সশরীরে ছিলেন না, তবে বাঙালির হৃদয়ে ছিলেন বঙ্গবন্ধু
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একাত্তরে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি থাকার কারণে সশরীরে আমাদের মধ্যে ছিলেন না, তবে তিনি বাঙালির হৃদয়ে ছিলেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১০ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর রামপুরায় বিটিভির শহীদ মনিরুল আলম মিলনায়তনে যুক্ত হন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানি সেনারা তাকে সে দেশে নিয়ে বন্দি করে রাখে। কিন্তু তিনি সবসময় মুক্তিকামী মানুষের পাশে ছিলেন। তিনি সশরীরে আমাদের মধ্যে ছিলেন না, কিন্তু তিনি বাঙালির হৃদয়ে ছিলেন। তার ৭ মার্চের ভাষণ বুকে ধারণ করে বাঙালি জাতি যুদ্ধ করেছে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে তিনি তার লক্ষ্য অর্জন করেছিলেন। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৬ দফা, ৭০-এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ভাষণ, সর্বশেষ আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের সর্বাগ্রে ছিলেন তিনি। তার ভাষণ মুক্তিকামী মানুষকে প্রেরণা জুগিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার পর যেদিন তিনি দেশে এলেন, দিনটি আমাদের জন্য কেমন ছিল তা ভাষায় বোঝাতে পারব না। ১০ জানুয়ারি তিনি ফিরে আমাদের (পরিবার) কাছে আসেননি; তিনি সোজা চলে গেছেন তার প্রিয় জনতার কাছে।
তিনি বলেন, ১০ জানুয়ারির যে ভাষণ, তার মধ্যে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র কীভাবে চলবে তার দিকনির্দেশনা তিনি দিয়েছিলেন। তার এই ভাষণে বাংলাদেশ কেমন হবে তা উঠে এসেছিল। বঙ্গবন্ধুকে যখন পাকিস্তানিরা মেরে ফেলতে চেয়েছে, তখন তিনি বলেছেন ‘আমাকে তোমরা মেরে ফেলতে পার, কিন্তু আমার লাশটা বাংলার মাটিতে পৌঁছে দিও।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, হয়তো পাকিস্তানি কারাগারে তিনি অনেক অত্যাচারিত হয়েছেন, কিন্তু আমাদের কাছে কোনো কষ্টের কথা কখনো বলেননি। শুধু রেহানাকে একবার বলেছিলেন, তোদের শোনার দরকার নেই, তোরা সহ্য করতে পারবি না। এ থেকেই আমরা তাঁর ওপর অত্যাচারের বিষয়টি বুঝতে পারি। তিনি ফিরে এসে এ দেশের মানুষের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে কাজ করতে শুরু করেন। কিন্তু তিনি তা শেষ করতে পারলেন না। আঘাত এলো; ১৫ আগস্ট তাকে হত্যা করা হলো। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা ছিল না; এটা ছিল একটি স্বাধীন দেশের চেতনাকে হত্যা।
তিনি বলেন, যে মানুষদের জন্য বঙ্গবন্ধু এতকিছু করেছেন, তাদের ভাগ্যোন্নয়নই আমাদের লক্ষ্য। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গঠনই আমাদের লক্ষ্য। আমরা যেন সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি।
এইউএ/জেডএস/জেএস