প্রায় ২২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আলোচিত গাড়ি ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী মো. মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এছাড়াও মনিরের নামে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ২৩টি প্লট সন্ধান মিলেছে, যে বিষয়ে আরও বিস্তারিত তদন্ত প্রয়োজন বলেও মামলার এজাহারে বলা হয়েছে।

সোমবার দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ সংস্থাটির সহকারী পরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরী মামলাটি দায়ের করেন। দুদক উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। গত ৯ জানুয়ারি মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০২০ সালে গোল্ডেন মনিরের অবৈধ সম্পদের খোঁজে মাঠে নামে দুদক। তার সম্পদ অনুসন্ধান কর্মকর্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় উপপরিচালক সামছুল আলমকে। এরপর উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও উপপরিচালক মামুনুর রশীদ চৌধুরীকে। 

অনুসন্ধানের স্বার্থে ওই বছরের ২৬ নভেম্বর গোল্ডেন মনির ও তার স্ত্রী রওশন আক্তারের নামে/বেনামে থাকা সম্পদের হিসাব দাখিলের নোটিশ দেয় দুদক। এরপর মনির ২০২১ সালের ২ মার্চ সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন। আর তার স্ত্রী রওশন আক্তার ২০২১ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারিতে সম্পদ বিবরণী দাখিল করেন।

গোল্ডেন মনির তার সম্পদ বিবরণীতে ২০০৯ সালের জুন থেকে ২০২০-২১ অর্থবছর পর্যন্ত ৫৫ কোটি ৭৭ লাখ ৯৮ হাজার ২০১ টাকার সম্পদের তথ্য দেন। দুদকের অনুসন্ধানে ৩৩ কোটি ৯৫ লাখ ২৪ হাজার ৭৪২ টাকার অর্জনের উৎস পাওয়া গেলেও ২১ কোটি ৮২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৫৯ টাকার সম্পদ অর্জনের উৎস পাওয়া যায়নি। এসব অর্থ তিনি অবৈধভাবে অর্জন করেছেন বলে দুদকের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে। মামলায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪ এর ২৭ (১) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে একইসঙ্গে গোল্ডেন মনিরের স্ত্রী রওশন আক্তারের সম্পদ অনুসন্ধানের সুপারিশ করেছেন দুদক কর্মকর্তা। এছাড়া বিভিন্ন নথিপত্র যাচাই-বাছাই করে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক)  বিভিন্ন স্মারকমূলে আসামি মো. মনির হোসেনের নামে বিভিন্ন প্রকল্পের মোট ২৩টি প্লটের সন্ধান পাওয়া গেছে, যা তিনি দুদকে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে উল্লেখ করেননি। তদন্তকালে এসব খতিয়ে দেখা হবে।

গত ৪ জানুয়ারি বাড্ডার ডিআইটি প্রকল্পের প্লটসহ বিভিন্ন জমি আত্মসাতের চেষ্টা ও নথি গায়েবের অভিযোগে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ও গোল্ডেন মনিরসহ নয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। ওই মামলার বাকি আসামিরা হলেন, রাজউকের উপ-পরিচালক মো. দিদারুল আলম, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন শরীফ, অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. আনোয়ার হোসেন, ঊর্ধ্বতন হিসাব সহকারী এস এম তৌহিদুল ইসলাম, কার্য তদারককারী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন সরকার ও রাজউক অফিস সহায়ক মো. পারভেজ চৌধুরী, জমির দালাল সিরাজগঞ্জের মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও নারায়ণগঞ্জের মো. নাসির উদ্দিন খান।

আরএম/আরএইচ