সংবিধান নিয়ে বেশির ভাগ মানুষের মাথাব্যথা নেই
অডিটর জেনারেল মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বলেছেন, সংবিধান এমন একটা জিনিস যার মাধ্যমে সব আইন-কানুন হয়। কিন্তু এটি নিয়ে দেশের বেশির ভাগ মানুষের মাথাব্যথা নেই। সংবিধান নিয়ে সবাইকে নাড়াচাড়া করা দরকার।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিআইডিএস ‘সিস্টেমেটিক ভিউ অব দ্য বাংলাদেশ কনস্টিটিউশন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এ কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেনের সভাপতিত্বে সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে এ লেকচার অনুষ্ঠিত হয়।
বিজ্ঞাপন
মুসলিম চৌধুরী বলেন, সংবিধানের নির্দিষ্ট অনুচ্ছেদগুলো পড়লে হবে না। এতে অন্ধের হাতি দেখার মতো অবস্থা হবে। সংবিধানের পুরোটাই জানতে হবে। সংবিধান অনুযায়ী তৈরি সবগুলো সংস্থা (অর্গান) যদি ঠিকমতো কাজ করে তাহলে জনগণই সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে। কেননা একটি রাষ্ট্রে জনগণই হচ্ছে সার্বভৌম। বাকি সবই হচ্ছে জনগণের জন্য এবং জনগণকে সেবা নিশ্চিত করার জন্য। সংবিধানে দেওয়া অধিকারগুলো রক্ষার জন্য।
তিনি বলেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অধিদফতরের মতো দেখলে রাষ্ট্রীয় পলিসি ও সৃজনশীলতা নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা নির্বাচন কমিশন ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো তৈরি হয়েছে সংবিধান অনুযায়ী। আর অধিদফতরগুলো প্রতিষ্ঠা করা হয় আইনের মাধ্যমে। এসব প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আলাদা। পরিচালনা পদ্ধতিও আলাদা। কাজেই এগুলোকে এক করে ফেললে চলবে না।
বিআইডিএস মহাপরিচালক ড. বিনায়েক সেন বলেন, অনেক বিষয় নিয়েই গবেষণা হয়। কিন্তু রাষ্ট্র কীভাবে চলে সে বিষয় নিয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, জনগণের অধিকার নিশ্চিত করতে হলে বর্তমানে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। এছাড়া ন্যায়পাল ব্যবস্থা প্রবর্তন করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) মতো জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনকে (জেএসসি) সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা দরকার। রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক সময় সংবিধানকে পাশ কাটিয়ে অনেক কথা বলা হয়। এক্ষেত্রে সংবিধানের অনুচ্ছেদকে যে যার মতো করে ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা দরকার।
বক্তারা আরও বলেন, জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করে সংসদে পাঠান। তাদের প্রতিনিধিরা যাতে এমন কিছু করেন যা জনগণের কল্যাণে এবং মঙ্গলের জন্য হয়। এক্ষেত্রে জনগণই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। কিন্তু প্রতিনিধিরা অনেক সময় তাদের দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করেন না। এক্ষেত্রে মুনিবের ভূমিকা পালন করেন। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। নির্বাচন কমিশনের মতো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করা প্রয়োজন।
এসআর/এসকেডি