চসিকে বাড়ছে গৃহকর
১০ বছর আগে নির্ধারিত হারের পরিবর্তে পঞ্চবার্ষিক গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের আলোকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) গৃহকর আদায় করতে পারবে।
মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগের সিটি করপোরেশন -২ শাখার উপসচিব মোহাম্মদ জহিরুল ইসলামের সই করা এক চিঠিতে পঞ্চবার্ষিক গৃহকর পুনঃমূল্যায়নের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি জানানো হয়। চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমকে চিঠিটি দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
চিঠিতে বলা হয়, চট্টগ্রাম মহানগরীতে বিগত ১০ বছর পূর্বের নির্ধারিত হারে জনসাধারণ কর প্রদান করছে। এতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জনগণের নাগরিক সেবা ও বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড গতিশীল রাখাসহ সিটি করপোরেশনের আয় বৃদ্ধির স্বার্থে ব্যক্তিমালিকানাধীন ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হোল্ডিংসমূহের বিগত ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের প্রথম কোয়াটারে প্রকাশিত গৃহকর পুনঃমূল্যায়নের আলোকে গৃহকর আদায়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে পঞ্চবার্ষিক করে পুনঃমূল্যায়নের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের চিঠি এসেছে। বুধবার চিঠিটি দেখব, এরপর এই বিষয়ে মন্তব্য করব।
রেজাউল করিম চৌধুরী মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর পঞ্চবার্ষিক কর পুনঃমূল্যায়নের ভিত্তিতে গৃহকর আদায়ের ওপর স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের দেওয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে দুই দফা চিঠি দেয় চসিক। সর্বশেষ গত ২ জানুয়ারি স্থানীয় সরকার বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিবকে চিঠি দেয় সিটি করপোরেশন। চিঠিতে বলা হয়, সিটি করপোরেশনের করবিধি ১৯৮৬ এর ২১ বিধি অনুযায়ী প্রতি পাঁচ বছর পরপর গৃহকর পুনর্মূল্যায়নের এখতিয়ার সিটি করপোরেশনগুলোকে দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, সিটি করপোরেশনের আয়ের মূল উৎস গৃহকর। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ, নগরীর আবর্জনা অপসারণ, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সড়ক আলোকায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ বহুমুখী কাজ গৃহকর ও রেট থেকে নির্বাহ করা হয়।
বর্তমান আয়ে ৬০ লাখ মানুষের নগরীতে ‘নাগরিক সেবা ও বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের’ ব্যয় নির্বাহ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে চিঠিতে জানানো হয়।
উল্লেখ্য,২০১৬ সালের মার্চে ‘পঞ্চবার্ষিকী কর মূল্যায়ন কর্মসূচি’র মধ্য দিয়ে নতুন করে হোল্ডিংয়ের কর নির্ধারণের কাজ শুরু করেছিলেন তখনকার মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। মূল্যায়ন শেষে ওই বছরের ৩১ অগাস্ট তা প্রকাশ করা হয়। নতুন কর মূল্যায়নের পর থেকেই নগরবাসী অতিরিক্ত হোল্ডিং ট্যাক্স ধার্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে। পাশাপাশি ‘করদাতা সুরক্ষা পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন নতুন পদ্ধতিতে ভাড়ার ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্সের পরিবর্তে আগের নিয়মে স্থাপনার আয়তন হিসেবে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ ও আদায়ের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে।
পরে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে ওই উদ্যোগ আটকে যায়। পাশাপাশি মন্ত্রণালয় হোল্ডিং ট্যাক্স কার্যক্রম অটোমেশনের আওতায় এনে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত কর পুনর্মূল্যায়ন স্থগিত রাখতে এবং আগের হারে গৃহকর আদায়ের নির্দেশ দেওয়া ছিলো। মঙ্গলবারের চিঠির মাধ্যমে এই স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।
কেএম/ওএফ