প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ৭ নম্বর মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন আগামী ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে। এ ইউপিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কেন্দ্র দখলসহ নানাভাবে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাধারণ ভোটারদের হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ইতোমধ্যে একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। 

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে মশাখালী ইউপির সাধারণ ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ পরিস্থিতিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট চেয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদা বরাবর চিঠি দিয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম ফেরদৌস আলম। সিইসিকে দেওয়া চিঠি ও ভিডিও ঢাকা পোস্টের কাছে সংরক্ষিত আছে।
  
চিঠিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে এম ফেরদৌস আলম বলেন, ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার ৭ নম্বর মশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু, ভয়ভীতিহীন করতে এবং সব ভোটারের ভোটাধিকার প্রদানের লক্ষ্যে নয়টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট, বিজিবি ও র‌্যাবকে অন্তর্ভুক্ত করার জোড় দাবি জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, আমি ২০০৪ সালে অত্র ইউনিয়নের সর্বস্তরের ভোটারদের সমর্থন নিয়ে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ওই নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান ও নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আলবদরপুত্র মোস্তফা কামাল মনিকে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা করে বিএনপি-জামাত জোট সরকার। নির্বাচনের দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে আমাকে আটক করে প্রহসনমূলক ফল ঘোষণা করে ১০৩ ভোটের ব্যবধান দেখিয়ে পরাজিত দেখায়। 

যুবলীগ নেতা সালাহউদ্দিন পলাশ (বাঁয়ে) , ডানে চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা কামাল খান

তিনি বলেন, আলবদরপুত্র মোস্তফা কামাল খান মনির পিতা-মমতাজ উদ্দিন খান। গফরগাঁও উপজেলা রাজাকার ও আলবদর তালিকায় যার যার নামের তালিকা নম্বর ৫৭। আলবদরপুত্র মোস্তফা কামাল খান মনি নৌকা প্রতীককে কলুষিত করেছেন। আমি মুক্তিযোদ্ধাপুত্র, জনগণের ব্যাপক সমর্থন ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সমর্থন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি। 

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে স্থানীয় এমপির মদদধারী যুবলীগ নেতা সালাহউদ্দিন পলাশ, আলবদরপুত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মোস্তফা কামাল খান (মনি), নূরে আলম সিদ্দিকী মিল্টন, রুকুনুজ্জামান রোকন, করিম ওরফে করিম মাস্টার, শহীদ ওরফে কাইল্ল্যা শহীদ ডাকাত, জসিম, মিরাজ, হাকিম, জামাল গংরা প্রকাশ্যে মুখী স্কুলের বাজার ও শিলার বাজারে জনসভায় ঘোষণা করেন যে, ‘যদি কেউ ভোটকেন্দ্রে যান, তাহলে নৌকার এজেন্টের নিকট ব্যালট দিতে হবে। যদি এর অন্যথা হয় তাহলে কোনো ভোটার জীবন নিয়ে ভোটকেন্দ্র থেকে বাড়ি ফিরতে পারবেন না।’

সিইসিকে দেওয়া চিঠিতে আরও বলা হয়, আমার নির্বাচনী প্রতীক আনারস। উল্লেখিত ব্যক্তিরা ঘোষণা করেছেন যে, ‘যদি কেউ আনারস প্রতীকে ভোট দেন, তাহলে ওই ভোটারের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেব। প্রয়োজনে আনারস প্রতীকধারী প্রার্থী ফেরদৌসকে হাড়গোড় ভেঙে ছন্নছাড়া করব।’ আমিসহ ইউনিয়নের সব সম্মানিত ভোটার নিরাপত্তাহীনতায় এবং আতঙ্কে দিনাতিপাত করছি।
 
স্বতন্ত্র প্রার্থী বলেন, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং অনুষ্ঠিতব্য ৫ জানুয়ারির তিন দিন আগে থেকে আমার নির্বাচনী এলাকায় র‌্যাব ও বিজিবি টহল জোরদার করার জোর অনুরোধ করছি। পাশাপাশি নয়টি ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের জোর দাবি করছি।

এসআর