তিনদের হত্যা করে তখন এসব সংগঠন বিবৃতি দেয় না। এছাড়া পৃথিবীর অন্যান্য জায়গায় যখন চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়, যুক্তরাষ্ট্রে যখন মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয় তখন তারা বিবৃতি দেয় না। এসব সংগঠন আসলে বিশ্বাসযোগ্যতা ইতিমধ্যে হারিয়ে ফেলেছে। সুতরাং তাদের এই আহ্বান খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। এখানকার বেশিরভাগ সংগঠনই হচ্ছে নামসর্বস্ব।
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারের কাছে সুনির্দিষ্ট তথ্য প্রমাণ আছে বিএনপি বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। এমনকি নয়া পল্টনের অফিসের ঠিকানা দিয়ে তারা লবিস্ট ফার্মের সঙ্গে চুক্তি করেছে। প্রধানমন্ত্রীর পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা করার উদ্দেশ্যে যুক্তরাষ্ট্রে বিএনপি নেতারা এফবিআই এজেন্ট ভাড়া করেছিল। সেই এফবিআই এজেন্টকে যুক্তরাষ্ট্রে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানো হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী ইসরায়েলের এজেন্টের সঙ্গে যে বৈঠক করেছে, সেই বৈঠকের ছবি পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এগুলোর সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ আমাদের কাছে আছে। এছাড়া যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিএনপি ও জামায়াত লবিস্ট নিয়োগ করেছিল। বিএনপি কি এগুলো অস্বীকার করতে পারবে? বিএনপির অপকর্ম যখন আজকে বেরিয়ে এসেছে, তখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার জন্য আবোল-তাবোল কথা বলা শুরু করেছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ করে। তাদের অবৈধ অর্থ লবিস্ট ফার্মে লগ্নি করে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য, দেশের রফতানি বাণিজ্য বাধাগ্রস্ত করার জন্য, দেশের সমৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধিকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য। বিএনপি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
হাছান মাহমুদ বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিএনপির জনগণের ওপর কোনো আস্থা নেই। এ জন্য তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সেই ষড়যন্ত্রের মধ্যে অন্যতম প্রধান হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে বিদেশে লবিস্ট ফার্ম নিয়োগ। একটি রাজনৈতিক দল দেশের বিরুদ্ধে যখন এ ধরনের ষড়যন্ত্র করে, তারা দেশের রাজনীতি করার অধিকার রাখে কি না সে প্রশ্ন এসে দাঁড়ায়।
টিআইবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করে
ড. হাসান মাহমুদ বলেন, টিআইবি কাজ করে দুর্নীতি নিয়ে। এ রাজনৈতিক ইস্যুতে বিবৃতি দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে টিআইবি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করে। টিআইবির এ বিবৃতির সঙ্গে বিএনপির বিবৃতির মিল আছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, টিআইবি বলেছে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ নিয়ে যে আইন করা হচ্ছে তা জনপ্রত্যাশা পূরণ করবে না। নির্বাচন কমিশন গঠন এবং গঠনের লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতির সংলাপ, সংলাপের প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে একটি আইন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি হচ্ছে রাজনৈতিক। এটির সঙ্গে তো দুর্নীতির কোনো সম্পর্ক নেই। টিআইবি কাজ করে দুর্নীতি নিয়ে। এই রাজনৈতিক ইস্যুতে বিবৃতি দিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যেও কাজ করে টিআইবি।
হাছান মাহমুদ বলেন, আইপিটিভি কোনো সংবাদ প্রচার করতে পারবে না। আমরা দেখেছি, যারা আইপিটিভি বা ইউটিউবে সংবাদ প্রচার করে অনেকেই চাঁদাবাজির সঙ্গে যুক্ত। তারা তাদের কর্মীদের বেতন দেয় না। ফলে তাদের কর্মীরা সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার করার জন্য মানুষের কাছ থেকে টাকা পয়সা নেয়। নীতিমালায় সংবাদ প্রচারের বিষয়টি নিষেধ করা আছে।
কেএম/এসকেডি