স্বামী বাবুল আক্তারের সঙ্গে মাহমুদা খানম মিতু। কে জানত স্বামীর পরিকল্পনায় খুন হবেন তিনি

মাহমুদা খানম মিতু হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছিলেন তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। ওই মামলায় তাকেই গ্রেফতার দেখানোর জন্য আদালতে আবেদন করেছেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যদিও মিতুর বাবার দায়ের করা মামলায় এখন কারাগারে আছেন বাবুল আক্তার। 

রোববার (২ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আবু জাফর মোহাম্মদ ওমর ফারুক। 

তিনি বলেন, এই মামলার তদন্তে স্ত্রী মিতুর খুনের সঙ্গে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পেয়েছি। এজন্য নিয়ম অনুযায়ী তাকে তার করা মামলাতেই গ্রেফতার দেখানোর জন্য এক সপ্তাহ আগে চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে আবেদন করেছি। আদালত আগামী ৯ জানুয়ারি বাবুল আক্তারের উপস্থিতিতে মামলার শুনানির সময় নির্ধারণ করেছেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, মিতু হত্যার ঘটনায় বাবুল আক্তার যে মামলাটি দায়ের করেছিলেন, সেটির তদন্ত শেষ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল পিবিআই। কিন্তু আদালত চূড়ান্ত প্রতিবেদন না নিয়ে মামলাটি অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। মিতুর বাবার করা মামলাটিও তদন্ত করছে পিবিআই। মিতু হত্যার ঘটনায় দুটি মামলাই তদন্ত করছে পিবিআই। 

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। এই মামলাতেই এখন তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেছে পিবিআই। 

জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রীকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে বলে মামলায় অভিযোগ করেন বাবুল আক্তার। তবে দিন যত গড়িয়েছে মামলার গতিপথও পাল্টেছে। একপর্যায়ে সন্দেহের কেন্দ্রবিন্দুতে আসে স্বামী বাবুল আক্তারেরই নাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বছরের ১১ মে তাকে হেফাজতে নেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পরদিন ১২ মে দুপুরে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন তার শ্বশুর অর্থাৎ মিতুর বাবা। মামলায় আসামি করা হয় আরও সাতজনকে। তারা হলেন- কামরুল ইসলাম মুছা, কালু, ওয়াসিম, শাহজাহান, আনোয়ার, এহতেসামুল হক ভোলা ও সাকি। বাবুল আক্তার এখন চট্টগ্রাম কারাগারে আছেন। 

কেএম/এইচকে/জেএস