টাঙ্গাইল, নারায়ণগঞ্জ ও পাঁচ পৌরসভা ভোটে ইভিএমের পরিপত্র জারি
টাঙ্গাইল-৭ আসন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও পাঁচটি পৌরসভায় ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোটগ্রহণের লক্ষ্যে বিশেষ পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আগামী ১৬ জানুয়ারি টাঙ্গাইল-৭ আসনের উপনির্বাচন, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ও পাঁচটি পৌরসভার ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএমে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে। ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত বিশেষ পরিপত্রটি জারি করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
বিজ্ঞাপন
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ইউপি নির্বাচনে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের (এনআইডি) কর্মকর্তারা সরেজমিন উপস্থিত থেকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের সকল প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা দেবে। এছাড়া ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ইভিএম কাস্টমাইজেশনসহ নির্বাচন উপযোগী করে যথাসময়ে রিটার্নিং অফিসারের কাছে হস্তান্তর করতে হবে।
পরিপত্রের বিষয়গুলো হচ্ছে
ইভিএম ব্যবহার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক প্রচার: ইভিএম ব্যবহার যেহেতু একটি কারিগরি বিষয় এবং নতুন ধরনের ব্যবহার কার্যকারিতা রয়েছে। এজন্য সকল প্রার্থী, তাদের পোলিং এজেন্ট এবং ভোটারদের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে।
ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ: নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট থেকে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা অর্থাৎ প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারদের জন্য দুই দিনব্যাপী এবং পোলিং অফিসারদের জন্য ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে এক দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মক ভোটিং: নির্বাচনের আগের দিন প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত মক ভোট অনুষ্ঠিত হবে। এই সময়ে সকল সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসার উপস্থিত থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করবেন। মক ভোটিং শেষে সংশ্লিষ্ট প্রিজাইডিং অফিসার ইভিএমগুলো সহকারি রিটার্নিং অফিসারকে বুঝিয়ে দেবেন।
নিরাপত্তা সহকারে ইভিএমের পরিবহন, সংরক্ষণ ও কার্যকারিতা যাচাই করা: ইভিএমগুলো ইলেকট্রনিক ডিভাইস বিধায় মেশিনগুলো সারিবদ্ধভাবে রেখে যথাযথ নিরাপত্তার সাথে পরিবহন করতে হবে। ভোট গ্রহণের আগের দিন অন্যান্য নির্বাচনী মালামালসহ বিভিন্ন প্রিজাইডিং অফিসারকে বুঝিয়ে দিতে হবে। প্রিজাইডিং অফিসাররা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারসহ অবশ্যই যন্ত্রগুলো যাচাই করবেন। কোনোরকম ত্রুটি-বিচ্যুতি পাওয়া গেলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রিজাইডিং অফিসার রিটার্নিং কর্মকর্তাকে অবহিত করবেন। রিটার্নিং অফিসার কন্ট্রোলরুমকে অভিহিত করে ত্রুটি-বিচ্যুতি সংশোধন অথবা প্রতিস্থাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
কারিগরি দলের গঠন: প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের একজন করে কারিগরি সদস্য সহযোগিতা করবেন। এর জন্য রিটার্নিং অফিসার তাদের প্রয়োজনে লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদান করবেন। প্রিজাইডিং অফিসার ভোটগ্রহণের জন্য ভোটকেন্দ্র, ভোটকক্ষ প্রস্তুত করবেন।
মোবাইল কারিগরি টিম: নির্বাচন কমিশন থেকে প্রেরিত সদস্যদের সমন্বয়ে গঠিত মোবাইল কারিগরি টিম সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে অবস্থান করবেন। ভোটগ্রহণের দিন বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের কারিগরী সমস্যা আনুষঙ্গিক লজিস্টিক সহায়তা প্রদান নিশ্চিত করবে এই টিম।
ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ডের এবং প্রদত্ত পিন পাসওয়ার্ডের গোপনীয়তা রক্ষা: ইভিএমের জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের কার্ড এবং মেশিন চালু করার পিন ও পাসওয়ার্ড প্রিজাইডিং অফিসারকে সরবরাহ করা হবে। এগুলো বিষয়ে যথাযথ গোপনীয়তা রক্ষা করতে হবে।
অতিরিক্ত অডিট ও পোলিং কার্ডের ব্যবহার: সুষ্ঠুভাবে সিটি নির্বাচন সম্পন্ন করার উদ্দেশ্যে কেন্দ্রে ব্যবহৃত অডিট কার্ড ও পোলিং কার্ডের একটি সামগ্রিক বেকাপ রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে সংরক্ষিত রাখবেন।
ইভিএম যাচাই করা: ভোটগ্রহণের আগের দিন অর্থাৎ ১৫ জানুয়ারি প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নামের বিপরীতে ব্যালট ইউনিটে সঠিকভাবে প্রতীক সন্নিবেশিত আছে কি না তা ভোটকেন্দ্রে পৌঁছে প্রিজাইডিং অফিসার যাচাই করবেন।
ডেমো ভোটগ্রহণ: ভোটকেন্দ্রে ব্যবহারের জন্য সর্বদা গৃহীত ইভিএমগুলো ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার আগে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নির্বাচনী এজেন্ট ও পোলিং এজেন্টকে ভোটগ্রহণ প্রদর্শন করতে হবে। ডেমো ভোটগ্রহণের প্রাক্কালে ইভিএমগুলো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের নাম ও প্রতীক সঠিক আছে কিনা তা যাচাই-বাছাই করতে হবে।
এসআর/এনএফ