টিকার অপেক্ষায় লোকজন ‘মজেছেন’ ঝাল চানাচুরে
দেশে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আবারও বিধিনিষেধের কথা ভাবছে সরকার। সেই সঙ্গে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করায় টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ বেড়েছে। যে কারণে কেন্দ্রগুলোতে টিকাপ্রত্যাশীদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
দেশে করোনার টিকা প্রয়োগের শুরু থেকেই রাজধানীর মিরপুরের পল্লবীর নগর মাতৃসদন ও নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র-২ কেন্দ্রে টিকা দেওয়া হচ্ছে। গত বছর এ কেন্দ্রে টিকাগ্রহীতাদের ভিড় স্বাভাবিক মাত্রায় থাকলেও নতুন বছরের শুরু থেকে তা যেন কয়েকগুণ বেড়েছে। সোমবার (১০ জানুয়ারি) সকালে সে চিত্রই দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
সকাল ১০টায় সরেজমিনে দেখা যায়, টিকা নিতে আসা লোকজনের সারি রাস্তার সঙ্গে মোড় নিয়ে ভেতরের দুটি গলিতে ঢুকে গেছে। দাঁড়িয়ে অপেক্ষায় থাকা সবার হাতেই টিকা নেওয়ার রেজিস্ট্রেশন কার্ড। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে অপেক্ষার পর কেউ কেউ বসে জিরিয়ে নিচ্ছেন।
টিকা নেওয়ার সারিতে যখন এ অবস্থা, তখন সেখানে দেখা গেল কয়েকজনের একটি জটলা। কাছে গিয়ে দেখা যায়, এ জটলা চানাচুর বিক্রেতা শাহরাজকে ঘিরে। টিকার অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থেকে অনেকে তার চানাচুরের স্বাদ পরখ করে নিচ্ছেন।
কিশোরগঞ্জের মৌসুমি বিক্রেতা শাহরাজ ৭-৮ বছর ধরেই হকারি করেন। তার ভাষ্য, চাকরি করে ১৫ হাজার টাকা বেতন পেতাম। এখন সব বাদ দিয়ে দৈনিক ৭০০-৮০০ টাকা আয় হয়। সে হিসেবে মাসিক আয় ২০ হাজারের বেশি। জামের মৌসুমে বেশি মুনাফা হয় বলে জানান তিনি। লিচু, লেবু, শসা বিক্রির ব্যবসাও তার জানা। ঢাকায় একা থাকলেও বাড়িতে রয়েছে তার বাবা-মা।
কিছু সময় দাঁড়িয়ে দেখা যায়, ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী চানাচুর বানিয়ে দিচ্ছেন শাহরাজ। ছোলা, টমেটো, কাঁচামরিচ, লেবু, সালাদের সংমিশ্রণে সে চানাচুরের স্বাদ বাড়িয়ে দিচ্ছে সরিষার তেল। বাচ্চাদের চাহিদা মেটাতে অভিভাবকদেরও চানাচুর কিনে দিতে দেখা গেল।
এদিকে তার চানাচুরের বিক্রি দেখে টিকা নিতে আসা আরেকজন বললেন, চা-সিগারেট বিক্রি শুরু করব নাকি। ওষুধ কোম্পানিতে চাকরি করা রুবেল নামের এ ব্যক্তি অবশ্য আগে নিজের টিকা নেওয়া নিশ্চিত করতে চান।
অন্যদিকে টিকা কেন্দ্রটি আবাসিক এলাকায় হওয়ায় নিরাপত্তারক্ষীর কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে শাহরাজকে। তবে কাল থেকে তা মোকাবিলায় কৌশল অবলম্বন করবেন বলে জানান তিনি।
জেডএস/এসএসএইচ