আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ছে ৬৩১৬ কোটি টাকা
তিন কারণে ‘আশ্রয়ণ-২’ প্রকল্পটি চতুর্থবারের মতো সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ লক্ষ্যে আগামী মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির চতুর্থ সংশোধনীর জন্য তোলা হবে। চতুর্থ সংশোধনীতে ৬ হাজার ৩১৬ কোটি ৭১ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হচ্ছে।
বর্তমানে প্রকল্পের মোট ব্যয় ৪ হাজার ৮৪০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। চতুর্থ সংশোধনীে একনেকে অনুমোদন পেলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়াবে ১১ হাজার ১৪২ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। একই সাথে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বেড়ে দাঁড়াচ্ছে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত। একনেক কার্যপত্র থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তিনটি কারণে প্রকল্পটি চতুর্থবার সংশোধনের প্রস্তাব করেছে-
(ক) মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে দেশের ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গৃহ প্রদান নীতিমালা-২০২০ বাস্তবায়ন
(খ) প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের মধ্যে সম্পন্ন করার সানুগ্রহ নির্দেশনা এবং
(গ) আংশিক সংশোধিত ডিজাইন মোতাবেক একক গৃহের নির্মাণমূল্য ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা নির্ধারণ।
পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় সংশোধনী অনুযায়ী জুলাই ২০১০ থেকে জুন ২০২২ সালে প্রকল্পটির কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। তবে চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে প্রকল্পের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে জুন ২০২৩ সাল পর্যন্ত করার প্রস্তাব একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। মঙ্গলবারের একনেক সভায় চতুর্থ সংশোধনী অনুমোদন পেলে জুন ২০২৩ সালে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন মেয়াদ শেষ হবে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন করা, আয়বর্ধক কার্যক্রম সৃষ্টির মাধ্যমে উপকারভোগীদের দারিদ্র্য বিমোচন এবং ঋণ প্রদান ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহে সক্ষম করে তোলা হবে। চলতি অর্থবছরের (২০২১-২২) এডিপিতে এ প্রকল্পটির জন্য ৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে।
প্রকল্পের প্রধান কার্যক্রম হচ্ছে- ৪ লাখ ৮৫ হাজার ৯২টি ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও অসহায় পরিবার পুনর্বাসন করা, ৫ হাজার ১৪৯টি পাকা ব্যারাক, চরাঞ্চলে ৫ হাজার ৭৮টি সিআইসিট ব্যারাক, ৪ হাজার ৩৯৩টি সেমিপাকা ব্যারাক নির্মাণ, ৬০টি বহুতল ভবন নির্মাণ, ১ হাজার ১২০টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ, ৫৮০টি বিশেষ ডিজাইনের ঘর নির্মাণ, ৫৬৫টি পুকুরঘাট, অভ্যন্তরীণ রাস্তা, বক্স কালভার্ট, পাকা ড্রেন ও স্লোপ প্রোটেকশন নির্মাণ, সকল প্রকল্প গ্রামে অগভীর/গভীর নলকূপ স্থাপন ও অভ্যন্তরীণ রাস্তা নির্মাণ করা।
পরিকল্পনা কমিশন সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটির মাধ্যমে ভূমিহীন, গৃহহীন, ছিন্নমূল ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখবে প্রকল্পটি। এসব দিক বিবেচনায় প্রকল্পটি অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যের সাথে সংগতিপূর্ণ।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) রমেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক একক গৃহের আংশিক ডিজাইন অনুমোদন পেয়েছে এবং নির্মাণ ব্যয় ২ লাখ থেকে বাড়িয়ে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্নের নির্দেশনা প্রকল্প দলিলে যথাযথভাবে প্রতিফলন করে আরডিপিপি পুনর্গঠন করা হয়েছে। এসব বিবেচনায় প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য একনেক সভায় তোলা হবে।
এসআর/এইচকে/জেএস