গাজীপুর মহানগরীর সদর থানাধীন তরৎপাড়ার দোকান থেকে গত ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় কয়েল কিনেছিলেন হৃদয় হোসেন। পরদিন তিনি এসে দোকানিকে বলেন, কয়েলের মান খুব খারাপ। এতে ক্ষিপ্ত হন দোকানি রিয়াজুল ইসলাম। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি আর ছুরিকাঘাতে আহত হন ক্রেতা হৃদয়। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হৃদয়।

ওই ঘটনায় সিআইডির এলআইসি শাখার একটি দল মূল অভিযুক্ত রিয়াজুল ইসলামকে (২৫) ঢাকার ডেমরা থেকে গ্রেফতার করে।

মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগ সিআইডি কার্যালয়ের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির এলআইসি শাখার বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর।

তিনি বলেন, গাজীপুর সদর থানাধীন তরৎপাড়ায় গত ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় বাড়ির পাশের রিয়াজুল ইসলামের মুদি দোকান থেকে মশার কয়েল কেনেন হৃদয়। বাসায় আসার পর হৃদয় দেখেন কয়েলটি নিম্নমানের।

পরদিন ১১ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে কয়েলটি নিয়ে রিয়াজুলের দোকানে গিয়ে অভিযোগ করলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে হৃদয়কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে রিয়াজুলের ভাগিনা রাকিব, উজ্জল, আলমগীর ও তুহীন হৃদয়কে এলোপাতাড়ি মারতে থাকে।

পরে রিয়াজুল তার হাতে থাকা সুইস গিয়ার ছুরি দিয়ে হৃদয়ের পিঠে আঘাত করে। হৃদয়ের চিৎকারে তার বাবা আনোয়ার হোসেন এগিয়ে আসেন। তখন রিয়াজুল ছুরি দিয়ে আনোয়ার হোসেনের হাতেও আঘাত করে। বাবা-ছেলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে আসামিরা দৌড়ে পালিয়ে যায়।

পরে স্থানীয়রা আহত বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওই দিন সন্ধ্যায় ভিকটিম হৃদয়কে মৃত ঘোষণা করে।

ওই হত্যার ঘটনায় নিহতের বাবা আনোয়ার হোসের (৫২) পাঁচ জনকে আসামি করে গাজীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনায় সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। গাজীপুরের সম্ভাব্য সব স্থানে রিয়াজুলকে গ্রেফতারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অবশেষে এলআইসির এর একটি দল ঢাকার ডেমরায় অভিযান চালিয়ে রিয়াজুলকে গ্রেফতার করে।

সিআইডির প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার রিয়াজুল হৃদয় হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।

জেইউ/এসএসএইচ