মুখ লুকিয়ে দুদক ছাড়লেন ‘কারাগারের জেলার’
সিরাজগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মোহাম্মদ ইউনুস জামান। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ডাকে সাড়া দিয়ে হাজির হয়েছিলেন সেগুন বাগিচায় সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে।
কারা অধিদফতরের বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ, বন্দি বেচা-কেনা ও অবৈধ ক্যান্টিন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অভিযোগে দুদকের অনুসন্ধান টিমের মুখোমুখি হন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদে টিমের অধিকাংশ প্রশ্নের জবাব দেননি বলে জানা গেছে। অধিকাংশ প্রশ্নের জবাবে তিনি চুপ ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেননি তিনি। হাতে থাকা ফাইল দিয়ে মুখ আড়াল করে বের হলেন দুদকের পেছনের গেট দিয়ে। অভিযোগের বিষয়ে জানতে সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্ন। কিন্তু তিনি নির্বাক ও অনড়। কোনো প্রশ্নেরই জবাব মেলেনি। মুখ লুকিয়েই দুদকের সীমানা ছাড়লেন সদ্য বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বদলি হওয়া জেলার ইউনুস জামান।
সোমবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মো. সাইদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি টিম। টিমের অপর সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ। আর তদারকি কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সংস্থাটির পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন। যদিও এর আগে আসা কর্মকর্তারাও সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান।
আজ আরও যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তারা হলেন- ঢাকা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স টিপু সুলতান, ময়মনসিংহ বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স জাহাঙ্গীর হোসেন ও জামালপুর জেলা কারাগারের জেলার আসাদুর রহমান। এছাড়া সাবেক আইজি প্রিজন্স আশরাফুল ইসলাম ও সাবেক অতিরিক্ত আইজি প্রিজন্স মো. ইকবাল হাসানকে তলব করে চিঠি দেওয়া হলেও তারা উপস্থিত হননি।
এর আগে ৬ জানুয়ারি তাদের তলব করে সদর দফতরের কারা মহাপরিদর্শক বরাবর নোটিশ দেয় দুদক। অভিযোগের বিষয়ে জানা যায়, ক্ষমতার অপব্যবহার ও ঘুষ গ্রহণ করে কারা অধিদফতরের বিভিন্ন পদে জনবল নিয়োগ, বন্দি বেচা-কেনা, বন্দিদের অবৈধ সুবিধা ও লেনদেন এবং অবৈধ ক্যান্টিন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি টাকা আত্মসাত করে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ।
বন্দি বেচা-কেনার বিষয়ে অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন নতুন নতুন বন্দি আসে দেশের বিভিন্ন কারাগারে। কারা ফটকে প্রবেশের পর তাদের নাম, ঠিকানাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় তথ্য কারাবিধি অনুসারে রেজিস্টারে লেখা হয়। এসময় কারাগারের বিভিন্ন ওয়ার্ডের দায়িত্বে থাকা মেট ও রাইটাররা অপেক্ষায় থাকেন। মামলার ধরণ, পোশাক পরিচ্ছদ দেখে দায়িত্বরত কারা কর্মকর্তাদের ইশারায় ‘দর’ দিয়ে এসব বন্দি কিনে নেন তারা। পরে বন্দিদের ওপর অমানবিক নির্যাতন করে স্বজনদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা হয়। পরে ওই টাকা থেকে সংশ্লিষ্ট কারা কর্মকর্তাদের অংশ পরিশোধ করার পর বাকী টাকা ভোগ করেন তারা।
আরএম/এসএম